ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ভরা মৌসুমেও সামুদ্রিক মাছের আকাল কক্সবাজারে

zellyকক্সবাজার জেলাব্যাপী সামুদ্রিক মাছের এখন তীব্র সংকট। মাছের এই আকালে জেলার মৎস্য ব্যবসায়ীদের ভরসা এখন চট্টগ্রাম। পার্শ্ববর্তী এই জেলা থেকে মাছ এনে জেলার মানুষের সামুদ্রিক মাছের চাহিদা পূরণ করছেন তাঁরা।
বিশাল বঙ্গোপসাগরে মাছ না পাওয়া সংকটের অন্যতম কারণ বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে প্রতিদিন চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কক্সবাজারে ১০ থেকে ১২ ট্রাক প্রায় ৫৫/৬০ টন মাছ আনা হচ্ছে। পরে সেগুলো জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। মাছের এই সংকট প্রভাব ফেলেছে জেলার রাজস্ব খাতেও।
২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ফিশারিঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ৪২ লাখ টাকা হাসিল আদায় করা হয়েছিল। চলতি বছর যা প্রায় নয় লাখ টাকা কমে গেছে।
১৫ জুন পর্যন্ত সরকারি এই কার্যালয়টি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা হাসিল আদায় করতে সক্ষম হয়েছে।  এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফিশারিঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম বলেন,দুই বছর হলো কক্সবাজারে এসেছি। দিন দিন হাসিল আদায়ের হার কমে যাচ্ছে। ঘাটে ট্রলার না ভেড়া এবং সাগরে মাছ না পাওয়া এর কারণ।
দীর্ঘদিন ধরে মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত এক ব্যবসায়ী জানান, এই অবস্থা একদিনে সৃষ্টি হয়নি। গত ১৫ বছর ধরে সাগরে মাছ কমতে শুরু করেছে। আর ওই সময় থেকেই কক্সবাজারের বাজারগুলোতে সামুদ্রিক মাছের সংকট। বর্তমানে যা চরম আকার ধারণ করেছে। অফসিজন তো বটেই; ভরা মৌসুমেও সামুদ্রিক মাছের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার মানুষ।
এই অবস্থার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করে ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করা হয়। আটক করা হয় বিহিন্দি জাল। এরপর আর কোন খোঁজ খবর নেয়া হয় না। অথচ দিনের পর দিন বঙ্গোপসাগরে নিধন করা হচ্ছে বিপুল সংখ্যক জাটকা মাছ।
যা পরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। শুধু জাটকা নিধন বন্ধ করা গেলেই মাছের সুদিন আবার ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এক সময় জেলার অধিকাংশ মাছ ধরার নৌকা ভীড় জমাতো শহরের ফিশারিঘাট এলাকায়। পরে সেখান থেকে বিক্রির জন্য মাছ নিয়ে যাওয়া হতো স্থানীয় বাজার সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
দেশের চাহিদা মিটিয়ে কক্সবাজারের মাছ রপ্তানি করা হতো ভারত, চীন জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। সেইদিন আর নেই। মাছ দূরে থাক; ফিশারিঘাটে মাছ ধরার নৌকাই নোঙর করে না এখন।

কেন এই অবস্থার সৃষ্টি? দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা জানান, দিন দিন জেলার প্রধান নদী বাঁকখালীর নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে।

ট্রলার চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। জোয়ারের সময় মাছ ধরার ট্রলার ভিড়তে পারলেও; ভাটার সময় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ট্রলার ভেড়ার হার দিন দিন কমে যাচ্ছে।

 

পাঠকের মতামত: