ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

২০হাজার মানুষ পানি বন্দি পেকুয়ার মগনামায়

pic 3পেকুয়া প্রতিনিধি :::

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সর্বনাশ হয়েছে উপজেলার উপকুলবর্তী মগনামা ইউনিয়ন। অমাবস্যার জুঁর সাগরের জোয়ারের পানিতে এ ইউনিয়নের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এ ইউনিয়নে প্রায় ২০হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়েছে। এ ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ড়ে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

 পানি উন্নয়ন বোর্ড এর পক্ষ থেকে গত ৬মে দুপুরে মগনামা ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছে। পাউবোর উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা থেকে মগনামা পরিদর্শনে এসেছেন। পাউবোর আঞ্চলিক প্রধান (দক্ষিন) আনোয়ার সাদাতের নেতৃত্বে প্রতিনিধি টিম মগনামা ইউনিয়নের কুতুবদিয়া চ্যানেল সংশ্লিষ্ট পশ্চিমের বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছেন।

 পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিবুর রহমান জানায় বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কারের জন্য সার্ভে করা হয়েছে। প্রায় ১শ কোটি টাকা বাধ সংস্কারের জন্য সরকার বরাদ্ধ দিয়েছেন। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে মগনামা ইউনিয়নের বিশটিরও অধিক গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। গেল ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর আঘাতে মগনামা ইউনিয়নে পাউবো নিয়ন্ত্রিত ছয় কি. বেড়িবাঁধ বিলিন হয়।

 ওই অংশ দিয়ে সাগরের জোয়ারের পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে করে ওই ইউনিয়নের বিপুল এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়েছে। অধিকাংশ বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে থাকায় এসব এলাকার যাতায়ত বন্ধ রয়েছে। পানি বন্দি মানুষ নৌকা নিয়ে চলাচল করছে।

 মগনামা ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ড়ে গত এক সপ্তাহ ধরে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বাড়িঘর লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঘরে চুলা আগুন জ্বলছেনা। নলকুপ পানির নিচে ডুবে রয়েছে। ক্ষুর্ধাত মানুষ ও পরিবারের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রচন্ড লবনাক্ততার কারনে এ ইউনিয়নের বিপুল অংশে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এমন কোন পুকুর নেই যেগুলোতে লবনাক্ত পানি ঢুকে পড়েনি। পয়নিস্কাশন ও দৈনন্দিন কার্যক্রমে গৃহস্থলি কাজে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে।

 ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর আঘাতে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কুতুবদিয়া চ্যানেল সংশ্লিষ্ট পাউবোর বেড়িবাঁধ বিলিন হয়। শরতঘোনা জাবের আহমদের বাড়ি থেকে হুমায়ন কবিরের প্রজেক্ট পর্যন্ত প্রায় দেড় কি.বেড়িবাঁধ জোয়ারের পানির তোড়ে বিধ্বস্থ হয়। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। কাকপাড়া অংশের একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ বিলিন হয়েছে। বর্তমানে মগনামার অন্তত ২০টির অধিক গ্রামে নিয়মিত জোয়ার-ভাটা চলছে।

বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ৫টি ওয়ার্ড় পুরো পানিতে ডুবে আছে। বাজারপাড়া, শরতঘোনা, পশ্চিম বাজারপাড়া, হারঘরপাড়া, হারুন মাতবরপাড়া, লালমিয়া পাড়া, দরদরিঘোনা, মটকাভাঙ্গা, চেরাংঘোনা, কালারপাড়া, শুদ্ধখালী পাড়া, ডলিন্যাপাড়া ও কাকপাড়ায় সড়কের উপরে প্রায় ২-৩ফুট পানি হয়েছে। দুপুরের জোয়ারের পানিতে এসব এলাকা সয়লাব হয়েছে।

 পেকুয়ার ইউএনও মো.মারুফুর রশিদ খান জানায় মগনামার সমসাময়িক অবস্থা অত্যন্ত করুন হয়েছে। বেড়িবাঁেধর কারনে হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। পাউবোর সাথে কথা হয়েছে তারা দ্রুত সময়ে পানি আটকানোর কাজ করবেন প্রাথমিক ভাবে।

 উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু জানায় মগনামার অবস্থা খুবই বিপর্যস্থ। মানুষ বাচাতে হলে বেড়িবাঁধ অতিদ্রুত সংস্কার করতে হবে। জোয়ার ভাটা চলছে মগনামায়। মনে হয় এটি মগনামাবাসির জন্য বড় ধরনের অভিশাপ।

পাঠকের মতামত: