ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রামে ধরা পড়া টেকনাফের সেলিনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড শাহ আজমের স্ত্রী

আহমদ গিয়াস, কক্সবাজার :
চট্টগ্রাম শহরের বায়েজিদ থানায় ৩৬ হাজার ইয়াবা পিস ইয়াবাসহ নম্বরবিহীন একটি প্রাইভেট কারে আটক দুই নারীসহ তিন যাত্রীর মধ্যে সেলিনা আকতার টেকনাফ হ্নীলার ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার জালাল আহমদ এর ছেলে শাহ আজমের স্ত্রী এবং কয়েক বছর আগে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ইয়াবা ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদের মেয়ে। নুর মোহাম্মদের ছোটভাই বর্তমানে একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল হুদা। আটক সেলিনা আকতারের আপন ভাই হ্নীলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আমিন ফাহিম। দুটি পরিবারের নারীসহ প্রায় সকলেই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত বলে গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য রয়েছে। এরই ভিত্তিতে গোয়েন্দারা নজরদারি চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম শহরের বায়েজীদ এলাকা থেকে তাদের আটক করে।
সূত্রে বলা হয়েছে, সেলিনা আকতারের স্বামী শাহ আজম সাগরপথে ইয়াবা পাচারে জড়িত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত ওয়ান্টেড আসামী। তারা টেকনাফ থেকে সমুদ্র পথে ইয়াবার বড় বড় চালানগুলো চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যায়। এরপর খুচরা চালান বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করে। বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে থাকে। চট্টগ্রাম শহরে চারটি জমি আছে। এরমধ্যে ২টি ইমারতও গড়া হয়েছে। হ্নীলা এলাকায় প্রায় ৭৫ কানি জমি আছে। তাদের বিরুদ্ধে অন্তত ডজন খানেক করে মামলা রয়েছে। সেলিনা আকতারের পিতা নুর মোহাম্মদ প্রায় ২ বছর আগে র‌্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। এসময় তার কবল থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার হয়। এরআগে তার ঘর থেকে র‌্যাব বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করলে র‌্যাবের সোর্স সন্দেহে এক স্কুল ছাত্রকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও গুলী করে হত্যা করে ওই নুর মোহাম্মদ। একই ইউনিয়নের আরেক বড় ইয়াবা ব্যবসায়ী জালাল আহমদের সাথে তার ছিল গভীর সখ্যতা। জালাল ও তার ছেলে আজম সাগরপথে ইয়াবা পাচারের চতুর কারিগর। এই শাহ আজমের সাথে বিয়ে হয় নুর মোহাম্মদের মেয়ে সেলিনা আকতারের। এরপর দুটি পরিবারের প্রায় সকল সদস্য এবং নিকটতাত্মীয়রা জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা ব্যবসায়। বৃহস্পতিবার সেলিনা আকতার বিপুল চালান নিয়ে চট্টগ্রামে ধরা পড়ে। এসময় একটি নম্বরবিহীন প্রাইভেট কারও আটক করা হয়। কারটি সাম্প্রতিক কেনা। ইয়াবা পাচারের জন্য তাদের আরো ডজনখানেক প্রাইভেট গাড়ী রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া তাদের সিন্ডিকেটভূক্ত সদস্যদের বিভিন্ন শো-রুম থেকেও গাড়ী ভাড়া নিয়ে ইয়াবা পাচার করা হয়। এই কাজে ব্যবহার করা হয় নারীদের। যেহেতু নারী থাকলে তল্লাশি করা হয় কম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা ও সর্ব শেষ গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে তার আত্মীয়স্বজনেরাও একই সিন্ডিকেটের সদস্যভূক্ত। এনবিআর অথবা দুদকের মাধ্যমে তাদের সম্পদের বিবরণ নিলে তাদের ‘আলাদিনের চেরাগ’ পাওয়ার মত হঠাৎ কোটিপতি হয়ে ওঠার রহস্য উম্মোচিত হবে।

পাঠকের মতামত: