ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধারে

কললিস্ট বের করতেই ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

চকরিয়া-পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা ছিনতাইকারীদের মোবাইল কললিস্ট বের করার কথা বলে মো. আজিম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হকের বিরুদ্ধে। অটোরিকশাটি ছিনতাইকারীর কবল থেকে উদ্ধার করতে পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন মো. আজিম। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা উল্টো সেবার বিনিময়ে অগ্রিম ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেন। অবশেষে কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ছিনতাইকারীদের দিয়ে অটোরিকশাটি উদ্ধার করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পূর্ব গোঁয়াখালী এলাকার মৃত আবু ছিদ্দিকের ছেলে মো. আজিমের মালিকানাধীন সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি ভাড়া নিয়ে চালান রবিউল আলম নামক এক চালক। গত ২৯ আগস্ট রবিউল আলম অটোরিকশা নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে পেকুয়া আসার পথে আনোয়ারার বরুমছড়া এলাকায় পৌঁছালে সংকেত দেন তিনজন যাত্রী। পরে চালক রবিউল আলম তাঁদের নিয়ে কিছুদূর যেতেই হাত মুখ বেঁধে অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নেন যাত্রীবেশে গাড়িতে ওঠা ব্যক্তিরা।

তিনদিন পর খোঁজ মেলে চালক রবিউল আলম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে ছিনতাইকারীরা মালিক মো. আজিমের মোবাইলে কল দিয়ে ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। এমনকি টাকা আদায় করতে ছিনতাইকারীরা তাকে বিকাশ নাম্বারও দেন। এ ঘটনায় অটোরিকশার মালিক মো. আজিম পেকুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের তদন্ত করেন পেকুয়ায় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক। অভিযোগ পাওয়ার শুরুতে অটোরিকশাটি উদ্ধার করতে বাদী মো. আজিমের কাছ থেকে ঘুষের চাপ দেন এসআই নাজমুল হক। সর্বশেষ ছিনতাইকারীর মোবাইলের কললিস্ট বের করার কথা বলে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেন তিনি।

সিএনজি চালিত অটোরিকশার মালিক মো. আজিম বলেন, নিজের শেষ সস্বল সিএনজি চালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের কবলে পড়লে চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ে। ছিনতাইকারীরা অটোরিকশা ফিরিয়ে দিতে আমার মোবাইলে কল দিয়ে ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। উপায় না পেয়ে পেকুয়া থানায় একটি অভিযোগ দিই। অভিযোগ তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় পেকুয়া থানার এসআই নাজমুল হককে। তিনি প্রথমে অভিযোগ হাতে নিয়ে দুই হাজার টাকা নেন। একদিন পর ছিনতাইকারীর কল লিস্ট বের করতে হবে বলে আবারও দশ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তখন তাঁর হাতে ৮ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি দুই হাজার টাকা পরে দেওয়ার কথা ছিলো।

তিনি আরও বলেন, আমি তাঁর পেছনে ঘুরতে ঘুরতে অনেকটা হতাশ হয়েছি। ছিনতাইকারীরা আমাকে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে ২ লক্ষ টাকা দাবি করার বিষয়টি জানাতে শতবার ফোন দিয়েছি। কিন্তু তিনি আমার কল ধরেননি। ঘুষ নেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি (এসআই) নিজে কল দিয়েছেন, ঘুষ নেওয়ার পরে আর একটি কলও ধরেননি। অবশেষে পুলিশের আশা ছেড়ে দিয়ে নিজের একমাত্র সম্বলটি ছিনতাইকারীদের ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে উদ্ধার করি।

এ প্রসঙ্গে এসআই নাজমুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি গাড়ি চুরি বা ছিনতাই ঘটনার বাদীর কাছ থেকে কোন ধরনের টাকা চাইনি ও নিইনি। গাড়ি উদ্ধারে সহযোগিতা চাইলে বাদী যথাসময়ে যোগাযোগ না করে কারো প্ররোচনায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অন্য একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি কোন সাংবাদিকের সাথে খারাপ বা আপত্তিকর বক্তব্য বা কথা বলিনি। হয়তো কেউ আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উদ্দেশ্যমুলক ষড়যন্ত্র করছে।

পাঠকের মতামত: