ঢাকা,বুধবার, ৮ মে ২০২৪

পেকুয়ায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতি!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী এয়ার আলী খাঁন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

চলতি বছরের ২১ এপ্রিল ২০২৩ইংরেজী তারিখে সরকারী বন্ধের দিন অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের একদিন পূর্বে বেশ তড়িগড়ি করেই ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষা গোপনে অনুষ্ঠিত হয়।

নিয়োগ পরীক্ষায় প্রধান শিক্ষক পদে মোট ৭জন প্রার্থী আবেদন করলেও ৬জন প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। রহস্যজনক কারণে চকরিয়ার বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নুরুল আবচারকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য ডাকা হয়নি। যেসব প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অধিকাংশই ডামি প্রার্থী।

প্রার্থীরা হলেন-রাজাখালী এয়ার আলী খাঁন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: জাহেদ উল্লাহ (অনিয়মের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত), চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ আকতার আহমদ, বারবাকিয়া হোসনে আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা আলী, টইটং উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: রাশেদুল ইসলাম, শিলখালী হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক বারেক আহমদ, চকরিয়ার দরবেশ কাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর হোসেন। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সবাই সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: জাহেদ উল্লাহর এক সময়ের শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকর্মী।

সুচতুর জাহেদ উল্লাহ নিজের নিয়োগকে পাকাপোক্ত করতে এসব প্রার্থীদের ভাড়া করে এনে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করিয়েছেন।

চলতি বছরের ২১ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের সরকারী বন্ধ চলাকালীন রাজাখালী এয়ার আলী খাঁন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের মাধ্যমে জাহেদ উল্লাহ কে এক নম্বরে উর্ত্তীণ দেখিয়ে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও এ নিয়োগ পরীক্ষার আগের দিন ডিজির প্রতিনিধির কাছ থেকে জাহেদ উল্লাহ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও কিনে নেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। আগের দিন প্রশ্ন কিনে নিয়ে পরের দিন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে এক নম্বরে উর্ত্তীণ হন মো: জাহেদ উল্লাহ।

এ ধরনের প্রশ্নবিদ্য নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে পুন:রায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিরপেক্ষভাবে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও রাজাখালী এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মৌলভী ফরিদ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যথানিয়মে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্টিত হয়েছে। নিয়োগ কোন অনিয়ম করা হয়নি। এর বাইরে তিনি কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

এরমধ্যে একই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শিক্ষক মো: জাহেদ উল্লাহকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে গতকাল ৩ আগস্ট মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকার কয়েকজন সচেতন নাগরিক।

এছাড়া লিখিত অভিযোগে পেকুয়া উপজেলারর ১০জন সচেতন ব্যক্তি গণস্বাক্ষর করেন। যার অনুলিপি দেয়া হয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক, কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, যাকে (জাহেদ উল্লাহ) প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাকে অনিয়ম-দুনীতির মাধ্যমে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। অনিয়মের মাধ্যমে ওই বিদ্যলয়ে প্রধান শিক্ষক মনোনীত করায় এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অভিযোগের ব্যাপারে  সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: জাহেদ উল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়ায় তিনি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে নিয়েঅগ পেয়েছেন। একটি মহল তার নিয়োগকে প্রশ্নবিদ্য করতে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।

 

পাঠকের মতামত: