ঢাকা,শনিবার, ৪ মে ২০২৪

রামু পাবলিক লাইব্রেরির সব বই চুরি, সর্বত্র তোলপাড়

সোয়েব সাঈদ, রামু ::
প্রশাসনের চরম গাফেলতির কারণে অযতœ ও অবহেলায় দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকা রামু পাবলিক লাইব্রেরির সব বই চুরি হয়ে গেছে। ২ হাজারের অধিক বই, বৈদ্যুতিক পাখা সহ লাইব্রেরির বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরির এ ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছেন রামুর বই প্রেমিসহ সচেতন মহল। কবে চুরির ঘটনাটি ঘটেছে, তা নিশ্চিত করা যায়নি। তবে চুরির বিষয়টি জানাজানি হয় বৃহষ্পতিবার, ৬ জুলাই দুপুরে।
জানা গেছে- আতিকুজ্জামান রাসেল নামের ঢাকার এক প্রকাশক ও গবেষক বৃহষ্পতিবার দুপুরে রামু পাবলিক লাইব্রেরি পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান পুরো লাইব্রেরি ফাঁকা, একটি বইও নেই। বুকশেলফগুলো খালি, পুর্বপাশের একটি জানালাও ভাঙ্গা। বিষয়টি মূহুর্তেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও রামু থানার কর্তাব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে যান।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন রামু উপজেলা সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ আলম রামু পাবলিক লাইব্রেরির সবকটি বই চুরিকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে বলেন- এ ঘটনার দায় প্রশাসন কিছুতেই এড়াতে পারেনা। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত রামু পাবলিক লাইব্রেরি একসময় রামুবাসীর জ্ঞান আহরণের উৎসস্থল ছিলো। বই পড়া প্রতিযোগিতা, বই পাঠের আসর সহ নানা আনুষ্ঠানিকতায় এ লাইব্রেরি একসময় মুখরিত থাকতো। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের চরম গাফেলতির কারণেই মূলত লাইব্রেরি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এখন সব বই চুরি হলো। এটা মেনে নেয়া যায় না। এটা চুরি নাকি অন্য কোন ঘটনা তা প্রশাসনকে অবিলম্বে উদঘাটন করে রামুবাসীকে জবাব দিতে হবে। অবিলম্বে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও দোষীদের আইনের আওতায় না আনলে রামুর আপামর জনতা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রামু পাবলিক লাইব্রেরি চালুর জন্য জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন- রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমথ বড়–য়া। তিনি জানান- এটাই সম্ভবত দেশের প্রথম বড় ধরনের বই চুরির ঘটনা। উপজেলা নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে এ ধরনের চুরির ঘটনা রহস্যজনক। প্রশাসন যেন এর রহস্য উদঘাটন করে।
রামু পাবলিক লাইব্রেরি পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি উপজেলা প্রকৌশলী মঞ্জুর হাছান ভুইঁয়া বলেন, এতগুলো বই কে বা কারা চুরি করেছে ,কখন করেছে, সঠিক বলা যাচ্ছে না। বই চুরির ঘটনা অনেকদিন আগে হতে পারে। প্রশাসন বিষয়টি উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) নিরুপম মজুমদার চুরির খবর পেয়ে লাইব্রেরি দেখতে যান। তিনি জানান- চুরির ঘটনায় কারা জড়িত তাৎক্ষনিক নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লাইব্রেরিটি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। চুরির ঘটনা উদঘাটনে পুলিশের একটি টিম কাজ করছে।
রামু থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) জাফর উল্ল্যাহ জানিয়েছেন- ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে চুরির ঘটনা কবে সংগঠিত হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। চুরি না অন্য কোন ঘটনা তা উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। চুরির ঘটনা হলে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

পাঠকের মতামত: