ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

ভুল চিকিৎসায় কৃতিউশু খেলোয়াড় ‘সোলতানা’র মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া

faloupএম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥

কক্সবাজার শহরের নতুন বাহারছড়াস্থ ভুঁয়া চিকিৎসক সুনীল কুমার সুশীলের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে সোলতানা আক্তার নামে কৃতি মার্শাল আট (উশু) খেলোয়াড়র। নিহত সোলতানা আক্তার কক্সবাজার শহরের বৈদ্যঘোনার এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ করিমের মেয়ে। সে বাংলাদেশ আনসার দলের একজন নিয়মিত উশু খেলোয়াড় ছিলেন।

এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও নিজে বাঁচতে, মোটা অংকের টাকার মিশন নিয়ে নেমেছে ঘাতক চিকিৎসক। তার মালিকানাধিন মের্সাস হিরণ মেডিকেল হলটি ঘটনার পর থেকে বন্ধ রয়েছে। হাতুড়ে ডাক্তার সুনীলের পক্ষ নিয়েছে কিছু প্রভাবশালী মহলও। কথিত নামধারি ডাক্তার সুনীল ইতোপূর্বে এই এলাকায় ভুল চিকিৎসায় একাধিক রোগি মৃত্যুর ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।

তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসীর দাবী এখন গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। এর পরেও ঘাতক চিকিৎসক সুনীল চরম বেপরোয়াভাবে ঘুরাফেরা করছে এখনও। রহস্যজনক কারণে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় এলাকাবাসী দিন দিন বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে।

জানা যায়, কক্সবাজার বিমান বন্দর সড়কে কথিত চিকিৎসক সুনীল কুমার সুশীলের মালিকানাধিন ‘মের্সাস হিরণ মেডিকেল হলে’ শরীরে প্রচন্ড জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য সোলতানা আক্তার (১৬)কে নিয়ে যান তার বাবা-মা । কথিত চিকিৎসক নামধারি সুনীলের কথায় (সহকারি) কমপাউন্ডার নয়ন একটি ইনজেকশন পুশ করেন তাকে । ওই ইনজেকশনই মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়ায় কৃতি উশু খেলোয়াড় সোলতানার। ইনজেকশন করা পুশ স্থানটিতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এতে বেড়ে যায় জ্বরের তীব্রতা।

এতে তার অবস্থা অবনতি হলে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার গুরুতর হওয়ায় সোলতানাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে ২২ মে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যুর কাছে হার মানেন এই কৃতি উশু খেলোয়াড়। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র শোকে ছায়া নেমে আসে। ওই ঘটনার পর থেকে সমালোচিত মের্সাস হিরণ মেডিকেল হলটি বন্ধ করে পালিয়ে যায় কথিত নামধরি ডাক্তার সুনীল। রোববার ২২ মে বাদ আছর নামাজে জানাযা শেষে শহরের বইল্যা পাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ডিএইচ এমএস ডিগ্রীধারি কথিত ডাক্তার সুনীল দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে শহরের বিমান বন্দর এলাকায় চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে আসছে। তার এমন অপচিকিৎসার শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে একাধিক রোগির। বরাবরেই বিভিন্ন কুটকোৗশলে ঘটনা গুলো ধামাচাপা পড়ে যায়।

সোলতানা হত্যাকান্ডের বিচার ও ভুয়া চিকিৎসক সুনীলকে আইনের আওতায় এনা গ্রেপ্তারের দাবীতে বাংলাদেশ উশু এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সামাঝিক সংগঠন মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

এই কথিত চিকিৎসক নামধারি সুনীলকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে সোলতানা হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচারের দাবী দিন দিন গণদাবীর দিকে যাচ্ছে।

নিহত সোলতানা পারিবারিক একটি সূত্রে জানিয়েছেন, এই হত্যাকান্ডের ব্যাপারে মামলা না করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে একাধিক মহল। তারা এক প্রকার চাপের মুখে অবরোদ্ধ অবস্থায় রয়েছে বলেও সূত্র দাবী করে।

এদিকে এ হত্যাকান্ডটি ধামাচাপা দিতে মোটা অংকের টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে খোদ কথিত চিকিৎসক নামধারি সুনীল। মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে একাধিক প্রভাবশালী মহলকেও তার পক্ষে ভিড়িয়েছে বলে জানাগেছে। এব্যাপারে কথিত চিকিৎসক নামধারি সুনীল কুমার সুশীলের সাথে কথা বলতে গিয়ে তিনি ঘটনার এক পর্যায়ে স্বীকার করেন। তবে তিনি নন তার কমপাউন্ডার নয়ন ইনজেকশনটি পুশ করে বলে জানান। এছাড়া মৃত্যুর ঘটনাটি পারিবারিকভাবে মিমাংশার কথাও উল্লেথ করেন তিনি।

——————-

পাঠকের মতামত: