ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

জেলাব্যাপী বিদ্যুৎ বিভ্রাট, অতিষ্ট জনজীবন

38-300x122কক্সবাজার প্রতিনিধি :::

জেলাব্যাপী বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। গ্রামাঞ্চলে মোবাইল ফোনের চার্জ দেওয়াও দুরহ হয়ে পড়েছে যার ফলে তীব্র তাপদাহে সর্বত্র অস্বস্থিকর অবস্থা বিরাজ করছে। এ ছাড়াও শহরে দিনের বেলায় বিভিন্ন বিপনী বিতান ক্রেতাশুন্য হয়ে পড়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু’র আঘাতের পর এখনো জেলাব্যাপী বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসেনি। অধিকাংশ গ্রাম এখনো অন্ধকারে। কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন, সারাদিনে এক ঘন্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। যার ফলে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ।
মহেশখালী কুতুবজুমের ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন খোকন জানান, ৬ দিন ধরে কুতুবজুমে বিদ্যুৎ নাই। তীব্র গরমের মাঝে এভাবে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় সর্বত্র অচল হয়ে পড়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ চাইলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারে। কিন্তু ৬ দিন ধরে কেন করেনি তা বুঝে উঠতে পারছি না।
মহেশখালীর কালারমারছড়ার মোহাম্মদ সুমন জানিয়েছেন, রোয়ানু’র আঘাতের পর টানা তিনদিন বিদ্যুৎ  ছিল না। গতকাল থেকে বিদ্যুৎ পেলেও তা না পাওয়ার সমান। ২৪ ঘন্টায় বিদ্যুৎ থাকে ১০/২০ মিনিট। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ব্যবহার প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার পর বিভিন্ন জেনারেটারের বিদ্যুতের উপর নির্ভর হতে হচ্ছে সবাইকে। একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাট যার ফলে অতিষ্ট সবাই।
চকরিয়ার বদরখালী বাজারের ব্যবসায়ি বেলাল আহমদ জানান, বদরখালী বাজার কক্সবাজার জেলার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র। বিদ্যুতের কারণে ব্যবসা হুমকির সম্মুখিন। জেনারেটরের উপর নির্ভর করে ব্যবসা চালানো যায় না। এই বাজারে প্রায় ৫০টি মাঝারি ধরণের শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতে বড় সমস্যায় পড়েছে মাছ ব্যবসায়িরা। প্রায় সবকটি বরফকল বন্ধ হযে যাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়িরা। বরফ না থাকায় কোন ট্রলার মাছ নিয়ে বদরখালী আসছে না। এ ছাড়াও তীব্র গরমের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সবাই।
এদিকে গ্রাম ছাড়াও কক্সবাজার শহরেও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পুরো শহরেই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সকাল ৯টার পরেই প্রধান সড়কে গাড়ি কমে যাওয়ায় ছিলনা তেমন যানযট। এ ছাড়া ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়ে উঠা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পও ঝিমিয়ে পড়ছে।
এদিকে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সবোর্চ্চ তাপ মাত্র ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস আবহাওয়ার সূত্রে আরো জানা গেছে, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আকাশে অস্থায়ী আংশিক মেঘলাসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাপদাহ আরো বাড়তে পারে।
রিক্সা চালক আবদু চালাম জানিয়েছেন, রাতে ছাড়া রিক্সা চালানো সম্ভব নয়। দিনের বেলায় এক ঘন্টা রিক্সা চালালে অসুস্থ হয়ে পড়ি। শহরে লোকজনের তেমন চলাচল নেই। যার ফলে আয় কমে যাওয়ায় এখন অর্থ সংকটের মধ্যে আছি।
হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, তীব্র গরমের প্রভাবে কক্সবাজারে পর্যটক কমে গেছে। এরা মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট আরো সমস্যার সৃষ্টি করছে। বর্তমানে কিছু পর্যটক কক্সবাজারে থাকলেও তীব্র গরম ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে তারা অতিষ্ট হয়ে উঠছেন।
কক্সবাজার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ নিয়ে কোন সমস্যা নেই। সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের কিছু লাইনে সমস্যা হয়েছে। অচিরেই এ সমস্যা থাকবে না।

পাঠকের মতামত: