ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

পেকুয়ায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের অডিটরিয়াম যেন ভূতুড়ে ঘর!

পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় সুষ্ঠু তদারকির অভাবে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের পেকুয়ার বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিএমআই) অডিটরিয়াম ভবন ও অত্যাধুনিক মূল্যবান জিনিস সামগ্রী। পেকুয়ার একমাত্র এই অডিটরিয়াম অব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে বর্তমানে ভূতুড়ে ঘরে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা মেলে, প্রায় তিন ফুট ময়লা-আবর্জনার নিচে তলিয়ে গেছে অডিটোরিয়ামের ফ্লোর। ফ্লোরে জমে আছে হাঁটু পরিমাণ ময়লা পানি। কিছু ভাঙ্গা কাঠের টুকরো প্রমাণ করছে মে র অস্তিত্ব। অধিকাংশ ফ্যান ও চেয়ার ভাঙ্গা । হদিস নেই লাইট ও সাউন্ড সিস্টেমের। দরজা নেই বললেই চলে। প্রায় সবকটি জানালার কাচ ভাঙ্গা। ছাদের একটি অংশ ভেঙে সূর্যের আলো প্রবেশ করাতে খসে পড়া প্লাস্টার ও দেয়ালের ফাটল দৃশ্যমান।

তথ্য সংগ্রহে জানা যায়, পেকুয়া বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিএমআই) এর পাশে ৩ সকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অডিটরিয়ামটির ২০০৩ সালের ২০ মার্চ কাজ শুরু হয়। এরপরের একই বছরের ১৮জুন আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমদ। শুরুর কয়েক বছর অডিটরিয়ামটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে থাকা অডিটোরিয়ামটি হাতবদল হয়ে বর্তমানে পেকুয়া বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট’র তদারকিতে আসলেও তারা এ বেহাল দশার দায় নিতে অনিচ্ছুক।
পেকুয়া বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট’র অধ্যক্ষ এ এম ফরিদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘অডিটরিয়ামটি আমাদের তদারকিতে আসার আগে থেকে এই বেহাল অবস্থায় ছিলো। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আনসার সদস্যরা এখানে বসবাস শুরু করে। তাঁরা যাওয়ার আগে অডিটোরিয়ামকে গোয়াল ঘরে পরিণত করে। এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিতে প্রধান নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ ও বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেও কোন সুরাহা মেলেনি। আমি এ বিষয়ে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ জাফর আলমের সহযোগিতা কামনা করছি।

২০০৯ সালের আগে ৬০০ আসনের এই অডিটরিয়ামটি মুখর ছিল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মকান্ডে। নিয়মিত চলতো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও সংস্থার সভা, সেমিনার। বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনেক অনুষ্ঠানও ধারণ করা হয়েছে এই অডিটরিয়াম থেকে। চোখের সামনে সংস্কৃতির এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নষ্ট হয়ে যাওয়াতে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা।

সাংস্কৃতিককর্মী ইমরান হোছাইন বলেন, অডিটোরিয়ামটি উদ্বোধনের পর পেকুয়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গন বিকাশের একটি দ্বার উন্মোচিত হয়েছিলো। কিন্তু এভাবে অযত্ন-অবহেলায় এটি নষ্ট হয়ে যাওয়া পেকুয়া বাসীর জন্য খুবই হতাশা জনক।
সাংস্কৃতিককর্মী পারভেজ বলেন, সাংস্কৃতিক ও বিনোদন জগতের একমাত্র উপযোগী স্থান এই অডিটরিয়াম। এটি রক্ষা করতে না পারলে চরম ক্ষতির মুখে পড়বে বিনোদন জগৎ।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, বিএমআই এর অধীনে একটি অকেজো অবস্থায় অডিটরিয়াম রয়েছে সেটা আমি শুনেছি। অডিটরিয়ামটি সালাহ উদ্দিন সাহেব করেছিল। ওই অডিটরিয়ামটি সংষ্কার করার আমার আপাতত কোন পরিকল্পনা নেই।

পাঠকের মতামত: