ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আসছেন প্রধানমন্ত্রী: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১১ দাবি কক্সবাজারবাসীর

ইমাম খাইর, কক্সবাজার :: আগামীকাল পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকালে ইনানী সাগরে আন্তর্জাতিক নৌশক্তি মহড়া উদ্বোধন করবেন। দুপুরে সৈকতের লাবনী পয়েন্ট সংলগ্ন শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নৌকার আদলে তৈরী মঞ্চেই ভাষণ দেবেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশসহ শহরজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরি নিশ্চিত করা হয়েছে। মাঠে সতর্ক অবস্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে, তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতার শেষ সময়ের এই সমাবেশে তিনি কী ঘোষণা দিচ্ছেন, কক্সবাজারবাসীকে কী আশার বানী শুনাবেন, তা দেখার বিষয়।

২০১৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে এসে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দলীয় জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নানা দিক বিবেচনায় তার এবারের সফর কিন্তু অনেক গুরুত্ব বহন করে।

প্রায় সাড়ে ৫ বছর পর এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়লয়সহ ১১ দফা দাবি রয়েছে কক্সবাজারবাসীর।

দাবিসমূহ:
কক্সবাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজারের সাথে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাঁকখালী নদীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া মগনামার মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালুকরণ, কক্সবাজার পর্যটন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চার লেনের মেরিন ড্রাইভ, ছয় লেনের কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহসড়ক, কক্সবাজার সিটি কর্পোরেশন, কক্সবাজার সিটি কলেজকে সরকারিকরন, চকরিয়া উপজেলা মাতামুহুরীকে পৃথক উপজেলা ঘোষণা, ঝিনুক ব্যবসায় সাথে জড়িত উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও স্থায়ী আধুনিক ঝিনুক মার্কেট নির্মাণ।

এদিকে, শেখ হাসিনার সফর ঘিরে পুরো শহর সাজানো হয়েছে। তাকে স্বাগত জানিয়ে টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ড-পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহরের বিভিন্ন সড়ক, উপসড়ক। লবাণী পয়েন্ট সড়কে বসানো হয়েছে বড় বিলর্বোড। ভাঙাচোরা সড়কের সংস্কার, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, সড়কে লাইটিং ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে সমানতালে। অস্পন্ন প্রধান সড়কের কাজও কোনমতে শেষ করা হয়েছে।

বিমানবন্দর থেকে শহরের কলাতলীর হাঙর ভাস্কর্য মোড় পর্যন্ত পাঁচ-ছয় কিলোমিটার সড়কে দুই শতাধিক তোরণ তৈরি হয়েছে।

সরকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের ২৮টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৪টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ২৮ প্রকল্পে এক হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ভিত্তিপ্রস্তরযোগ্য ৪ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৫৭২ কোটি টাকা।

উদ্বোধনযোগ্য ২৮ প্রকল্প:
কক্সবাজার গণপূর্ত উদ্যান, বাহারছড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠ, কুতুবদিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবন, পেকুয়া উপজেলা ভূমি অফিস ভবন, কক্সবাজার জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় ভবন, শেখ হাসিনা জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন, আবদুল মাবুদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চার তলা একাডেমিক ভবন, কক্সবাজার জেলার লিংক রোড-লাবনী মোড় সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, রামু-ফতেখাঁরকুল-মরিচ্যা জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়কের হাড়িয়াখালী থেকে শাহপরীরদ্বীপ অংশ পুনর্র্নিমাণ, প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণ, বাঁকখালী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ; নিষ্কাশন; সেচ ও ড্রেজিং প্রকল্প (১ম পর্যায়), শাহপরীরদ্বীপে সী ডাইক অংশে বাঁধ পুনঃনির্মাণ ও প্রতিরক্ষা কাজ, ক্ষতিগ্রস্ত পোল্ডার সমূহের পুর্নবাসন প্রকল্প, রামু কলঘর বাজার-রাজারকুল ইউপি সড়কে বাঁকখালী নদীর উপর ৩৯৯ মিটার দীর্ঘ সাংসদ ও রাষ্ট্রদূত ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী সেতু, কক্সবাজার জেলায় নবনির্মিত ৬ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন, ৪টি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন (রামু, টেকনাফ, মহেশখালী ও উখিয়া), কক্সবাজার পৌরসভার এয়ারপোর্ট রোড আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, শহিদ সরণি আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, নাজিরারটেক শুটকি মহাল সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, টেকপাড়া সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, সী বীচ রোড আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, মুক্তিযোদ্ধা সরণি আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, সৈকত-স্মরণ আবাসিক এলাকা সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ৪ প্রকল্প:
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্প, কুতুবদিয়া উপজেলাধীন ধুরুং জিসি মিরাখালী সড়কে ধুরুংঘাটে ১৫৩ দশমিক ২৫ মিটার জেটি এবং আকবর বলি ঘাটে ১৫৩ দশমিক ২৫ মিটার জেটি নির্মাণ, মহেশখালী উপজেলাধীন মহেশখালী গোরকঘাটা ঘাটে জেটি নির্মাণ, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদী বরাবর পোল্ডারসমূহের পুনর্বাসন প্রকল্প।

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রেল লাইন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়ীর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, সাবরাং এক্সক্লোসিভ ট্যুরিজম জোন, মেরিন ড্রাইভ, মেডিকেল কলেজ, সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম, বিকেএসপি, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, শেখ হাসিনা নৌ ঘাঁটি, হাই-টেক পার্ক, জাতীয় সমুদ্র গবেষণা ইনন্সিটিটিউট, অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ ৪০টি মেগা প্রকল্প হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: