ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে ত্রানের জন্য হাহাকার

121301_183গোলাম আজম খান, কুতুবদিয়ার দুর্গত এলাকা থেকে ফিরে:

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু আঘাতে ক্ষতবিক্ষত বেড়ীবাধ জোয়ারের পানি আসা যাওয়া করায় এখনো হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এখনো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে অসংখ্য পরিবার।
জেলার কক্সবাজার সদর কুতুবদিয়া মহেশখালী,পেকুয়া,টেকনাফের শাহপরীদ্বীপের ২ লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কুতুবদিয়া,পেকুয়া ও মহেশখালীর ধলঘাটা দ্বীপে। এই সব এলাকার ৪০কি.মি. বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় সাগরের পানি এখনো দ্বীপে আসা যাওয়া করছে। ফলে এখনো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে ওই এলাকার অধিবাসীরা।
কুতুবদিয়া দ্বীপের আলী আকবর ডেইল, লেমশীখালী, উত্তর ধুরুং, দক্ষিণ ধুরুং ও কৈয়ারবিল ইউনিয়ন, পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া, মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়ন, মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা দ্বীপ, মাতারবাড়ি ইউনিয়ন ও টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের নিচু এলাকাগুলোতে এখনো জোয়ার-ভাটা চলছে।
এদিকে কুতুবদিয়া দ্বীপের উত্তর ধুরুং ইউনিয়নকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এসব এলাকায় এখনো সরকারী কিংবা সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোন ধরণের সহায়তা পৌঁছেনি।
ফলে অত্যন্ত মানবেতর ও অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছে উপকূলীয় হাজার হাজার মানুষ। এখনো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে অসংখ্য পরিবার।
অন্যদিকে সরকারীভাবে বরাদ্দের ত্রাণ চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল বলে দাবী করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। গত ২১ মে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর মরণ ছোবলে মূহুর্তের মধ্যেই লন্ডভন্ড হয়ে যায় পেকুয়ার তিন উপকূলীয় ইউনিয়ন মগনামা, রাজাখালী, উজানটিয়া ও পেকুয়ার আংশিক। এছাড়াও এ তিন ইউনিয়নের অসংখ্য মৎস্য প্রজেক্ট ও পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে স্থানীয় মৎস্যচাষীদের ক্ষতি হয়েছে লাখ লাখ টাকা।
সরেজমিনে কুতুবদিয়া উপজেলার কুতুবদিয়া দ্বীপের আলী আকবর ডেইল, লেমশীখালী, উত্তর ধুরুং, দক্ষিণ ধুরুং ও কৈয়ারবিল ইউনিয়ন, মগনামা ইউনিয়ন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, গত ২১ মে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ছোবলে হাজার হাজার কাচাঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উত্তর ধুরুং ও আলী আকবর ডেইল।
এই সব এলাকার লবণচাষীদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লবণ মাঠের উপর মজুদ করে রাখা শত শত মণ কাচা লবণ জলোজ্বাসে ও জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।
এই সব এলাকার বিভিন্ন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন অভিযোগ করেছেন, এই দুর্যোগের সময় অর্ধ শতাধিক এনজিও কথিত সামাজিক ব্যবসার আড়ালে জমজমাট সুদের ব্যবসা এ অঞ্চলের দরিদ্র লোকজনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও দূর্যোগ, বন্যা ও ঘূর্নিঝড় আক্রান্তের পর এলাকায় দূর্গতের মানুষের সহায়তায় তাদের দেখা মিলেনি।

 

পাঠকের মতামত: