ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে আঘাত হেনেছে রোয়ানো ঃ ঘূর্ণিবায়ু-জলোচ্ছাসে উপদ্রুত উপকূল; নিহত ২

FB_IMG_1463828169478আতিকুর রহমান মানিক :::

কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হেনেছে  ঘুর্ণিঝড় রোয়ানো। দমকা হাওয়া ও জলোচ্ছাসে এসময় জেলাব্যাপী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছাসে বেড়ীবাধ বিলিন হয়ে লোকালয়ে ঢুকেছে সমুদ্রের পানি। ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্হা। ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাস থেকে নিজদের বাঁচাতে গিয়ে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় নিহত হয়েছে দুইজন। বিভিন্ন উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৮ হাজার কিলোমিটার উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্হ হয়েছে।
২১ মে (শনিবার) সকাল ৮ টা থেকে উপকূল অতিক্রম শুরু করে ঘূর্ণিঝড়টি। এসময় প্রবল দমকা হাওয়া ও বৃষ্টিপাত শুরু হলে জনগন আতংকিত হয়ে পড়ে। পুর্ণিমা তিথির প্রবল জোয়ারের সাথে নিম্নচাপজনিত জলোচ্ছাস যোগ হয়ে ফুলে-ফেঁপে উঠে সাগর। এ সময় ৩/৪ ফিট উঁচু জলোচ্ছাসের প্রথম ধাক্কাতেই দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, উখিয়া, টেকনাফ ও সদর উপজেলার উপকূলীয় বিভিন্ন স্হানে বেড়ীবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে প্লাবিত হয় লবণ মাঠ, চিংড়ি ঘের ও লোকালয়। কক্সবাজার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডস্হ সমিতি পাড়া, নাজিরার টেক, ফদনার ডেইল, কুতুবদিয়া পাড়া ও উত্তর নুনিয়াছড়ার বিস্তীর্ন এলাকার বাড়ীঘর প্লাবিত হয়। সদর উপজেলার ইসলামপুর, পোকখালী, চৌফলদন্ডী, খুরুস্কুল ও ভারুয়াখালী ইউনিয়নে বেড়ীবাধ ভেঙ্গে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা। ঈদগাঁও-চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল-কক্সবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের একাধিক পয়েন্টে সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ভাঙ্গা বেড়ীবাধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা ও বাড়ীঘর প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্হানীয় মৌলভী  আলী হোসাইন। সোনাদিয়া দ্বীপের রাকিব জানান, সকাল নয়টায় জোয়ারের প্রথম ধাক্কাতেই জলোচ্ছাসে প্লাবিত হয় পূর্ব পাড়া ও পশ্চিম পাড়ার লোকালয়। এ সময় দ্বীপের একমাত্র সাইক্লোন শেল্টার কাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন দূর্গতরা। গতরাত থেকেই জেলাব্যাপী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত জেলাশহরে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়েছে। এ দিকে ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্হিতি নিয়ে শনিবার বিকাল ৩ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন  জানান, কুতুবদিয়ায় নিহতদের একজন মাটির ঘর চাপা পড়ে ও অন্যজন নৌকাযোগে নিরাপদ স্থানে যাতায়াতের সময় দু’টি নৌকার মাঝখানে চাপা পড়ে মারা যান। সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিবুর রহমান  রোয়ানোর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পাউবো’র ২৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবি করেন। জেলায় এখনো ৬ নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলজুড়ে আতংক বিরাজ করছে ও হাজারো জনগন এখনো অাশ্রয়কেন্দ্রে অবস্হান করছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার রেডক্রিসেন্টের সদস্য আব্দুল কাইউম জুয়েল।

পাঠকের মতামত: