ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় ঠিকাদারের চাপের মূখে ঘুষের টাকা ফেরৎ দিলেন উপজেলা প্রকৌশলী!

IMG_20160520_192747মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :::

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় ঠিকাদারের চাপের মূখে ঘুষের টাকা ফেরৎ দিতে বাধ্য হলেন খোদ উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী! এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিল আটকে রেখে ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে বিল পাশ না করায় উপজেলা প্রকৌশলীকে চাপ সৃষ্টি করেন ওই ঠিকাদার। এমনই চাঞ্চল্যেকর ঘটনাটি ঘটেছে, গতকাল ১৯ মে বিকাল ৩টার দিকে পেকুয়া উপজেলা পরিষদে। পরে ঘটনাটি বাইরে চাউর হলে অন্যান্য ঠিকাদার স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

 স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তালিকাভূক্ত ঠিকাদার ও চকরিয়া পৌরসভার বাসিন্দা মো. পারভেজ দীর্ঘদিন ধরে পেকুয়া এলজিইডি কর্তৃক কার্যাদেশ প্রাপ্ত হয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করে আসছেন। তিনি গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উন্নয়মূলক কাজ যথাসময়ে বাস্তবায়ন করলেও পেকুয়া এলজিইডি অফিস তার প্রাপ্য বিল প্রদানে গড়িমসি করে আসছিল। ঘটনার দিন উপজেলা প্রকৌশলী তাকে বিল পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে ২০টাকার ঘুষ নেন।

 ঠিকাদার মো. পারভেজ অভিযোগ করে জানান, তিনি সুষ্টুভাবে কাজ বাস্তবায়ন করলেও পেকুয়া এলজিইডির প্রকৌশলী মো. জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী কাজের বিল প্রদান করছেনা। তিনি ধরা কর্য করে সরকারী উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করেছেন। তার বাস্তবায়িত কাজের অনূকূলে সরকারী ফান্ডে তহবিল থাকলেও বিল প্রদানে নানা ধরনের হয়রানীসহ গড়িমসি করে আসছিল প্রকৌশলী জাহেদ। বিল সংক্রান্ত কোন কাগজে প্রকৌশলী জাহেদ স্বাক্ষর করছেনা। ঠিকাদার পারভেজ আরো জানান, তার কাছ থেকে প্রকৌশলী মোটা অংকের ঘুষ দাবী করে। পরে গতকাল ১৯ মে সকাল ১১টায় অনেকটা বাধ্য হয়েই তিনি বিলের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করাতে পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলীকে ২০হাজার টাকা ঘুষ দেন। এসময় তাকে প্রকৌশলী জাহেদ জানান, ১৯ মের মধ্যেই বিল ছাড় করা হবে। এদিকে এ দিন বিকাল পর্যন্ত কোন ধরনের বিল ছাড় না করায় ঠিকাদার পারভেজ বাধ্য হয়ে বিকাল ৩টার দিকে উপজেলা প্রকৌশলীর বাসভবনে গিয়ে বিল না দিলে তার দেওয়া ঘুষের টাকা ফেরৎ চান। এসময় তুমুল বাড়াবাড়ি হয় ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর মাঝে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে বাধ্য হয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ঠিকাদার পারভেজ ২০হাজার টাকা ফেরৎ দেন।

 পেকুয়া ও চকরিয়ার বেশ কয়েকজন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিনিধিকে জানান, পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী প্রত্যেক উন্নয়ন কাজের বিল প্রদানের সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রতি লাখে হিসাব করে পারসেন্টিজ নেন। তার দাবীকৃত ঘুষ না দিলে ঠিকাদারদের নানাভাবে হয়রানী করা হয়। এভাবে এলজিইডির অধীন বাস্তবায়নকৃত প্রতিটি উন্নয়ন কাজের কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারদের কাছ থেকে উপজেলা প্রকৌশলী লাখ লাখ ঘুষে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

 ঠিকাদার পারভেজ আরো অভিযোগ করে জানান, পেকুয়া এলজিইউডির প্রকৌশলী পেকুয়া উপজেলায় যোগদান করার পর থেকে ঠিকাদারদের জিম্মি করে নানান ধরনের হয়রানী শুরু করে। ঘুষ ছাড়া কোন ধরনের উন্নয়নের কাজের বিলে সই-স্বাক্ষর করেনা প্রকৌশলী জাহেদ।

 অভিযোগের ব্যাপারে আজ ২৯ মে সন্ধ্যা ৭টা ৩৪ মিনিটে পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নং ০১৮১৩-৬৯২৯৪০ নাম্বারে ফোন করা হলে পাওয়া যায়নি। তিনি তার মুঠোফোনে মিস্ড কল এলার্ট চালু করায় অনেক চেষ্টা করেও ফোনে তাকে পাওয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত: