ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় নৌ-পুলিশের অভিযানে অস্ত্রসহ কাঁকড়া শিকারি আটক, পরিবারের দাবি চক্রান্ত

ddeededপেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় বদরখালী নৌ-পুলিশের অভিযানে দু’টি দেশীয় তৈরি একনলা বন্ধুকসহ এক কাঁকড়া শিকারিকে আটক করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্নদ্বীপ করিয়ারদিয়ার সাটইপাড়া দুর্গম এলাকা থেকে নৌ-ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা গত রবিবার গভীররাতে অস্ত্রসহ তাকে আটক করে।

 আটককৃত ব্যক্তির নাম নুরমোহাম্মদ (৫৫)। তিনি ওই এলাকার ছাবের আহমদের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কাঁকড়া শিকারি ও লবন চাষি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তবে অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে পরষ্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। পরিবারের দাবি তাকে ফাঁসাতে অস্ত্র উদ্ধারের নামে এটি তাদের সাথে প্রভাবশালীদের গভীর চক্রান্ত। ষড়যন্ত্র করে পুলিশ সদস্যদের ম্যানেজ করে বাহির থেকে অস্ত্র এনে পরিকল্পিতভাবে তাকে আটক করেছে।

 বদরখালী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ আমিনুল হক জানিয়েছেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা অস্ত্রসহ তাকে আটক করে। কয়েকজন ডাকাত ওইদিন রাতে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে তাদেরকে আটক করার চেষ্টা করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন ডাকাত পালিয়ে যায়। এ সময় একটি অবৈধ অস্ত্রসহ নুরমোহাম্মদকে হাতেনাতে আটক করা হয়। অপর অস্ত্রটি নদীর চর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় করিয়ারদিয়া শতশত মানুষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা নুরমুহাম্মদ ওই ঘটনায় জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন।

 এলাকাবাসিরা জানায় নুরমুহাম্মদ অত্যন্ত দরিদ্র। তার ভিটে বাড়ি না থাকায় গত কয়েক বছর ধরে করিয়ারদিয়ার সাইটপাড়ায় পাউবোর বেড়িবাধে পরিবার নিয়ে একটি কুড়ে ঘরে বসবাস করে আসছেন। সে মহেশখালী মাতারবাড়ি চ্যানেলে নিয়মিত কাঁকড়া আহরন ও লবন চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

 স্থানীয় পুরাতনঘোনা জামে মসজিদের ইমাম মৌলভী ওসমানগনি, লবন ব্যবসায়ী এনামুল হক, প্রতিবেশি জাকির হোসেন, মাহমুদুল করিম, নুর আহমদ, আলতাফ হোসেন, বেলাল, ইলিয়াছ, নুরুল আলম জানিয়েছেন নুরমোহাম্মদ বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন। ওই সময় কান্নাকাটি হলে আমরা তার বাড়িতে যাই। দেখতে পাই পুলিশ তাকে হাতে কড়া লাগিয়েছে। অস্ত্র দু’টি তার সামনে রাখে। আমরা পুলিশকে প্রশ্ন করলে তারা গালাগালি ও লাঠিচার্জ করে তাড়িয়ে দেয়।

 নুরমোহাম্মদের স্ত্রী রেনুআরা বেগম জানায় ইউপি নির্বাচনে মেম্বারকে ভোট না দেয়া নিয়ে আমার স্বামীর সাথে এক প্রভাবশালীর বিরোধ চলছে। তিনি একাধিকবার হাকাবকা করেছে। পুলিশকে টাকা দিয়ে ওই প্রভাবশালী মেম্বার আমার স্বামীকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়েছে।

 নুরমোহাম্মদের বৃদ্ধ পিতা ছাবের আহমদ জানায় আমার ছেলে নির্দোষ। বেড়িবাধে খুব কষ্ট করে জীবন যাপন করছে। তার কাছে অস্ত্র থাকার কোন যুক্তকতা নেই। তিনি পরিবারের একমাত্র উপর্জনশীল ব্যক্তি। পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া জানায় নৌ-ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা আটককৃতকে দু’টি অস্ত্রসহ থানায় সোপর্দ করে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হবে।

পাঠকের মতামত: