কক্সবাজারের মিয়ানমার ঘেষা উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে ও বস্তি এলাকায় চলছে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির চরম বিপর্যয়ের মূখে। প্রতিনিয়ত ঘটছে খুন, ডাকাতি, ছিনতায়, ধর্ষন, অপহরণ সহ চলছে অনৈতিক কর্মকান্ডের নৈরাজ্য।
জানা গেছে, ১৯৯১ সালের শেষের দিকে আড়াই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে এসে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়। বেশির ভাগ রোহিঙ্গা ক’টনৈতিক পর্যায়ে মিয়ানমারে পাঠানো হলেও ৩৪ হাজারের অধিক রেজিষ্ট্রাট রোহিঙ্গা বর্তমানে ক্যাম্পে অবস্থান করছে। ২০১২ সালের জুন মাসে মিয়ানমার সরকারের অত্যাচার নিপীড়ন সহ্য করতে না পারে ৭০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা নাফ নদী স্থল পথ ফাঁড়ি দিয়ে কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে আশ্রয় নেয়। তাদের কোন কর্মকান্ড না থাকায় চুরি, ডাকাতি, খুন, ছিনতায় , অপহরণ, দেহব্যবসা, মাদক ব্যবসার মত অপরাধজনক কর্মকান্ড চালিয়ে আসলেও ক্যাম্পে নিয়োজিত আইনশৃংখলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে গেছে। তবে অভিযোগ ক্যাম্প পুলিশের সহযোগিতায় রোহিঙ্গারা অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে। কথিপয় এনজিও সংস্থা গুলো রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগিতা করার নামে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী করণের উৎসাহ যোগাচ্ছে। বস্তির ৭০ হাজার রোহিঙ্গারা সরকারী বন ভুমি দখল করে ঝুপড়ি নির্মান করে বসবাস করছে। এ বস্তি নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ১ জন রোহিঙ্গা নেতা সহ ২ জন রোহিঙ্গা খুন হয়েছে। এ পর্যন্ত আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কোন সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সম্প্রতি রোহিঙ্গা নেতা নুরুল ইসলামকে ক্যাম্প পুলিশের সামনে প্রকাশ্য রেজিষ্ট্রাট রোহিঙ্গা খাইরুল আমিনের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারীরা গুলি করে হত্যা করে। এর আগে বস্তির নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা আবুল বাছেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ক’পিয়ে হত্যা করেছে । বর্তমানে রোহিঙ্গা বস্তি ও রেজিষ্ট্রাট রোহিঙ্গা ক্যাম্প চলছে কুখ্যাত ডাকাত খাইরুল আমিন, আবু তৈয়ব,কুতুপালং আনরেজিষ্ট্রাট ক্যাম্পের ই ব্লকের ইউনুছ, আয়ুব, জবর মূলক ও জাবের, মনির আহম্মদের নেতৃত্বে। সরকার রোহিঙ্গাদের অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলায় বস্তি ও রেজিষ্ট্রাট রোহিঙ্গারা ওই ডাকাত দলের কথামত চলতে হচ্ছে। তারাই ক্যাম্পের অভ্যন্তরে গড়ে তুলেছে মাদকের হাট। বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা, গাজা, হিরোইন সহ নান প্রকার মাদক দ্রব্য। সরকার রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেলও এখনো তা ফাইল বন্ধি থাকায় রোহিঙ্গারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দিন দিন। রোহিঙ্গাদের অভিযোগ ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ মহিউদ্দিনের সহযোগিতায় ওই ডাকাতরা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। তবে এ অভিযোগ ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ মহিউদ্দিন অস্বীকার করেছেন। কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মাহমুদুল হক বলেন, খুনের ঘটনায় সন্দেহ ভাজন দুই জনকে আটক করা হয়েছে তবে মূল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারের জন্য চিরনী অভিযান চালানো হবে।
পাঠকের মতামত: