ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

সালাহউদ্দিন আহমদকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দেখতে চান দেশবাসি -জেলা ছাত্রদল

ুিুুুনিজস্ব প্রতিবেদক ::

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দলের কাউন্সিলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পাওয়ার পর খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি দলের যোগ্য, ত্যাগী ও দুঃসময়ে পাশে থাকা নেতাদের মূল্যায়নের জন্য কাজ করছেন। দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কোন নেতা যেন অবমূল্যায়ন না হন সেদিকেই নজর রেখে বেগম খালেদা জিয়া কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই তিনি মির্জা ফখরুল ইসলামকে ‘ভারমুক্ত’ করে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব ঘোষণা করেছেন। সাথে রুহুল কবির রিজভীকে সিনিয়র য্গ্মু মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল কিংবা রিজভী যেমন তাদের ত্যাগ ও কাজের জন্য মূল্যায়ন পেলেন তেমনি আরও অনেক ত্যাগী নেতাও মূল্যায়ন আশা করেন। তেমনই একজন কক্সবাজারের কৃতিপুরুষ, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালনকারি কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী, হার না মানা টানা কয়েকবারের সাবেক সংসদ সদস্য, বেগম খালেদা জিয়ার ১৯৯১ সালের সরকার আমলে প্রধানমন্ত্রীর সহকারি একান্ত সচিব (এপিএস), আন্দোলনরত বিএনপির দুঃসময়ের কান্ডারি ও ‘গুম’ হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা সেই সালাহউদ্দিন আহমদ, যিনি ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে শুরু করে সাংসদ, মন্ত্রী, দলের যুগ্ম মহাসচিব হয়েছেন, কখনোই দল ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে বেঈমানি করেননি।

শুধুমাত্র দলের দুঃসময়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইন শৃংখলা বাহিনী পরিচয়ে অজ্ঞাত একদল অস্ত্রধারিদের হাতে অপহৃত হয়ে দীর্ঘ দুইমাস দুইদিন ‘গুম’ থাকার পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে যাকে ‘উ™£ান্ত’ অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এখনও যিনি ভারতে ‘অনুপ্রবেশে’র মিথ্যা অভিযোগে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, যেহেতু তিনি নিজের ইচ্ছায় ভারতের মাটিতে পা রাখেননি।

সেই ত্যাগী, দুঃসময়ের কান্ডারি ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থাভাজন সালাহউদ্দিন আহমদকে বিএনপির নতুন কমিটিতে যোগ্যতর পদে মূল্যায়নের জন্য দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি বিনীত আবেদন জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল।

তিনি এক লিখিত আবেদনে সালাহউদ্দিন আহমদকে তাঁর ‘চরম ত্যাগে’র জন্য দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে পদায়ন করার দাবি জানান। একই সাথে দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য নতুন সৃষ্ট পদ ‘চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক সচিব’ হিসেবে সকলেই সালাহউদ্দিন আহমদকেই দেখতে চান বলেও দাবি করেন এই ছাত্রনেতা।

জেলা ছাত্রদল সভাপতি ও ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল দাবি করেন, শুধু কক্সবাজারবাসি নয়, পুরো দেশবাসির ‘মনের কথা’টি তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সামনে তুলে ধরছেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি লেখা ওই ‘আবেদনে’ রাশেদুল হক রাসেল বলেন, ‘সালাহউদ্দিন আহমদ শুধু সাধারণ একজন নেতা নন। তিনি এমনই এক রাজনীতিক যিনি ¯্রােতের প্রতিকূলে সাঁতার কেটেও ঠিক গন্তব্য খুঁজে নিতে পারেন। তিনি রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে এই পর্যন্ত বহু চক্রান্ত, বহু বাধা-বিপত্তির মুখে পড়েছেন, কিন্তু কখনোই থেমে যাননি, কখনও হারও মানেননি। তিনি সারাজীবন বিএনপির রাজনীতিই করেছেন। কখনোই ‘রঙ বদল’ করেননি। আর এই সালাহউদ্দিন আহমদের কারণেই কক্সবাজার জেলায় বিএনপি তথা ধানের শীষের জোয়ার লেগেছে। তিনি কক্সবাজার জেলা বিএনপির দায়িত্বে থাকাকালীন সময় থেকেই এই অঞ্চলকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছেন। সালাহউদ্দিন আহমদ তাঁর নির্বাচনী এলাকা চকরিয়া-পেকুয়ায় নিজেকে অবিসংবাদিত ‘একক’ নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছেন। ওই অঞ্চলের মানুষ নিজেদের যা কিছু ভুলে যেতে পারেন, কিন্তু ওই এলাকার জন্য সালাহউদ্দিন আহমদের অবদান আমৃত্যু ভুলে যেতে পারবেন না।’

রাসেল তার আবেদনে বেগম খালেদা জিয়াকে স্মরণ করিয়ে দেন, ‘প্রিয় নেত্রী, ওয়ান-ইলেভেন সরকার আমলে বিএনপির দুঃসময়ে সালাহউদ্দিন আহমদ যখন ‘মিথ্যা মামলা’য় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন তখনকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনি তাঁর ‘নেহায়েত এক গৃহিনী’ সহধর্মিনী হাসিনা আহমদকে ধানের শীষের মনোনয়ন দিয়েছিলেন। হাসিনা আহমদ, যিনি কখনও রাজনীতির মাঠে হাঁটেননি, চকরিয়া-পেকুয়া অঞ্চলের মাঠ পর্যায়ের সাধারণ মানুষের সাথে যার কোন পরিচয় ছিল না, সেই অচেনা অজানা এক গৃহিনীই শুধুমাত্র স্বামী সালাহউদ্দিন আহমদের প্রতি চকরিয়া-পেকুয়াবাসির ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছিলেন। সেটি কেবল সম্ভব হয়েছিল এই অঞ্চলে সালাহউদ্দিন আহমদের গ্রহণযোগ্যতার কারণেই। এই গ্রহণযোগ্যতার মূল্যায়ন কী সালাহউদ্দিন আহমদ আপনার কাছ থেকে পেতে পারেন না?’

ছাত্রনেতা রাসেল বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মাননীয় নেত্রী, আপনি তো সবই জানেন। সালাহউদ্দিন আহমদকে আপনার চেয়ে বেশি কেউ জানে না। তিনি কতটা দলের প্রতি বিশ্বস্ত, কতটা আপনার প্রতি বিশ্বস্ত, আপনিই সবচেয়ে বেশি জানেন।’

রাসেল বলেন, ‘প্রিয় নেত্রী, আপনিই তো সালাহউদ্দিন আহমদকে আপনার প্রধানমন্ত্রীত্বকালিন সহকারি একান্ত সচিব করেছিলেন। তিনি সেই দায়িত্ব যোগ্যতা ও বিশ্বস্থতার সাথে পালন করেছিলেন বলেই তো আপনি তাঁকে রাজনীতির মাঠে নামিয়েছিলেন। তিনি আপনার সেই নির্ভরতার সম্মান কী রাখেননি! নিশ্চয়ই আপনার কাছে সালাহউদ্দিন আহমদ তাঁর যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন বলেই কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি থেকে তাঁকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবেও দায়িত্ব দিয়েছিলেন।’

রাশেদুল হক রাসেল মনে করেন, দলের আরেক নির্ভরতার প্রতীক, বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যখন গ্রেপ্তার হন তখন দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করার জন্য সবার আগে দায়িত্ব পান সালাহউদ্দিন আহমদ। শুধুমাত্র সালাহউদ্দিন আহমদ গ্রেপ্তার হলে কিংবা দেশের বাইরে থাকলেই কেবল অন্যদের সেই দায়িত্বের জন্য ভাবা হয়। এটি কী দলীয় চেয়ারপার্সনের নির্ভরতা ও বিশ্বস্থতার প্রমাণ নয়!

ছাত্রনেতা রাসেল তার আবেদনে সালাহউদ্দিন আহমদের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সংক্ষিপ্ত বিররণও তুলে ধরে বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সম্মানিত নেত্রী, আমরা শুধু কক্সবাজারবাসি নয়, পুরো দেশবাসি আপনার দিকে তাকিয়ে আছি। আপনার প্রিয় সহকর্মী সালাহউদ্দিন আহমদের সঠিক ও যোগ্য মূল্যায়ন করবেন আপনি। তারপরও আপনার প্রতি আমাদের আকুল আবেদন, আমাদের প্রিয় নেতা, কক্সবাজারবাসির গর্বের ধন, আপনার আস্থাভাজন সালাহউদ্দিন আহমদকে বিএনপির শীর্ষ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘জাতীয় স্থায়ী কমিটি’র সদস্য হিসেবে পদায়ন করে তাঁর যোগ্য মূল্যায়ন করবেন। এছাড়াও দলীয় চেয়ারপার্সন হিসেবে আপনার জন্য সৃষ্টি হওয়া নতুন পদ ‘চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক সচিব’ পদেও আমরা সালাহউদ্দিন আহমদকেই দেখার আশাবাদী।’

পাঠকের মতামত: