ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সাগরকন্যা ইনানী পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়

ওবাইদুল হক চৌধুরী, উখিয়া :: 

এবারের ঈদুল আযহার ছুটিতে কক্সবাজারের সাগর কন্যা খ্যাত ইনানীতে নেমেছে পর্যটকদের ঢল। দীর্ঘদিন পর প্রভাব পড়েছে হোটেল-মোটেলে গুলোতেও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্ষ খালি নেই ইনানীতে অবস্থিত তারকা মানের হোটেল সী-পার্লসহ প্রায় সব হোটেল-মোটেলগুলোতে। ভিড় লেগে রয়েছে সমুদ্র সৈকত, বিপনী কেন্দ্র ও রাস্তাঘাটে মানুষ আর যানবাহনে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ব্যবসায়ীদের যেন দম ফেরার ফুরসত নেই।

কক্সবাজারের কলাতলী থেকে উখিয়ার মনখালী পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়কের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হওয়ার সুবাধে পর্যটকেরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ইনানীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য। কক্সবাজার বীচ এলাকায় পাথুরের কোন স্তুপ না থাকায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট পাথুর স্তূপে দাঁড়িয়ে সমুদ্র দেখার জন্য পর্যটকদের আর্কষন বেশি ইনানীর দিকে। এ বীচের পাটুয়ারটেকে পাথরের স্তুপ দেখলে মনে হয় যেন সৃষ্টির সব সৌন্দর্য্যে স্রষ্টা এখানে ঘিরে রেখেছেন। একদিকে সাগরের গর্জন অপরদিকে অনাবিল সৌন্দর্য্য ভরপুর পাহাড়ের হাতছানি সবাইকে বিমোহিত করে তোলে। পাটুয়ারটেকের সামান্য অদুরেই রয়েছে প্রাচীনকালের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন কানা রাজার সুড়ঙ্গ, চিংড়ির পোনা উৎপাদনের হ্যাচারি জোন ও সুপারি বাগান ঘুরে দেখছেন।

দেখা গেছে, শত শত পর্যটক বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে কক্সবাজার থেকে ইনানী ভ্রমণে যাচ্ছেন। পথে বড়ছড়া পাহাড়ি ঝরনা, দরিয়ানগর পর্যটনকেন্দ্র, হিমছড়ি ঝরনা ও পাহাড়রচূড়ার বিনোদনকেন্দ্রেও ঢুঁ মারছেন অনেকে।

এছাড়া সাগরের পাশে রয়েছে, বিস্তীর্ণ ঝাউবিথি। এখানেই নানা প্রকার পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠে সৈকত অঙ্গন। বিস্তীর্ণ সৈকতের বালুচরে লাল কাকড়ার দৌঁড়াদৌঁড়ি পর্যটকদের বিশেষ আনন্দ দিয়ে থাকে। পাশাপাশি স্থানীয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক ঝাউগাছ নিধন অব্যাহত থাকার ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে উপকূলের জীবন ধারা। তারপরও এখানে নিয়মিত পর্যটকেরা আসা-যাওয়া করছে।
এবারের ঈদুল আযহার ছুটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা দলে দলে বেড়াতে এসেছেন পর্যটন কন্যা ইনানীতে। মূলত ঈদের দিন গরু ও রান্না নিয়ে ব্যস্ত থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে নেমেছে পর্যটকদের ঢল। তাছাড়া শুত্রুবার ও শনিবার ছুটির দিন থাকায় ইনানীতে কোন হোটেলের কক্ষ খালি নেই বলে জানান, ইনানী প্যাবেল স্টোন হোটেলের ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান । এসব পর্যটকের আনাগোনায় ইনানী সৈকত ছাড়াও হিমছড়ি ঝর্ণা, দরিয়ানগরসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতে দেখা দিয়েছে দারুণ প্রাণ চাঞ্চল্য।

শুক্রবার বিকালে সমুদ্র সৈকতে রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক দম্পতি আফজাল হোসেন ও নাফিজা আক্তার জানান, সকালে কক্সবাজার পৌছে, এরপর তারা হিমছড়িসহ কয়েকটি পর্যটন স্পট ভ্রমণ করে ইনানী সৈকতে এসেছেন।
এই হালকা গরমের কারণে কক্সবাজার ভ্রমণ তাদের কাছে বেশ উপভোগ্য মনে হচ্ছে। কিন্তু সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করছে না বলে প্রবাল দ্বীপে বেড়ানোর আশা এবার পূরণ হচ্ছে না।

ইনানী সৈকতের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঈদের দিন থেকে ইনানী পর্যটন স্পটে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ঈদের দিন কক্সবাজার অঞ্চলের লোকজন এবং পরদিন থেকে দেশের অন্যান্য এলাকার পর্যটকরা ইনানীতে ভিড় করছেন।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের জানান, পুুুলিশের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সমুদ্র সৈকতসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যটকদের এই ভিড়ের মাঝেও এখন পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।

পাঠকের মতামত: