ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সরকারি কোন অনুমোদন ছাড়াই চলছে পেকুয়ার ২টি প্রাইভেট হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: পেকুয়া উপজেলায় ৩ বছর ধরে চালু থাকা ২ টি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়মিত ডাক্তারের চেম্বার,অপারেশন,রোগ পরীক্ষা থেকে শুরু করে যাবতিয় কার্যক্রম চালিয়ে বিপুল টাকা আয় করলেও খোঁজ নিয়ে জানা এখনো পর্যন্ত সরকারের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই চলছে এই হাসপাতাল দুটি। ২০১৭ সালে চালু হওয়া পেকুয়া চৌমুহনীতে অবস্থিত জেনারেল হাসপাতাল ও লাইফ কেয়ার হাসপাতাল দুটি সরকারের কোন প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এক দিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিভাগের অনুমতি ছাড়া দিব্বি হাসপাতাল ব্যবসা করে আয় করছে কোটি টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পেকুয়া উপজেলার আধুনীক মানের ৩ টি প্রাইভেট হাসপাতালের মধ্যে ২টির কোন অনুমোদন নাই। সে গুলো হলো পেকুয়া জেনারেল হাসপাতাল এবং লাইফ কেয়ার হাসপাতাল। এছাড়া নুর হাসপাতাল নামের প্রাইভেট হাসপাতালের লাইসেন্স থাকলে মেয়াদোর্ত্তীন হয়েছে ৩ বছর আগে। তবে বাকি দুই হাসপাতালের কোন লাইসেন্স বা প্রাথমিক অনুমোদনও নাই। তবুও আইনের কোন তোয়াক্কা না করে প্রতি নিয়ত অসংখ্য ডাক্তারের চেম্বার বসে এখানে,হয় অপারশেন,ভর্তি থাকে রোগি,হয় ল্যাব টেস্ট সহ সব কিছু। আর প্রত্যান্ত অঞ্চলে হওয়াতে স্বাভাবিকের চেয়ে চিকিৎসাখাতে বেশি খরচ হচ্ছে বলে জানান ভূক্তভোগীরা। মোবাইল ফোনে পেকুয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক প্রসুতি রোগির অভিভাবক জানান, এখানে কোন ডেলিভারীরোগির সিজার হলে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। আমার সামান্য কোন অস্স্থু হয়ে ভর্তি হলে ২ দিন পরে ১০/১২ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেয়। তবে এসব হাসপাতালের যে অনুমোদন নাই সেটা আমরা জানিনা এখন জানতে পারলাম।

এদিকে পেকুয়া উপজেলার বেশ কয়েকজন সচেতন মহল জানান, পেকুয়াতে যে কয়েকটি প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক আছে তার মধ্যে জেনারেল হাসপাতাল এবং লাইফ কেয়ার অন্যতম। ২০১৭ সাল থেকে এই প্রাইভেট হাসপাতাল গুলো এখনে বিপুল টাকার ব্যবসা করে আসছে তবে তাদের অনুমোদন বা লাইসেন্স নাই এটা জানতে পেরে আমি হতবাক।কারন এতবড় প্রতিষ্টান প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে কেউকি তাদের কাগজ পত্র দেখেনি। তাদের দাবী এসব প্রাইভেট ক্লিনিকের কারনে পেকুয়া সরকারি হাসপাতালে গেলে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। বেশি প্রেসার হলেও কৌশলে প্রাইভেট হাসপাতালে পাঠানো হয়। ডাক্তারদের সরকারি অফিস সময়ে প্রাইভেট চেম্বারে পাওয়া যায়। সরকারি হাসপাতালে গেলে যে ডাক্তার রোগির গায়ে হাত দিয়ে দেখা না ভাল করে কথাও বলেনা সেই একই ডাক্তার প্রাইভেট চেম্বারে গেলে যন্তসহকারে দেখে এবং ভাল ব্যবহার করে।

আর পেকুয়া হাসপাতালে বড় কোন অপারেশন কেউ করিয়ে সুফল পেয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে না। তাদের দাবী মানুষকে অনেকটা জিম্মি করে ফেলেছে এই প্রাইভেট ক্লিনিক গুলো। এদিকে পেকুয়া জেনারেল হাসপাতাল এবং লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ল্যাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রোগিদের টেস্ট করিয়ে ডাক্তারের স্বাক্ষর দিয়ে রিপোর্ট দেওয়া হলেও তা বাস্তবে করে ল্যাবে কর্মরত কর্মচারীরা। নিয়মিত কোন ডাক্তার এখানে নেই। আর ল্যাবে কাজ করা কর্মচারীদেরও বেশির ভাগের শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই তারা বেশির ভাগই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কাজ করছে। এছাড়া এখানে থাকা ফার্মেসী গুলোর কোন অনুমোদন নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যপারে পেকুয়া জেনারেল হাসপাতালের এমডি কামরান জাদীদ মুকুটের নাম্বারে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি। তবে লাইফ কেয়ারের এমডি দিদার বলেন,আমরা ২০১৭ সালে লাইসেন্স করার জন্য অনলাইনে কাগজ পত্র জমা দিয়েছিলাম। সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে হাসপাতাল পরিদর্শনে আসার কথা কিন্তু আজ পর্যন্ত আসেনি। তাই আমরা স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

এ ব্যপারে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন,৩ বছর আগে আবেদন করেছে সেই কথা এখন বল্লেকি হবে ? পরিদর্শনের অযুহাতে জেলার অনেকে লাইসেন্স ছাড়াই প্রাইভেট হাসপাতাল চালু রেখেছে এটা আইন সম্মত নয়। তবে করোনা বর্তমান করোনা পরিস্থিতি এর আগে রোহিঙ্গা সংকটের কারনে আবেদন করা প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোর পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি এটাও সত্য। তবে এখন খুব দ্রæত সবার পরিদর্শন রিপোর্ট শেষ করা হবে।

পাঠকের মতামত: