ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

রামুতে কবুতরের খামার করে সফলতা অর্জন করেছে মোহাম্মদ হাসেম

kobuগোলাম মওলা রামু :::

কবুতর পালনে বাংলাদেশে অনেক সাধারণ মানুষ কোটি টাকার মালিক হয়েছে।তবে কক্সবাজারে কবুতরের খামার তেমন চোখে পড়ে না।কিছু সৌখিন কবুতর প্রেমীরা খামারের মত করেও তেমন বেশী লাভের মূখ দেখেনি।রামুর ফতেখারলকুল ইউনিয়নের দক্ষিণদ্বীপ এর মোহাম্মদ হাসেম কবুতরের খামার করে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতেছে। মোহাম্মদ হাসেম চারশ জোড়ার মত দেশী বিদেশী কবুতর খামারের পাশে মূরগীর খামার গড়ে তুলেছেন ।মূরগীর খামারে জন্য যে খাদ্য ও ঔষধ ব্যবহার করে এতে কবুতরের সব ব্যবস্থা হয়ে যায়। মূরগীর টিকা দেওয়ার সময় কবুতর দের ও টিকা দেওয়া হয়।মূরগীর ঔষধের পানি দিয়ে কবুতরের পানির ব্যবস্থা করা হয়। যার কারণে বিভিন্ন রোগ থেকে কবুতর নিরাপদ থাকে।খামারের মত করে কবুতর পালন করা একদম সহজ কাজ । তেমন বেশী টাকা পুজিও লাগেনা অল্প খরচে কবুতর পালন করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব।লেখা পড়া,ক্ষেত ,মূরগী,ছাগল, গরুর পালনের সাথে সাথে কবুতর পালন অতি সহজ কাজ।মোহাম্মদ হাসেম জানান,দেশের বেকার যুব সমাজ কবুতর পালনে অগিয়ে আসলে অল্প পুজিতে বেশী টাকা উপার্জন করা সম্ভব।আমি প্রতি বছর কবুতরের জন্য দু-শত আড়িঁ মোটা ধান মজুদ করে রাখি।আমাদের দেশীয় কবুতর মোটা ধান খেলে স্ব্যাস্থ ভাল থাকে আর রোগ মুক্ত থাকে।মোহাম্মদ হাসেম কবুতর পালনে এলাকার বেকার যুবকদের ছোট ছোট খামার করার পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে সব সময়।কবুতর পালন করে বাংলাদেশে বদলে দিয়েছে অনেকের জীবন তার মধ্যে রয়েছে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারমথুরাপুর গ্রামের বাদশা আহমেদ দুদুমিয়া।বিভিন্ন

পত্র পত্রিকা ও অনলাইলে সংবাদ সূত্রে জানাগেছে ,‘দুদু মিয়া কবুতর পালন করে কয়েক বছরের ব্যবধানে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করেছেন। সাত বছর আগে তিন জোড়া কবুতর নিয়ে তিনি বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে তোলেন কবুতরের খামার। এ খামারের আয় থেকে ক্রয় করেছেন জমি,গড়ে তুলেছেন পাকা বাড়ি ও ছাগলের খামার। বর্তমানে দুদু মিয়ার সম্পদের পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা। দুদু মিয়া এখন দেশের বেকার যুবকদের অনুকরণীয়। প্রতিদিনই দেশের দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে পারমথুরাপুর গ্রামে দুদু মিয়ার কবুতরের খামার দেখতে। তার খামারে রয়েছে বিদেশি ও বিলুপ্ত প্রজাতির চার শতাধিক কবুতর। ময়ূরী ও সিরাজি জাতের তিন জোড়া কবুতর দিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে কবুতর পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে ৪০ প্রজাতি বিদেশি কবুতর রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ হাজার টাকা জোড়া মূল্যের আফ্রিকার কেরিয়ার হুমার ও ১০ হাজার টাকা মূল্যের মডেনাও আছে। ৩০ হাজার টাকা মূল্যের হল্যাল্ডের লাল, কালো ও হলুদ কোটারবল, ১০ হাজার টাকা মূল্যের বুন্টু কিং ম্যাগপাই ও আওল এবং ৬ হাজার টাকা মূল্যের বিউটি হুমার। আছে ৬ থেকে ২০ হাজার টাকা মূল্যের পাকিস্তনি বন্টু সিরাজি, কালো কিং,লাল কিং, হলুদ কিং, হোয়াইট কিং, সাটিং, শ্যালো নান পারভিন, সিংহ ও হাইপিলার। ৬ হাজার টাকা মূল্যের অস্ট্রেলিয়ার কিং। ২ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় বোম্বাই ও লোটন এবং দেশি সোয়াচন্দন জাতসহ বিলুপ্ত প্রজাতির ৪ শতাধিক বিদেশি কবুতর রয়েছে। বিদেশি জাতের এসব কবুতর দেশের বিভিন জেলা থেকে সংগ্রহ করেছে। বর্তমানে তার খামারে উৎপাদিত বিদেশি জাতের কবুতরের বাচ্চা দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারদের কাছে ১ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা জোড়ায় বিক্রি করেন। ২০ হাজার টাকা খরচ করে এক জোড়া বিদেশি কবুতর পুষলে বছরে সব খরচ বাদ দিয়ে ৩০ হাজার টাকা লাভ থাকে। তিনি বলেন, বছরে এক জোড়া কবুতর কমপক্ষে চার জোড়া বাচ্চা দেয়। প্রতি জোড়া বাচ্চার দাম ১০ হাজার টাকা। কবুতরের খাবার বাবত এক বছরে খরচ হয় ১৫ শ’ থেকে ২ হাজার টাকা। অন্যান্য খরচ ৪ হাজার টাকার মতো। এ হিসাবে খরচ বাদ দিয়ে ২০ হাজার টাকার এক জোড়া কবুতরে ৩০ হাজার টাকার ওপর লাভ থাকে। এভাবেই ৭ বছরে দুদু মিয়া কবুতরের খামারে উৎপাদিত বাচ্চা ও কবুতর বিক্রি করে আর্থিক পরিবর্তন আনতে পেরেছে। এছাড়াও দুদু মিয়ার রয়েছে ৪০টি ছাগল, দুটি গরু ও শতাধিক মুরগী। সব মিলিয়ে দুদু মিয়ার সম্পদের পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা। শুরুর কথা

দুদু মিয়া অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে পিতার আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারেননি। অভাবের সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা আনার আশায় দুদু মিয়া অষ্টম শ্রেণী পাস করে কাঁধে তুলে নেন লাঙল আর জোয়াল। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তিনি শুরু করেন কৃষিকাজ। কিন্তু কৃষি কাজে সফলতা না আসায় শুরু করেন মুরগী কেনাবেচার ব্যবসা। নিজ এলাকার বিভিন্ন বাড়ি থেকে মুরগী কিনে এনে তিনি ঝিনাইদহ শহরে বিক্রি শুরু করেন। এ ব্যবসায়

কিছুটা সফলতা আসায় তিনি আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে মুরগী কিনে এনে ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় সরবরাহ করতে থাকেন। মুরগীর ব্যবসার এক পর্যায়ে তার গ্রামের রিকশাচালক আইয়ুব মিয়ার কাছে জানতে পারেন কুষ্টিয়ার জেলখানা রোডের নাজমুল হোসেনের কাছে কিছু বিদেশি প্রজাতির কবুতর আছে। এই খবরে কুষ্টিয়ায় গিয়ে নাজমুলের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা দিয়ে তিন জোড়া কবুতর কিনে আনেন। এ সময় তিনি জানতে পারেন নাজমুল হোসেন শৌখিনতার কারণে বিদেশি কবুতর পোষেন। মূলত নাজমুল হোসেনের কবুতর পোষা দেখেই দুদু মিয়ার কবুতর পালনের প্রতি আগ্রহ জন্মে এবং তিনি বাণিজ্যিক ভাবে কবুতর পালনের পরিকল্পনা নেন। ভবিষ্যৎ স্বপ্ন এক ছেলে হৃদয় এবং দুই মেয়ে স্মৃতি ও মহিমাকে নিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার দুদু মিয়ার।তিনি তার এলাকায় বেকার তরুণদের ছোট ছোট কবুতরের খামার গড়ে দিচ্ছেন। তরুণেরা যেন বেকার না থেকে অল্প পুঁজি নিয়েই উদ্যোগ গ্রহণ করে এটাই তরুণদের প্রতি তার পরামর্শ। একজন সফল কবুতর উৎপাদনকারী হিসেবে দুদু মিয়া ২০০৮ সালে ও ২০১৩ সালে ঝিনাইদহের শ্রেষ্ঠ কবুতর উৎপাদক হিসেবে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে টাকা ও সনদ অর্জন করেছেন।দুদু মিয়ার মত সফল ব্যবসায়ীর ঘটনা বর্ননা করে আমার আসল উদ্দেশ্য হলো কবুতর পালনের এই সাফল্য দেশের সকল বেকার যুবকদের কাছে সু-খবর হতে পারে। তার দেখাদেখি বেকার যুবকরা যদি কবুতর পালন পেশায় এগিয়ে আসেন, তাহলে তারা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখতে পারবে। কবুতর পালনে এগিয়ে আসার জন্য আমি যতটুকু পারি এলাকার বেকার যুবকদের বুদ্ধি ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা চেষ্টা করব। আগামীতে খামার স্থাপন রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতা এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে লিখার চেষ্টা করব।

পাঠকের মতামত: