ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

রামুতে আ’লীগের ভরাডুবি বিদ্রোহীদের জয়জয়কার

14-300x168সোয়েব সাঈদ : 1
রামুতে পঞ্চম ধাপে ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী ও বিএনপির কাছে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা। প্রচার-প্রচারনা ও প্রতিশ্রুতি দিয়েও ভোটারদের মন জয় করতে পারেননি আওয়ামীলীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। এবারের দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে দল মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েও পঞ্চম ধাপের এ নির্বাচনে রামু উপজেলার চার ইউনিয়নেই আধিপত্য ধরে রেখেছে আওয়ামীলীগ দলের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের দ্বন্দের কারণে আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী বিদ্রোহী হয়ে দলের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয়। দলীয় বিদ্রোহী দমনে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা ব্যর্থ হওয়ায় যোগ্য নেতা নির্বাচনের অভাবে রামুতে নৌকা প্রতীকের ভরাডুবি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিরা। আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক দ্বন্দকে পুঁজি করে নির্বাচনী প্রচারনায় জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেও একটি ইউনিয়নে নির্বাচিত হয়ে নিজেদের মান রক্ষা করেছে বিএনপি। প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তায় সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে গতকাল শনিবার (২৮ মে) সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোট কেন্দ্রের বাইরে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও তা ভোটারদের মাঝে কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় রামু উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নির্বাচনে ফলাফল ঘোষনা সম্পন্ন করেন ইউএনও সেলিনা কাজী।  আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ঈড়গড়ে ফিরোজ আহমদ ভূট্টো, কাউয়ারখোপে মোস্তাক আহাম্মদ, রশিদনগরে এম ডি শাহ আলম, গর্জনিয়ায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও কচ্ছপিয়ায় বিএনপির আবু মোহাম্মদ ইসমাঈল নোমান বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ঈড়গড় ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভূট্টো (আনারস) ৩০৬৪ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী বিএনপি’র প্রার্থী নুরুল আজিম ২৯৬৫ ভোট পেয়েছেন। এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঙ্গালী (নৌকা) ২০১৭ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াতে ইসলামীর দিদারুল ইসলাম (মটর সাইকেল) ১৯ ভোট পেয়েছেন। কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোস্তাক আহাম্মদ (ঘোড়া) ৪১৮২ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রার্থী বিএনপি’র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক (ধানের শীষ) ৩৫৪০ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী শফিউল আলম (নৌকা) ১৫৮৬ ভোট, এস এম আবদুল মালেক (মটর সাইকেল) ৭৪০ ভোট ও জামায়াতে ইসলামীর মো. হানিফ (আনারস) ৫৬৩ ভোট পেয়েছেন। রশিদনগর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী এম ডি শাহ আলম (আনারস) ২৪৫০ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম বিএনপি দলীয় প্রার্থী  বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল করিম পেয়েছেন (ধানের শীষ)  ১৮৫৫ ভোট। এ ইউনিয়নে বিএনপির বিদ্রোহীর প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম (ঘোড়া) ১৭৪৪ ভোট ও আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী বজল আহমদ বাবুল (নৌকা) ১৫৪৪ ভোট পেয়েছেন। কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে বিএনপি দলীয় প্রার্থী আবু মোহাম্মদ ইসমাঈল নোমান (ধানের শীষ)  ৩৯৮২ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাকের আহমদ (আনারস) ৩৯৫৬ ভোট পেয়েছেন। এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল আমিন কোম্পানী (নৌকা) ৩৪৭৭ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন।
গর্জনিয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম (আনারস)  ৩ হাজার ৯৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রার্থী বিএনপি দলীয় প্রার্থী গোলাম মওলা চৌধুরী (ধানের শীষ) ৩ হাজার ২৫৬ ভোট পেয়েছেন। এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী পেয়েছেন (নৌকা) ২ হাজার ১৮ ভোট পেয়েছেন।
২০১১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রামু উপজেলার এ পাঁচ ইউনিয়নের মধ্যে দুইটিতেই বিএনপি সর্মথিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছিল। এবারের নির্বাচনেও একধাপ পিছিয়ে একটিতে বিজয় নিশ্চিত করে বিএনপি। এ ইউপি নির্বাচনে ঈড়গড় ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঙ্গালী, কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী শফিউল আলম, কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের প্রার্থী নুরুল আমিন কোম্পানী ও গর্জনিয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী তৃতীয়, রশিদনগর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বজল আহমদ বাবুল চতুর্থ হয়েছেন।

 

পাঠকের মতামত: