বান্দরবান প্রতিনিধি :::
বান্দরবান জেলা শহরের একটি হোটেল থেকে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় চার পাহাড়ি শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুদের বিনা বেতনে পড়াশোনা করানোর প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে ধর্মান্তরিত করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
এ ঘটনায় দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর থেকে ধর্মান্তরিত বলে পুলিশ আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিক উল্লাহ বলেছেন, শিশুদের অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা শহরের একটি হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে তিন মেয়েশিশু ও এক ছেলে শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছেলে শিশুর বয়স নয় বছর। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির তিন মেয়ে শিশুর বয়স ১০ থেকে ১৩ বছর। হোটেল থেকে শিশুদেরসহ মংশৈপ্রু ত্রিপুরাকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু সুমন খেয়াং (৪০) নামের একজন পালিয়ে যান। মংশৈপ্রু ত্রিপুরা ধর্মান্তরিত হয়েছেন দাবি করে আবু বকর নামে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলা শহরের টাংকির পাহাড় থেকে মূল হোতা মোহাম্মদ হাসানকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। হাসানের বাড়ি দাউদকান্দি উপজেলার হরিপুর গোল্লাবাড়ি গ্রামে।
গ্রেপ্তার হওয়া মংশৈপ্রু ত্রিপুরা ওরফে আবু বকর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেছেন, মোহাম্মদ হাসানের কথায় তিনি শিশুদের রোয়াংছড়ি উপজেলার বেতছড়া, তারাছা ও বৈদ্যপাড়া থেকে নিয়ে এসেছেন। আর মোহাম্মদ হাসান বলেন, ঢাকার মীরপুরের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করানোর জন্য তিনি শিশু নিয়ে আসতে বলেছিলেন। তবে নিয়ে আসা চার শিশু পাহাড়ি ও অমুসলিম—সেটা তিনি জানতেন না।
শিশুদের অভিভাবক সা উ প্রু মারমা, হ্লা শৈ প্রু মারমা জানিয়েছেন, মংশৈপ্রু ত্রিপুরার ধর্মান্তরিত হওয়ার ব্যাপারে তাঁরা জানতেন না। এক হাজার টাকা নগদসহ পাঁচ হাজার টাকা দিলে সম্পূর্ণ বিনা বেতনে পড়াশোনা করানোর কথা বলে তিনি তাঁদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এসেছেন। কিন্তু জেলা শহরে এসে গতিবিধি ভালো মনে হয়নি। এ জন্য তাঁরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাদ্রাসায় ভর্তি করে ধর্মান্তরিত করার জন্য শিশুদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে শিশুদের প্রকৃতপক্ষে কোথায় এবং কী জন্য তাঁরা নিয়ে যাচ্ছিলেন।
পাঠকের মতামত: