নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়ায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বাচ্চা ফুটেছে মহাবিপদাপন্ন পাখি মদন টাকের ঘরে। ধবধবে সাদা এই বাচ্চাটিকে ঘিরে রেখেছে বাবা-মা। পার্কে আগত কোন দর্শনার্থী মদন টাকের বেস্টনীর কাছে গেলেই ঠোঁটের সাহায্যে আওয়াজ দিচ্ছে তারা। তবে সদ্যোজাত বাচ্চাটিকে যাতে বড় করে তোলা যায় সেজন্য পার্ক কর্তৃপক্ষ বেশ নজরদারিতে রেখেছেন মদন টাকের বেস্টনী।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠার পর ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বিপরীত লিঙ্গের একজোড়া মদন টাক আনা হয় এখানে। এরপর থেকে অনেকবার ডিম দেয় এবং বাচ্চা ফুটলেও তা বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। অবশেষে বাংলাদেশে সেই মহাবিপদাপন্ন ও বিরল প্রজাতির পাখি মদন টাকের ঘরে নতুন অতিথি হিসেবে ঠাঁই হয়েছে একটি ধবধবে বাচ্চার। বর্তমানে বাচ্চাটির ওজন প্রায় আড়াই কেজি।
সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, স্ত্রী ও পুরুষ মদন টাক ধবধবে বাচ্চাটিকে ঘিরে রেখেছে। যেভাবে বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বেস্টনী গড়ে তোলে। বেস্টনীর ধারে-কাছে কোনো মানুষ ঘেঁষলেই চিৎকার দিয়ে ঠোঁকর দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাবা মদন টাকের দুই ঠোঁটের ঠাক ঠাক আওয়াজ শুনতেও বেশ আকর্ষণীয় লাগে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, আর্ন্তজাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়ন (আইইউসিএন) কর্তৃক বাংলাদেশে মহাবিপদাপন্ন এবং লাল তালিকাভুক্ত বিরল প্রজাতির এই মদন টাক পাখি। সেই পাখির প্রজনন হওয়ায় আমরা বেশ খুশি। প্রায় একমাস আগে বাচ্চাটি ফুটলেও তা এতদিন গোপন রাখা হয়েছিল। কারণ বিরল প্রজাতির এই পাখিকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে ইতোমধ্যে বিপদাপন্ন সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আশা করছি মদন টাকের এই বাচ্চাটিকে বড় করে তোলা সম্ভব হবে। তবে আরো দুমাস পর শনাক্ত করা যাবে, বাচ্চাটি কোন লিঙ্গের।
চট্টগ্রাম বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা এবং বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, খবরটি বেশ আনন্দদায়ক। এই বাচ্চাটিকে বাঁচিয়ে এবং বড় করে তুলতে পার্কের সংশ্লিষ্টরা বেশ যত্ন-আত্তি করছে। আগামীতেও বিরল প্রজাতির এই পাখির প্রজননে যথাসাধ্য চেষ্টা থাকবে।
পাঠকের মতামত: