সোয়েব সাঈদ, রামু ::
মাঠ জুড়ে নানান প্রজাতির রঙ-বেরঙের ফুল আর শিক্ষার্থীদের তৈরী পিঠাপুলির প্রদর্শণী। মঞ্চে চলছিলো দেশীয় সংস্কৃতির আয়োজন। মেয়েরা খোঁপায় গাঁদা-পলাশসহ নানা রকম ফুলের মালা গুঁজে বাসন্তী রঙের শাড়ি আর ছেলেরা পাঞ্জাবি-পায়জামা ও ফতুয়ায় শাশ্বত সাজে ভাসছে উৎসবের হাওয়ায়। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন পহেলা ফাল্গুনে এভাবে প্রাণের উচ্ছ¡াসে মেতেছিলো রামু সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রæয়ারি) পহেলা ফাল্গুন ১৪২৯ বাংলা রামু সরকারি কলেজের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ব্যতিক্রমী এ বসন্ত উৎসবের। ‘নিবিড় অন্তরতর বসন্ত এলো প্রাণে’ এ শ্লোগানে আয়োজিত বসন্ত উৎসব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হারিয়ে দেয় দেশীয় ঐহিত্য আর সংস্কৃতির ছোঁয়ায়। কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রাণের এ আয়োজন। সকালে উৎসবের সূচনা করেন- রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুজিবুল আলম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা। তিনি বলেন- পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুস্থ বিনোদন আর দেশীয় সংস্কৃতি লালন করতে হবে। আমরা যতটা উৎসবগুলাকে মনে ধারন করে এগোতে পারব আমরা ততটাই সমৃদ্ধ হব। এ ধরনের আয়োজন কলেজ কর্তৃপক্ষকে ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- কক্সবাজার বিতর্ক ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাণ পাল, রামু প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোয়েব সাঈদ, সাংবাদিক আবুল কাশেম সাগর ও কফিল উদ্দিন। এছাড়া কলেজের শিক্ষকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উৎসব মঞ্চে কলেজের শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। এতে গান পরিবেশন করেন- রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন- কলেজের শিক্ষক, কন্ঠশিল্পী মানসী বড়ুয়া। এছাড়া কক্সবাজার এর জনপ্রিয় ব্যান্ড আবছার হাব ও তার দলের পরিবেশিত ঐতিহ্যবাহি গান ও নৃত্য উৎসবে নতুন মাত্রা এনে দেয়।
রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুজিবুল আলম বলেন- বাঙালি সংস্কৃতির সাথে ছাত্র ছাত্রীদের পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং এধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অভ্যস্ত করাতে এ উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। একাডেমিক কার্যক্রমের উন্নয়নে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নই এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য।
উৎসবের অন্যতম সমন্বয়ক শিক্ষক ইজত উল্লাহ বলেন- কক্সবাজারে বসন্ত বরণের ইতিহাসে এ আয়োজনটি অন্যতম সংযোজন। এ উৎসব সাংস্কৃতিক পরিবেশকে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলবে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে। রামু কলেজের শিক্ষক, কন্ঠশিল্পী মানসী বড়–য়া বলেন- কলেজ কয়েক হাজার শিক্ষার্থী একসাথে সমবেত জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যদিয়ে শুভসূচনা উৎসবের সূচনা করা হয়েছে। বাসন্তী রঙের পোষাকে বর্ণিল সাজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পুরো আয়োজনে অংশ নিয়েছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বৈচিত্র্যময় ও নানাস্বাদের পিঠা পুলির স্বাদ পেয়েছে উৎসবে আগতরা। ছিলো পুস্প প্রদর্শনীও।
জানা গেছে- ছাত্র ছাত্রীরা বাহারি ফুলের তোড়া নিয়ে প্রবেশ করে কলেজ ক্যাম্পসে। সুন্দর ফুলের তোড়া আনায় শিক্ষার্থীদের পুরষ্কৃত করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রথমবারের মতো কলেজ ক্যাম্পাসে এ ধরনের ব্যতিক্রমী উৎসব আয়োজন করায় কলেজ অধ্যক্ষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
পাঠকের মতামত: