ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

‘প্রাচীন সড়ক রক্ষায় রেলপথে আন্ডারপাস নির্মাণে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাবো’ -রামুতে এমপি কমল

সোয়েব সাঈদ, রামু ::
নির্মাণাধীন রেলওয়ে সড়কের কারণে রামু লম্বরীপাড়া থেকে সিপাহীর পাড়া হয়ে চৌমুহনীর সাথে সংযুক্ত সড়ক অচল হয়ে পড়ায় আন্ডারপাস নির্মাণের দাবিতে আবারো মানববন্ধন করেছে বৃহত্তর রামু লম্বরীপাড়াবাসী। সোমবার (১৬ মে) বেলা ১১ টায় রেলওয়ে সড়কের লম্বরীপাড়া অংশে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন, কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাঁও আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল। এসময় তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানববন্ধনে অংশ নেয়া জনসাধারণের ন্যায্য এ দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করে বলেন, সরকার জনকল্যাণের জন্যই রেলপথ নির্মাণ করছে। এই রেলপথ নির্মাণ করতে গিয়ে যেন কোনভাবেই জনদূর্ভোগ সৃষ্টি না হয় তাও গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি আন্ডারপাস নির্মাণের মাধ্যমে শত বছরের প্রাচীন এ সড়কটি সচল করার স্বার্থে হাজার হাজার ভুক্তভোগীদের প্রাণের দাবি বাস্তবায়নে ঐকান্তিক প্রয়াস চালিয়ে যাবেন বলে দৃঢ় আশ্বাস দেন।
সড়ক বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হাজী নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে, লম্বরীপাড়া আলোর দিশারী যুবপরিষদের সভাপতি ও দারুল কুরআন নূরানী একাডেমীর পরিচালক হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে এলাকাবাসীর যৌক্তিক দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন, রামু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো, ফতেখাঁরকুল ইউপি সদস্য দিদারুল আলম, চাকমারকুল ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন।
এতে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন, এলাকার প্রবীণ আলেমেদ্বীন মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, ফতেখাঁরকুল ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মামুনুর রশিদ, লম্বরীপাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব দিদারুল আলম, শ্রমীকলীগ নেতা নুরুল আবছার বাহাদুর। এছাড়াও মানববন্ধনে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহজাহান কোম্পানী, তরুণ শিক্ষানুরাগী নজরুল ইসলাম, সমাজকর্মী আলাউদ্দিন, ফরিদুল আলম, হারুনুর রশিদ, রাশেদুল ইসলাম আনছারী, ছাত্রলীগ নেতা ইমরানুল হক রিদওয়ানসহ এলাকার সর্বস্তরের অসংখ্য বিক্ষুব্ধ জনতা অংশ নেন।
বিশাল এ মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী নিজেদের প্রাণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মাননীয় সংসদ সদস্য বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, এ সড়ক দিয়ে বৃহত্তর রামু লম্বরীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ ও শতশত ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াত করে আসছেন শত শত বছর ধরে। সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে বহুদিনের দূর্ভোগের অবসানে, জনদাবির বাস্তবায়নে এতদঞ্চলের মাটি ও মানুষের প্রিয়জন, বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমলের ঐকান্তিক প্রয়াসে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে স্বেচ্ছাশ্রমে সম্প্রসারিতরূপে সড়কটি পূনঃনির্মিত হয়। তাই এলাকাবাসী নিজেরাই সড়কটিকে “সাইমুম সরওয়ার কমল সড়ক” হিসেবে নামকরণ করেন।
কিন্তু দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি সচল রাখার স্বার্থে আন্ডারপাস নির্মাণের অনিবার্য প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ অব্যাহত রাখায় সুফল পেয়ে উঠার আগেই সড়কটি সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়ে। ফলে নিত্যনৈমিত্তিক যাতায়াতকারীদের দূর্ভোগ তো বাড়ছেই; সেই সাথে রেলওয়ের জমি অধিগ্রহণের ফলে ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়ে সড়কটির উভয় পাশে নতুন বসতি গড়ে তোলা পরিবারসমূহসহ অসংখ্য পরিবারের শিশু সন্তানদের প্রাথমিক বিদ্যালয়, মক্তব, মাদ্রাসায় যাতায়াতও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তা-ই নয়; নির্মাণাধীন রেলপথের কারণে পানি সেচের স্কীম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রেলওয়ে সড়কের পশ্চিম পাশের শতশত একর জমিতে তিন বছর ধরে কোন চাষাবাদই সম্ভবপর হচ্ছে না। আর পূর্বপাশে চাষাবাদ করা কৃষকদেরও রেলওয়ের বিশাল সড়ক পেরিয়ে ফসল বহন করে আনা, যাতায়াত করা চরম কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ নিয়ে পুরো এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ ও চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এমতাবস্থায় এলাকাবাসী গত ২২ সেপ্টেম্বর মাননীয় রেলমন্ত্রী ও এমপি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি যথাযথভাবে সচল করার স্বার্থে আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি জানালেও এখনো তার কোন সুফল মিলেনি। তাই বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আন্ডারপাস নির্মাণ করে সড়কটি সচল করার দাবিতে মাঠে নেমেছেন।
তারা এ বিষয়ে মাননীয় রেলমন্ত্রী ও এমপি মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে আমরা স্বাগত জানাই। রেলপথ নির্মাণে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। তবে রেলপথ যেমন জনস্বার্থে নির্মিত হচ্ছে তেমনিভাবে জনস্বার্থে সাধারণ সড়কও যেন সচল রাখা হয় সে ব্যাপারেই আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি ।
এ ন্যায্য দাবি আদায় না হলে ভুক্তভোগী জনসাধারণকে সাথে নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারী দেন তারা। তারা বলেন, আমরা আশাবাদী জনবান্ধব সরকার জনকল্যাণেই সড়কটিতে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ করে জনচলাচলের নাগরিক সুবিধা সুনিশ্চিত করবে।

পাঠকের মতামত: