ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবহণ ভোগান্তি এড়াতে নিজেই যাতায়াত ব্যাবস্ত করে দিচ্ছেন থানার এক এসআই।

FB_IMG_1485274851086এইচ এম রিয়াজঃ পেকুয়া 
কক্সবাজার জেলায় পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নেই পেকুয়া চৌমুহনীর অবস্থান। ফলে, সেই সুবাধে উপজেলার প্রায় সকল ঐতিহ্যবাহী এবং গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান এর আশেপাশেই। যার মধ্যে রয়ছে, দুটি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, একটি আলিম মাদ্রাসা, একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলসহ আরো ছয়টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অবস্থান এখানেই। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে অন্তত দুই হাজার এর বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়মিত চৌমুহনী থেকে বিভিন্ন পরিবহণ যোগে নিজ গন্তব্যে ফিরতে হয়। উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা যানবাহন নিয়ে বিপাকে পড়ে নিয়মিত। অধিক সংখ্যক এই শিক্ষার্থীকে আরোহণে ‘চাপ’ মনে করেন পরিবহণ শ্রমিকরা। কারণ এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পূর্ণ ভাড়া আদায় করতে পারেন না বলেই তাদের পরিবহণে অনিহা সংশ্লিষ্টদের। এমন পরিস্থিতিতে রীতিমত যুদ্ধ করে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে থাকে ওইসব শিক্ষার্থীরা। কখনো কখনো গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া, উঠতে না দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এমনকি যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকদের হাতে গাড়িতে যাত্রীর ভীড়ে স্কুল কলেজের ছাত্রীদের যৌন হয়রানির মতো ঘটনাও কিন্তু বিরল নয়। তারপরে সেই সোনার হরিণ ‘গাড়ি’র আশায় চৌমুহনী ষ্টেশনের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকেন ঘরে ফিরতে নিরুপায় শিক্ষার্থীরা। এমন যখন পরিস্থিতি, সমাজের সবাই তখন নির্বিকার! এদৃশ্য পথ চলতে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের চোখে পড়লেও নজর কাড়েনি কারো। কিন্তু মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি ১৭) দুপুরে চৌমুহনী চত্বরে দেখা মিললো এক বিরল চিত্র। একজন মানুষ শিক্ষার্থীদের গাড়িতে তুলে দিচ্ছেন পরম মমতায়। আগ্রহী না হলেও একপ্রকার বাধ্য গাড়ি চালকরা। কিন্তু কে সেই ব্যাক্তি? তিনি হলেন পেকুয়া থানার এসআই তৌহিদুল ইসলাম। তিনিই গাড়ির ড্রাইভারদের বাধ্য করছেন শিক্ষার্থীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে। জানাগেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে নিজ উদ্যোগেই একাজ করে যাচ্ছেন এমন উদার মানসিকতার এই মানুষটি। স্বাভাবতই ঝামেলার চাকরি মনে করা হয় পুলিশের চাকরিকে। কিন্তু ভাল মানসিকতা থাকলে যে ভাল কাজ করা যায় তার বাস্তবিক উদাহরণ এসআই তৌহিদ। এদিকে, এমন একটি অসাধারণ কাজ করায় তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। এসময় সহজেই  গাড়িতে উঠতে পারা শিক্ষার্থীরা অনেকেই কৃতজ্ঞতার সুরে বলছেন ‘থ্যাঙ্ক ইউ আংকেল’। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মুখ থেকে পরম শ্রদ্ধায় বের হয়ে আসা এই তিনটি শব্দই ভরিয়ে দিবে যে কারো মন।

পাঠকের মতামত: