ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রাইভেট হসপিটাল, ২৪ ঘণ্টায় এক রোগীর চার রকমের রিপোর্ট!

এম.জুবাইদ, পেকুয়া ::

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ব্যাঙ’য়ের ছাতার মত গজিয়ে উঠা প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সুষ্ঠ তদারকির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে পেকুয়ায় এ অপকর্ম চলে আসলেও দৃশ্যত কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞাপন দিয়ে রোগীদের প্রলোভিত করছে হাসপাতাল গুলো। তাছাড়া নিজস্ব দালাল দিয়েও রোগী টানতে ব্যস্ত তারা। কিন্তু সেবার মান বরাবরই হতাশাজনক।

মোঃ আনোয়ার ইসলাম নামের এক রোগী বলেন, রোগাক্রান্ত হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমি জন্ডিস পরীক্ষার জন্য পেকুয়া জেনারেল হাসপাতালে যাই। সেখানে থেকে দেওয়া পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে হতবাক হই আমি। তার রিপোর্ট এসজিপিটি (ইউ/এল) ৪৬০, বিলুরুবিন ০.৮(এমজি/ডিএল)। এ রিপোর্ট দেখে আমি দ্রুত ছুটে যাই ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারও যথারীতি অবাক। তিনি পরামর্শ দিলেন অন্য ল্যাবে আরেকটি পরীক্ষা করানোর। গেলাম পেকুয়া লাইফ কেয়ার হসপিটালে। একই পরীক্ষায় তারা রিপোর্ট দিলেন ২০৩.৩। এই রিপোর্ট নিয়ে গেলাম পেকুয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু বরাবরই তাদের রিপোর্ট সঠিক দাবী করেন তারা।

তিনি আরো বলেন, ভুল-সঠিকের দ্বন্ধে পড়ে যাই আমি। দুই হাসপাতালের সপক্ষে তুলে ধরা যুক্তি শুনে আমি দিশেহারা। তখন সিদ্ধান্ত নিই, অন্য ল্যাব গুলোতেও পরীক্ষা করিয়ে দেখি। গেলাম পেকুয়া মেডিকেল সেন্টারে। তারা রিপোর্ট দিলো ২৭১.২১। এরপরে গেলাম নুর হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তারা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিলো ৪২। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চারটি ল্যাবের রিপোর্ট চার রকম। যা দেখে আমার চিকিৎসা খুবই হতবাক হলেন। তিনি আমার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে পূর্বের ওষুধ চালিয়ে যেতে বলেন। পেকুয়ার প্রাইভেট হসপিটাল গুলো আমার রোগের পরিমাণ নির্ণয় তো করতেই পারেনি। পাশাপাশি কেটে নিয়েছে আমার পকেট। আমার মত আরো অসংখ্য রোগী তাদের হাতে নিয়মিত হয়রানী হচ্ছে।

এব্যাপার পেকুয়া উপজেলা হাসপাতালের টিএইচএ (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মুজিবুর রহমান বলেন, লিভারের চারটি এনজাইম। রোগী যদি ক্যান্সার প্রতিরোধক ওষুধ সেবন না করে থাকেন তাহলে, এসজিপিটি এত বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক নয়। কারণ এসজিপিটি বাড়লে বিলিরুরিনও বাড়বে। তাই রিপোর্ট দেখে মনেহচ্ছে পেকুয়া জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দেয়া রিপোর্টটি সম্পূর্ণ ভুল। এছাড়াও ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্রে লিখা রোগীর শারীরিক অবস্থার বর্ণনা পড়ে অপর দুটি (পেকুয়া লাইফ কেয়ার ও পেকুয়া মেডিকেল সেন্টার) ল্যাবের রিপোর্টও ভুল বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম বলেন, ল্যাব টেকনোলজিস্টদের রিপোর্টে সাক্ষর করার নিয়ম নেই। আমি এ ব্যাপারে আইনগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।

#########

পেকুয়ায় দূবৃর্ত্তের হামলায় মাছ ব্যবসায়ী আহত

নিজস্ব প্রতিনিধি.পেকুয়া.

পেকুয়ায় দূবৃর্ত্তের হামলায় এক মাছ ব্যবসায়ী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টায় পেকুয়া আলহাজ¦ কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের পশ্চিম পাশে^ উপজেলা আ’লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় আলী হোসেন(৩৫) নামের পেকুয়া বাজারের এক মাছ ব্যবসায়ী আহত হয় সে বারবাকিয়া ইউনিয়নের বুধামাঝির ঘোনা এলাকার সামশুল আলমের পুত্র।

আহত আলী হোসেন জানান, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের ছোট ভাই ফোরকান কে তার মৎস্য প্রজেক্ট থেকে মাছ কেনার জন্য বিশ হাজার টাকা দিই। কিন্তু ফোরকান মাছ না দিয়ে অন্য ব্যবসায়ীকে বিক্রয় করে দেয়। উক্ত পাওনা টাকা অনেক দিন ধরে খুজলে আজ না হয় কাল দিবে বলে কালক্ষেপ্ন করে। ঘটনার দিন ফোরকানের কাছ থেকে পাওনা টাকার বিষয় নিয়ে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের কাছে বিচার দিতে উপজেলা আ’লীগের কার্যালয়ের সামনে গেলে খবর পেয়ে ফোরকানসহ তার সহযোগীরা তাকে হামলা করে। এতে সে আহত হয়। পরে স্থানীয়রা ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পেকুয়ার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে। সে আরো জানায়, আ’লীগের সেক্রেটারী আবুল কাশেমও তাকে মারধর করেছে।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত উপজেলা আ’লীগের সেক্রেটারী আবুল কাসেমের ছোট ভাই ফোরকানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন, আলী হোসেন নামে কোন ব্যবসায়ীকে আমি চিনি না এবং কোন ধরণের টাকার লেনদেনও করি নাই। আমি ঘটনার দিন আমার এক মেহমানকে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দাড়িয়ে কথা বলছিলাম হঠাৎ সে গিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা চাই এবং অকাথ্যভাষায় কথাবার্তা বলতে শুরু করে। লেনদেনের কোন ডকুমেন্ট দেখাতে বললে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মন্দ কথাবার্তা বলে। এতে বারন করলেও সে বলতে থাকে বিষয়টি বড় ভাই জানতে পারলে সে এসে দু জনকে সরিয়ে দেয় তখনও সে বড় ভাইয়ের সাথে খারাপ আচরণ করায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেমের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ওনার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল দিলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

#############

পেকুয়ায় আনন্দ শোভাযাত্রা

নিজস্ব প্রতিনিধি.পেকুয়া:

জাতিক জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ^ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করায় পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। ২৫ নভেম্বর সকাল ১০ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবুল করিমের নেতৃত্বে উপজেলা চত্বর থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে পেকুয়া বাজার পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে উপজেলা হলরুমে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠানে মিলিত হয়। এতে আনন্দ শোভাযাত্রার পাশাপাশি রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাষ্টার হানিফ চৌধুরীর পরিচালনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম, পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খাঁন, জেলা আ’লীগের সদস্য এস এম গিয়্সা উদ্দিন, উম্মে কুলছুম মিনু, উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহনেওয়াজ চৌধুরী বিটু, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান মুরাদ, পেকুয়া সদর হাসপাতালের ইউ এইচও ডা: মুজিবুর রহমান, উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ ওবাইদুল হক, বি এম আই কলেজের অধ্যক্ষ এ এম ফরিদুল ইসলাম, পেকুয়া জি এম সির প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিন, পেকুয়া থানার সেকেন্ড অফিসার বিপুল দেব, আ’লীগ নেতা জাহাঙ্গীর সত্তার, জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি নুরুল আবচার, কক্সবাজার জেলা স্বেচ্চাসেবকলীগের সদস্য এস এম শাহাদত, পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কফিল উদ্দিন বাহাদুরসহ আ’লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন স্কুলের ২ শতাধিক ছাত্রছাত্রী। এ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন নানা রঙ্গে সাজিয়ে সাজ সাজ রবে পরিণত করেছে উপজেলা চত্বর। বঙ্গবন্ধুর সেই ৭ই মার্চের ভাষণ সকাল থেকে প্রচার শুরু করেছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ মূলক নানা ধরণের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করেন এবং ছাত্রছাত্রীদেরকে সেই ভাষণ সম্পর্কে জ্ঞাত করার চেষ্টা করেন।

##########

পেকুয়ায় ভিকটিমের স্বামীকে হত্যার চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিনিধি.পেকুয়া

পেকুয়ার শীলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া এলাকায় সংগঠিত সংঘর্ষের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বাদি ও ভিকটিম হাসিনা বেগমের স্বামী নুরুল কবিরকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে আসামী পক্ষের লোকজন। যার মামলা নং সিআর ১১৮১/১৭। ওই মামলার ১নং আসামী আবুল হোছেন বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে। গতকাল সকাল ১১টায় নুরুল কবির বাড়িতে যাওয়ার পথে আবুল হোছনের পুত্র মোর্শেদ আলম, শাহেদ ও তাদের মা মামলার আসামী হালিমা বেগম তাকে পরিকল্পিতভাবে হামলার চেষ্টা চালায় বলে মামলার বাদি হাসিনা বেগম জানিয়েছেন।

নুরুল কবির জানিয়েছেন, বিগত ২১ সেপ্টেম্বর আবুল হোছন (বর্তমানে জেল হাজতে) এর নেতৃত্বে আমার স্ত্রী হাসিনা বেগমকে কুপিয়ে আহত করে। যার প্রেরিক্ষেতে আদালতে মামলা দায়ের করলে তা থানায় রুজু হয়। মামলা করায় ও আসামী আটক হয়ে জেল হাজতে যাওয়ায় তার সন্তান ও স্ত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল ১১টার দিকে জারুলবুনিয়া ষ্টেশন থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে গতিরোধ করে। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাকে প্রাণে হত্যার চেষ্টা চালায়। স্থানীয় কয়েক মহিলা এসে আমাকে উদ্ধার করলে প্রাণে রক্ষা পায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রওশন আরা ও সাবেকুন্নাহার জানান, সকালে নুরুল কবির বাড়িতে যাওয়ার পথে মোর্শেদসহ আরো কয়েকজন লোক তাকে আটক করে। ওই সময় তাকে মাঠিতে পেলে দিয়ে গলায় ধান কাটার কাচি দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে আমরা দ্রুত এসে তাকে উদ্ধার করি।

ইউপি সদস্য আহমদ ছবি বলেন, ঘটনা পরবর্তি বিষয়টি আমাকে নুরুল কবির ও স্থানীয়রা জানায়। তাদেরকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি

পাঠকের মতামত: