ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় বেহাল দশায় ফুলতলা-দক্ষিন মগনামা সড়ক

mail.google.comনাজিম উদ্দিন, পেকুয়া :::

পেকুয়ায় ফুলতলা-দক্ষিন মগনামা সড়কটি পরিনত হয়েছে বেহাল দশায়। মগনামা ইউনিয়নের মধ্যে গ্রামীন প্রধান সড়ক ফুলতলা-দক্ষিন মগনামা এ সড়কটি। জনগুরুত্বপুর্ন ওই সড়কটি অসংখ্য খানা-খন্দকে ভরপুর হয়েছে। এতে করে এ ইউনিয়নের বিপুল জনগোষ্টির যাতায়ত ব্যবস্থা এক প্রকার থেমে গেছে। গত কয়েক বছর ধরে সড়কটি মারাত্বক ঝুঁকিপুর্ন হয়েছে। অধিকাংশ স্থানে পরিনত হয়েছে কাচা সড়কে। বেহাল দশা হওয়ায় যান চলাচল এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। শুস্ক মৌসুমে কিছু কিছু যানবাহন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করলেও বৃষ্টি ও বর্ষা মৌসুমে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মারাত্বক খানা-খন্দক হওয়ায় কাদা ও পানিতে নিমজ্জিত থাকে সড়কটির বিপুল অংশ।

 উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ফুলতলা-দক্ষিন মগনামা সড়কটি এ ইউনিয়নের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম। উত্তর মগনামা ফুলতলা ষ্টেশন থেকে দক্ষিন মগনামা কালারপাড়া পর্যন্ত সড়কটি বিস্তৃত। প্রায় ৯কি.মি ওই সড়কটি বর্তমানে চলাচল অযোগ্য হয়ে গেছে। ১৯৯৮সালে সড়কটি ফুলতলা থেকে কালারপাড়া পর্যন্ত সংস্কারকাজ বাস্তবায়ন করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ওই সময় ব্রিক সলিং দ্বারা সংস্কারের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার যুগপৎ সাধন করে। ওই সময় থেকে সড়কটি এ ইউনিয়নের প্রধান সড়কে পরিনত হয়। মগনামা ইউনিয়নের দক্ষিন ও উত্তর অংশের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সাধিত হয় এসড়ক দ্ধারা।

 ২০০০সালে জাপান আর্ন্তজাতিক সহায়তা সংস্থা (জাইকা)এর অর্থ সহায়তায় ফুলতলা-দক্ষিন মগনামা সড়কের প্রায় ৩কি.মি পিচ সড়কে পরিনত করা হয়। ফুলতলা ষ্টেশন থেকে মিয়াজিপাড়া, আফজলিয়াপাড়া, মগনামা হাই স্কুল হয়ে সাতঘর পাড়া পর্যন্ত বিটুমিন দ্ধারা সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করে এলজিইডি। পরে ক্রমান্বয়ে ওই সড়কটি কাজিবাজার ও কাদেরবলি পাড়া পর্যন্ত পিচ দ্ধারা সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। এটি অতি প্রয়োজনীয় হওয়ায় মগনামা থেকে উৎপাদিত লবন, চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ পরিবহন হয়ে থাকে ওই সড়ক দিয়ে। বর্তমানে ৯কি.মিটারের মধ্যে প্রায় ৭কি.মি বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। অনেক পয়েন্টে পিচ ও ইট সড়ক থেকে উঠে গেছে। পরিনত হয়েছে কাচা সড়কে।

 ফুলতলা ষ্টেশন থেকে মুহুরীপাড়া পর্যন্ত দু’কি.মিটারে একাধিকবার পুনসংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্টান নি¤œমানের কাজ আদায় করায় ওই দু’কি.মিটারও পুর্বের অবস্থায় পতিত। মগনামা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কাজিবাজার পর্যন্ত দু’কি.মিটারে যান চলাচল অযোগ্য হয়েছে সড়কে। কাজিবাজার থেকে বেদেরবিল পাড়া পর্যন্ত এক কি.মি আরো করুন। বেদেরবিল পাড়া থেকে দক্ষিন মগনামা-কইড়াবাজার পর্যন্ত আড়াই কি.মিটারে গত দু’বছর আগে সড়কটির সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। অধিক প্রশস্থ ও টেকসই সড়কটি বাস্তবায়ন কাজ শেষ করতে এলজিইডি প্রায় আড়াই কি.মি সড়কটি পিচ দ্ধারা সংস্কার করতে বিপুল অংকের অর্থের যোগান দেয়। কংকর ও মেকাডমসহ এর প্রাথমিক কাজ শেষ করে। কিন্তু পিচ ঢালাই দেয়া হয়নি। বর্তমানে নির্মিত সড়কটি কালারপাড়া পয়েন্টে পানির তোড়ে প্রায় এক কি.মি বিধ্বস্থ হয়েছে।

 জানা গেছে দক্ষিন মগনামা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত ওই সড়ক দিয়ে এ ইউনিয়নের অন্তত ২০হাজার মানুষ নিয়মিত যাতায়ত করে। কালারপাড়া, শুদ্ধখালীপাড়া, কইড়াবাজার পাড়া, বেদেরবিল পাড়া, কাদেরবলি পাড়া, চান্দারপাড়া, পুর্বকুল, কোদাইল্যদিয়া, মরিচ্যাদিয়া, নাপিতারদিয়া, সাতঘরপাড়া, বোড়িংপাড়া, পশ্চিমকুল, মগঘোনা, সিকদারপাড়া, মুহুরীপাড়া, মিয়াজিপাড়া, আফজলিয়াপাড়া, মাঝিরপাড়াসহ এ ইউনিয়নের আরো অধিক গ্রামের প্রধান একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম এ সড়কটি। কাজি বাজারের ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন জানায় সড়কটির কারনে আমরা অবরুদ্ধ হয়েছি। এর নীতি বাচক প্রভাব পড়েছে দৈনন্দিন ব্যবসা বানিজ্যে। মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানায় পায়ে হেটেও যাওয়া যাচ্ছেনা এ সড়ক দিয়ে। শিক্ষার্থীরা দুর দুরান্ত থেকে বিদ্যালয়ে আসে। সড়কের বেহাল দশা হওয়ায় চরমদুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদেরও।

 মগনামা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মো.আলমগীর জানায় মগনামায় এ সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। কিন্তু সংস্কার অভাবে জনজীবন থেমে গেছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফায়সাল চৌধুরী জানায় মগনামার যোগাযোগ ব্যবস্থা থেমে গেছে। রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার বঞ্চিত থাকায় জনগনের আসা-যাওয়া থমকে গেছে। রোগিদের হাসপাতালে নেয়াও কঠিন হয়েছে।

সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি খাইরুল এনাম জানায় ২০০০সালে আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় এ সড়কটির দু’কি.মি পিচ দ্ধারা সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করি। কিন্তু নেতৃত্ব সংকটে গ্রামীন কাজগুলো থেমে গেছে মগনামায়। ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম জানান সড়কটি বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। ভারি যানবাহনের কারনে সড়কটির এ অবস্থা। আমি সড়কটি নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা দেখছি। তবে অধিক ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে। মালামাল পরিবহনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। এলজিইডি পেকুয়ার প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী জানিয়েছেন সড়কটির প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করা হয়েছে। এলজিইডির পক্ষ থেকে উপজেলার যেসব গুরুত্বপুর্ন সড়ক সংস্কার বিহীন রয়েছে সেগুলোর ইস্টিমিইড উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো আছে।

 উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন লবন পরিবহন করতে ব্যবসায়ীরা ২০-২৫টনের অধিক ট্রাক প্রবেশ করায় এ সড়ক দিয়ে। এলজিইডি সড়কগুলো ১০টনের অধিক মালামাল পরিবহন করা যায়না। অতিরিক্ত বোঝাই ও ট্রাক চলাচলের কারনে সড়কটি মারাত্বক ঝুকিপুর্ন হয়েছে। গত অর্থ বছরে আমি উপজেলা পরিষদ থেকে বরাদ্ধ দিয়ে কিছু অংশ সংস্কার করেছি।

পাঠকের মতামত: