ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় প্রতি মণ লবনের দাম ৬শত টাকা

soltশাখাওয়াত হোছাইন সূজন, পেকুয়া (কক্সবাজার) থেকে :::

পেকুয়ায় প্রতি মণ লবনের দাম ৬শত টাকা। সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়েছে মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত কাঁচা লবনের দাম। সরকার বিদেশ থেকে লবন আমদানি এতোদিন স্থগিত রাখায় কৃষক পর্যায়ে উৎপাদিত লবনের রেকর্ড দাম হয়েছে। গত এক সপ্তাহ আগে থেকে পেকুয়ায় লবনের দাম ৬শত টাকা হয়েছে। সে হিসেবে প্রতিকেজি কাঁচা লবনের দাম ১৫টাকা। এদিকে দিন দিন বেড়েই চলেছে লবনের দাম। মুল্য বৃদ্ধির ফলে পেকুয়াসহ পুরো কক্সবাজার জেলায় এর ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবনের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে উপকুলের লবন চাষীরা সবচেয়ে বেশি উৎফুল্ল। এর ইতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাব পড়েছে স্থানীয় অর্থনীতিতে। লবন এক সময় লোকসান পন্য ছিল। কয়েক বছর আগে লবনে একক লোকসান গুনছে চাষীরা। কিন্তু এর আমুল বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার বিদেশ থেকে লবন আমদানি বন্ধ রেখেছে। লবনের উৎপাদন নিশ্চিত ও চাহিদা মেটানোর জন্য দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়। এতে করে সরকার চাষীদের উৎপাদিত লবনের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করেছেন। সরকার ২০১০ সালে লবন নীতি ঘোষনা করে। লবন শিল্প প্রসারে গঠন করা হয় লবন বোর্ড। লবন এক সময় শিল্প পন্য ছিল। কিন্তু এর বিকাশ ঘটাতে সরকার ওই শিল্পকে কৃষি পন্য ঘোষনা করে। একই সময়ে ওই বছরে মাঠে উৎপাদিত লবনের প্রতিকেজির দাম নির্ধারন করে ৭টাকা। কিন্তু ওই বছর ৭ টাকার লবন বিক্রি হয়েছে ১০টাকায়। চলতি অর্থ বছরে দেশে কাচাঁ উৎপাদিত লবনের সর্বাধিক দাম উন্নীত হয়েছে। পরিশোধন ও অপরিশোধন যোগ্য লবনের তারতম্য ছিল ব্যাপক। এক শ্রেণীর সিন্ডিকেট চাষীদের ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত করছিল। সরকার ট্রেডিং কর্পোরেশন টিসিবি ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কর্পোরেশন বিসিকের মাধ্যমে এর মনিটরিং ব্যবস্থা অধিক জোরদার করে। জানাগেছে, পেকুয়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে বর্তমানে প্রতিমণ লবন ৬শত টাকায় মাঠে বিক্রি হচ্ছে। চাষীরা জানিয়েছেন, ঈদুল আযাহার সময় লবনের চাহিদা বেড়ে যায়। চামড়া শিল্পে প্রক্রিয়াজাতের জন্য লবনের চাহিদা থাকে প্রচুর। মিল মালিকরা আগে ভাগে মজুদ করছে লবন। বর্তমানে লবন বিক্রির ধুম পড়েছে। বর্ষার সময় লবন উৎপাদন না হলেও মাঠে মজুদকৃত লবন বিক্রি চলছে। লবনের ঘাটতি নিরসন করতে সরকার ইতিমধ্যে বিদেশ থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন লবন আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাহিদাপত্র চুড়ান্তে টিসিবিকে লবন আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কিছুটা হতাশা ভাব পরিলক্ষিত হয়েছে কৃষক পর্যায়ে। লবন কক্সবাজারসহ উপকুলের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। এ শিল্পের ক্রম বিকাশ সাধন হওয়া মানে উপকুলের দরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন ঘটানো। কৃষকের অর্থনৈতিক স্বপ্ন লবনের উপর অনেকটা নির্ভরশীল। লবনের দাম বেড়ে যাওয়ায় উপকুলের অর্থনীতির জীবন যাত্রাও দিন দিন বিকশিত হচ্ছে। লবন এখন সাদা স্বর্ণ। কৃষকরা লবন আমদানি বন্ধ চান। পাশাপাশি দেশিয় উৎপাদিত লবনের ন্যায্য মুল্য অব্যহত থাকুক এইটুকু প্রত্যশী তারা।

পাঠকের মতামত: