পেকুয়া প্রতিনিধি :
পেকুয়ায় সাব মেরিন নৌঘাঁটির জমিতে ফের লবণ লুট হয়েছে। একটি সংঘবদ্ধ দালালচক্র চাষীদের জিম্মী করে উৎপাদিত লবণ লুটের মেতেছে।
বুধবার সকালে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বেদেরবিলপাড়ায় সাবমেরিন নৌঘাঁটির জমিতে লবণ লুট হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। স্থানীয় সুত্র জানায়, ওই দিন সকালে বেদেরবিল পাড়ার লবণ চাষী সাকের উল্লাহর চাষকৃত জমিতে হানা দেয় একদল দালালচক্র। এ সময় ওই লবণচাষীর উৎপাদিত প্রায় ৩শ মণ লবণ লুট করে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একই এলাকার নুরুল আলমের ছেলে শহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ২০/৩০ জন লোকজন লবণচাষী সাকের উল্লাহর চাষের জমিতে যায়। তারা ওই মাঠের পলিথিন দ্বারা উৎপাদিত এ সব কাঁচা লবণ লুট করে নিয়ে যায়। লবণ চাষী জানায়, সাবমেরিন নৌঘাঁটিতে জীবিকার তাগিদে কৃষক লবণ চাষ করছে।
চলতি উৎপাদন মৌসুমে কৃষক লবণ চাষে নামে তারা। জমি নৌবাহিনীর, খাজনা দাবী করছে একটি মধ্যস্বত্তভোগীপক্ষ। তারা কৌশলে জমির খাজনা আদায়ে ব্যস্ত। গত ১ মাস আগে থেকে নৌঘাটির জমিতে খাজনা দিতে চাষীদের চাপ প্রয়োগ করছিল। প্রতি ৪০ শতক জমি ওয়াসিলা নির্ধারন করে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। ওই সুত্র ধরে দালালচক্র গত কয়েকদিন আগে থেকে কৌশলে খাজনা নিতে শক্তিশালী বলয় তৈরী করে।
বিশেষ করে মগনামায় সাব মেরিন নৌঘাঁটির প্রায় ৪১৯ একর জমিতে তারা অঘোষিত চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত। লবণ চাষী খাজনা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ নিয়ে দালালচক্র ও লবণচাষীর মধ্যে একাধিকবার হাতাহাতি হয়েছে। মাঠে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়। চাষীদের আক্রমন করতে দালালচক্র ভাড়াটে অস্ত্রধারী জড়ো করে। চাষীদের মাঠ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় দালাল চক্র। এতে করে অনেকে দালালদের দাবীকৃত টাকা গোপনে পরিশোধ করে।
স্থানীয়রা জানায়, যে সব লবণ চাষী খাজনা পরিশোধ করেননি তাদের মাঠের লবণ লুট করা হচ্ছে। লবণ চাষী শাকের উল্লাহ জানায়, ওই দিন সকালে তার জমি থেকে প্রায় ৩শ লবণ লুট করে নিয়ে যায়। স্থানীয় নুরুল আলমের ছেলে শহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন দুবৃর্ত্তরা লবণ মাঠে অনুপ্রবেশ করে। এক পর্যায়ে তাকে জিম্মী করে তারা এ লবণ লুট করে নিয়ে যায়।
এ দিকে সাবমেরিন নৌঘাটির জমির খাজনা মওকুফ করা হয়েছে। নৌঘাঁটির জমিতে কোন প্রকার খাজনা কিংবা ওয়াসিলা চাষীদের না দিতে বলা হয়েছে। এ সম্পর্কিত বিষয়ে চাষীদের অবগত করা হয়েছে। কোন দালালচক্রকে জমির ওয়াসিলা না দিতে মগনামা এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিন মগনামাসহ এ ইউনিয়নের দক্ষিন পশ্চিম অংশে প্রচার চালানো হয়। জানানো হয়েছে সাবমেরিন নৌঘাঁটির জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে। এ জমি নিয়ে বিভিন্ন গুজব চলছে। একটি মধ্যস্বত্তভোগী পক্ষ খাজনা আদায়ের চেষ্টা করছে। শতর্ক করা হচ্ছে সরকারের এ জমি নিয়ে কোন ধরনের চাল চাতুরী বরদাশত করা হবে না। খাজনা নেই নৌঘাটির জমিতে।
প্রান্তিক চাষীদের জীবিকার জন্য অস্থায়ী জমিতে লবণ চাষ হচ্ছে। এ জমির ওয়াসিলা থেকে চাষীরা বিরত থাকবে। মগনামা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুল এনাম জানায়, চাষীদের সতর্ক করা হয়েছে। যাতে করে দালাল চক্রকে খাজনা না দেয়া হয়। শহিদসহ কিছু দালাল চাষীদের জিম্মী করছে খাজনা নিতে। আমরা প্রশাসনকে বলেছি। শাকের উল্লাহ একজন গরীব লবণচাষী। তার ৩ মাসের উৎপাদিত সবটুকু লবণ তারা লুট করে নিয়ে গেছে। পেকুয়া থানার ওসি জানায়, যারা লবণ লুট করবে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বলেন। পুলিশ অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবে।
পাঠকের মতামত: