পেকুয়ায় মগনামা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো.ইউনুস চৌধুরীর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে চৌমুহনী কলেজ গেইট জিমএমসি সংলগ্ন আঞ্চলিক মহাসড়কে এ কর্মসুচি পালিত হয়। কর্মসুচিতে সর্বস্তরের লোকজন সংহতি প্রকাশ করেছেন। সাবেক এ চেয়ারম্যানের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি ও তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অবিলম্বে প্রত্যাহার দাবিতে সড়কের দু’পাশে বিপুল মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়। এ সময় তার ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেষ্টুন ও পোষ্টার নিয়ে মানববন্ধনকারীরা কর্মসুচিতে যোগ দিয়েছেন। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছেন মানববন্ধন কারীরা। উপজেলা সৈনিকলীগের সভাপতি সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম হিরুর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সদস্য শাহদাত হোসাইন, ইউনুস চেয়ারম্যানের ছোট ভাই ছরওয়ার আলম চৌধুরী। এ সময় বক্তরা বলেন ইউনুস চৌধুরী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। ডিবি পুলিশ অস্ত্র ও ইয়াবা নাটক সাজিয়ে তাকে আটক করেছেন। একজন জনপ্রতিনিধির উপর ন্যায় বিচারের পরিপন্থি অবিচার করা হয়েছে। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক আচারন একজন নাগরিকের উপর মানবাধিকারের চরম লঙ্গন। এস.আলম কোম্পানির জমি নিয়ে মগনামার চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের বিরোধ চলছে ইউনুসের। যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর এ সহচর পুলিশকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমরা সর্বস্থরের মানুষ এ আচরনে চরম ব্যতিত হয়েছি। আমরা মনে করি একজন মানুষের সাথে এটি চরম নিষ্টুরতা। বক্তরা বলেন ওয়াসিম বিপুল টাকার বিনিময়ে তার প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেছেন অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে। একজন মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রাষ্ট্র। প্রশাসন মানুষের অতন্দ্র প্রহরী। ইউনুস নিষ্টুরতার শিকার। তিনি এসব অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা এ আচরনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছি। তার বিরুদ্ধে এটি দুর্ধান্ত চক্রান্ত। প্রহসন ও ফাঁতানো ঘটনা এটি। আমরা অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। অন্যতায় তার মুক্তির দাবিতে বৃহত্তর কর্মসুচি ও আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে পেকুয়ায়।
############
পেকুয়ায় জাপা নেতার মুক্তির দাবিতে বিএনপিসহ যুবলীগ একাংশের মানববন্ধন!
বিশেষ প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় জাতীয় পার্টি নেতার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিএনপিসহ যুবলীগ একাংশের নেতাকর্মীরা। গতকাল ২২এপ্রিল শনিবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পেকুয়া মডেল জিএমসি ইনষ্টিটিউশন সংলগ্ন এবিসি সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসুচী পালিত হয়েছে। কর্মসূচী থেকে মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির উপজেলার সহ-সভাপতি মো. ইউনুছ চৌধুরীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবিসহ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অবিলম্বে প্রত্যাহার দাবি করা হয়। ওইদিন অনুষ্টিত মানববন্ধনে যুবলীগের একাংশ এ কর্মসুচীতে সংহতি প্রকাশ করে। কর্মসুচীতে তার সাবেক মিত্র বিএনপি’র একটি অংশও যোগ দেয়। এদিকে জাপা নেতার মুক্তির দাবিতে যুবলীগের একাংশ ও বিএনপি’র একটি অংশের সংহতি প্রকাশকে ঘিরে নানা গুঞ্জন দেখা দিয়েছে। দু’অংশের ঐক্যমতে হঠাৎ নাটকীয়তা তৈরি হয়েছে পেকুয়ায়। ওইদিন মানববন্ধন কর্মসুচী থেকে তার মুক্তির দাবিকে ঘিরে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে বিষদগার করেছেন কিছু বক্তা। তবে এরা ক্ষমতাসীন দল আ’লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের উপজেলা পর্যায়ের কিছু নেতা। জাতীয় পার্টির নেতা ইউনুস চৌধুরীর মানববন্ধন কর্মসুচীতে যুবলীগ ও বিএনপি’র অংশ গ্রহন নিয়ে রীতিমত হৈ চৈ উঠেছে দল দু’টির মধ্যে। আ’লীগের উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের শীর্ষ পর্যায়ের নীতি নির্ধাকরা এ কর্মসুচীকে একজন ব্যক্তিকে রক্ষার কর্মসুচী আখ্যায়িত করা হয়েছে। তারা বলেছেন আ’লীগ ইউনুসের মুক্তির দাবির পক্ষে একমত নন। ইউনুস চৌধুরী একাধিক দলের অনুসারি। তার রাজনীতি হচ্ছে ক্ষমতাসীন কেন্দ্রিক। তার পুর্ব পুরুষ বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৯৬সালে ক্ষমতাসীন সময়ে তিনি আ’লীগে যোগদান করেন। সে সময় তার চাচা সাবেক এমপি মাহমুদুল করিমের সাথে পৈত্রিক সম্পত্তির বিরোধ ও তাকে ঘায়েল করতে আ’লীগে যোগদান করেছিলেন। ২০০২সালে ইউনুস বিএনপিতে যোগদান করেন। সে সময় চেয়ারম্যান ছিলেন। চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা একই সাথে হওয়ায় প্রচন্ড প্রতিপত্তি ও ক্ষমতাধর ব্যক্তি পরিনত হন। আ’লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীকে নির্যাতন করেছিলেন এ ইউনুস। ২০০৭ সালের ২৮ অক্টোবর আ’লীগের আন্দোলন প্রতিহত করতে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের ক্যাডারদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইউনুস। মগনামার ফুলতলা ষ্টেশনে আ’লীগের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছোড়েন ইউনুস। ২০০৪ সালে মগনামা সোনালী বাজারে বঙ্গবন্ধুর কাঙ্গালীভোজে হানা দেয় ইউনুসের নেতৃত্বে বিএনপি-ছাত্রদলের ক্যাডাররা। তারা ভুরিভোজ বিনষ্ট করেন এবং মাইক্রোফোন ভেঙ্গে দেয় ১৫আগষ্টে। গত ইউপি নির্বাচনে আ’লীগ থেকে মনোনয়ন দৌঁড়ে বাধ যান তিনি। এরপর জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ভোট করেছেন চেয়ারম্যান পদে। এসআলম কোম্পনীর জমি কুক্ষিগত করেছেন তিনি। এনিয়ে বিএনপির একটি অংশের সাথে তার বৈরীভাব দেখা দেয়। ডিবি পুলিশ গত ১৬ এপ্রিল রাতে কক্সবাজার শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাকে ইয়াবাসহ আটক করে। ওইদিন গভীর রাতে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে মগনামার কাকপাড়াস্থ বাড়ি থেকে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। মানববন্ধন কর্মসুচীতে অংশ গ্রহনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু সাবেক তার রাজনৈতিক মিত্র বিএনপির অনুসারী ছিল। তারা বর্তমানে কয়েকজন যুবলীগের নীতি নির্ধারক। এদের একজন উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি। ২০১৩সালে হেফাজতের মিছিলে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসুচীতে বিএনপি ও হেফাজত নেতাদের নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ফুলতলা ষ্টেশনে পেকুয়ার তৎকালীন ওসি মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছোড়ে। ওই নেতা বিএনপির প্রার্থী শাফায়েত আজিজ রাজুর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট করেছেন দু’বার। ওই নেতা গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে সরাসরি ভোট করেছেন। তিনি ইউনুসের মুক্তির দাবির বক্তব্যের এক পর্যায়ে সরকার ও প্রশাসনকে হুশিয়ারী দিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জানায় ইউনুস অপরাধ ও অপকর্মের অন্যতম হোতা। এ বিষয়ে তার আ’লীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই। যারা করছে এরা তার কাছ থেকে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নেয়। যুবলীগের একটি অংশও এ কর্মসুচীকে সরাসরি প্রত্যখান করেছেন। তারা বলেন প্রশাসনের কাছ হচ্ছে অপরাধ তৎপরতা বন্ধ করা। এটি আইনি বিষয়। এখানে আমাদের হস্তক্ষেপের কিছু নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানান ইউনুসের বিষয়ে আমরা কিছু বলতে চাইনা। তবে বিএনপি এ কর্মসুচীতে অংশ নেয়নি। দল বদল করায় হচ্ছে তার কাছ। আদর্শ ও নৈতিকতা যার মধ্যে নেই তাকে নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাইনি বিএনপি।
পাঠকের মতামত: