ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ার চিংড়ি ঘেরে হামলা ও গুলিবর্ষণ ৩ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট

চকরিয়া অফিস :
পেকুয়া উপজেলার বৃহত্তম মগনামা ইউনিয়নের সাতদুইন্যা চিংড়ি ঘের প্রকল্পে অস্ত্রধারী দূর্বূত্তরা ব্যাপক গুলি বর্ষন করে চিংড়ি ঘেরের মাছ লুট ও ঘেরের বাঁধ কেটে দিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে, গত ২১ মে দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের দক্ষিণ মগনামা সাতদুইন্যা ঘোনা চিংড়ি ঘের প্রকল্প এলাকায়। এসময় অস্ত্রধারী দূর্বুত্তরা ওই চিংড়ি ঘেরে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার চিংড়ি মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
চিংড়ি ঘেরের বর্তমান মালিক ও পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেছেন, মগনামা সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ চৌধুরীসহ তিনি সাতদুইন্যা চিংড়ি ঘেরটিতে লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে মাছের চাষ করে আসছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও বহুল আলোচিত-সমালোচিত ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম ওই চিংড়ি ঘেরটি জবর দখলের জন্য নানানভাবে চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছিল। এরই অংশ হিসেবে ঘেরের অংশীদার ইউনুচ চৌধুরীকে একটি সাজানো ঘটনায় ফাঁসিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে সম্প্রতি জেলে পাঠায় চেয়ারম্যান ওয়াসিম।
পেকুয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম আরো অভিযোগ করেছেন, গত ২১ মে দিবাগত গভীর রাতে প্রভাবশালী বিএনপি নেতা শরাফত উল্লাহ চৌধুরীর ওয়াসিমের নির্দেশে তার লালিত-পালিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সাজিব ও লিটনের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ শতাধিক সন্ত্রাসী তাদের চিংড়ি ঘেরে গুলিবর্ষন করে ব্যাপক হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। তারা ব্যাপক গুলিবর্ষন করে করে চিংড়ি ঘেরের বাসা ভাংচুর করেছে। তিন লক্ষাধিক টাকার মাছও লুট করে নিয়ে গেছে এবং চিংড়ি ঘেরের বাঁধ কেটে দিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছে।
চিংড়ি ঘের ইজারাদার ও স্থানীয় এলাকাবাসীদের সূত্রে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার বৃহত্তম চিংড়ি ঘের মগনামা সাত দুইন্যা চিংড়ি ঘের প্রকল্পের ৬০ একর লবণ ও চিংড়ি জমির মালিক চট্টগ্রামের সোনালী কার্গো লজিষ্টিক প্রা: লি:। এ কোম্পানির পক্ষে পেকুয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ আগামী তিন বছরের জন্য ওই ৬০ একর চিংিড়ি ঘের ও লবণ মাঠের জমি মগনামা সিকদার বাড়ীর মরহুম জিল্লুল করিম চৌধুরী পুত্র মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ চৌধুরীকে ইজারা দেন। তাদের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় গত ২৭/১০/২০১৬ইং। ইউনুচ চৌধুরীর ইজারা মেয়াদ রয়েছে আগামী ২০১৯ সালের ২৭ শে অক্টোবর পর্যন্ত। চিংড়ি ঘের ও লবণ মাঠের জমি ইজারা নেওয়ার পর থেকে ইউনুচ চৌধুরী শান্তিপূর্ণ ভোগ দখল করে আসছিলেন। এরপর ইউনুচ চৌধুরীর একার পক্ষে উক্ত চিংড়ি ঘের ও লবণ মাঠের জমি সুষ্টু রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব না হওয়ায় তিনি পেকুয়া উপজেলার মাতবর পাড়া গ্রামের রমিজ আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে লিখিত চুক্তিপুত্রের মাধ্যমে যৌথ অংশীদার নিয়ে গত কয়েক মাস পূর্বে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ঘেরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চাষ শুরু করেন। এরপরেই তাদের চিংড়ি স্থানীয় প্রভাবশালী ওয়াসিসের নির্দেশে হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।
তবে চিংড়ি ঘরের বর্তমান মালিক জাহাঙ্গীর আলম ও ইউনুচ চোধুরীর ছোট ভাই মো. ছরওয়ার চৌধুরী জানান, তাদের চিংড়ি ঘেরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিবেন। পেকুয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে থানায় এখনো পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: