ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

নয়াদিল্লি যাবেন সালাহউদ্দিন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর দেশে ফেরা

অনলাইন ডেস্ক : অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতে দীর্ঘ ৮ বছর আটক থাকার পর দেশে ফেরার জন্য ট্রাভেল পাস পেয়েছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বর্তমানে মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে অবস্থান করছেন।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া শুক্রবার (২৩ জুন) তাঁর একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। সাক্ষাৎকারে তিনি দেশে ফেরা এবং বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তিনি দেশের ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। বর্তমানে স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি এলে একসঙ্গে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি যাবেন। এরপর আবার শিলংয়ে ফিরবেন। সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দেশে ফিরবেন।

শুক্রবার নেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে এ বিএনপি নেতা আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনাও করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে এবং সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় তাহলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি অবশ্যই ক্ষমতায় আসবে। বাংলাদেশে এখন কোনো গণতন্ত্র নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য ভারতীয় সংবাদ সংস্থাটিকে বলেন, “আমি দেশে ফিরতে পারব এর জন্য খুব খুশি। ভারতে কিছু আনুষ্ঠানিকতা এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ করে আমি দেশে ফিরব।”

আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার সালাহউদ্দিন আহমেদকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য এরই মধ্যে একটি ট্রাভেল পাস ইস্যু করেছেন।

দেশে ফেরার প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমি আমার স্ত্রীর আসার জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা নয়াদিল্লিতে যাব। এরপর আমরা এখানে আবার আসব এবং শিলংয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাব। তারপর বাংলাদেশে চলে যাব।”

বৈধ ভ্রমণ নথি ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে এক মামলার রায়ে শিলং জজ কোর্ট গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সালাহউদ্দিনকে খালাস দিয়ে ২০১৮ সালের রায় বহাল রাখেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরা থেকে ‘নিখোঁজ’ হন। তখন তিনি ছিলেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব। দলের পক্ষে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং দলটির বর্তমান কো-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বেশ আস্থাভাজন নেতা হিসেবে দলে তাঁর পরিচিতি রয়েছে।

সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা তখন অভিযোগ করেন, তাঁকে গুম করা হয়েছে। দুই মাস পর ১১ মে মেঘালয়ের শিলং পুলিশ সালাহউদ্দিনকে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করে। ভারতে প্রবেশের বৈধ কাগজপত্র না থাকার অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্টে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায় মেঘালয় পুলিশ। সে বছর ২২ জুলাই এ-সংক্রান্ত মামলায় তাঁর বিচার শুরু হয়। প্রায় সাড়ে সাত বছর বিভিন্ন পর্যায়ে মামলাটি চলার পর চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি মেঘালয়ের শিলং জজ কোর্ট এক রায়ে তাঁকে খালাস দেন।

১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা সালাহউদ্দিনকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব করা হয়। ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা পরে সরকারি চাকরি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি কক্সবাজারের একটি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি ২০০১ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর সালাহউদ্দিন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

ভারতে অবস্থানকালেই দলটি তাঁকে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত করে।

পাঠকের মতামত: