ঢাকা,রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিয়ন্ত্রণহীন সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবসা

কক্সবাজার শহরে নিজেদের ইচ্ছেমতই গ্যাসের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ি। গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবসারও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যার যার মত দামে বিক্রি করছে গ্যাস। যার ফলে বিব্রত হচ্ছেন গ্রাহকরা। এ ছাড়াও গ্যাস সিলিন্ডার ডিলার ব্যবসায় বিস্ফোরক লাইসেন্স আবশ্যক হলেও কক্সবাজার শহরেই লাইসেন্স ছাড়া অসংখ্য দোকানে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস। বিস্ফোরক লাইসেন্সের প্রদত্ত নিয়ম-কানুন অনুযায়ী গ্যাসের ডিলার পরিচালিত হয়। এতে নিরাপদে গ্যাস মজুদসহ নানা ধরনের দিক-নির্দেশনা থাকে।
কক্সবাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়াই খুলে বসেছেন গ্যাসের ডিলার। যার কোন বৈধতা না থাকলেও প্রকাশ্যেই করে যাচ্ছেন এ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা। ফলে নিয়ম ছাড়াই ঝুকিপূর্ণভাবে মজুদ হচ্ছে গ্যাসের সিলিন্ডার। এছাড়া অবৈধ গ্যাসের ডিলারেরাই গ্যাসে বাড়তি দাম, ওজনে কারচুপি সহ নানা অপকর্ম করছে। গতকালের বাজার অনুযায়ী এলপি গ্যাস সাড়ে ৮শ টাকা হলেও অবৈধ ব্যবসায়িরা বিক্রি করছেন সাড়ে ৯শ টাকায়।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজারে অর্ধশতাধিক গ্যাসের ডিলার অবৈধভাবে লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করছেন। দেখা গেছে, পানের দোকান, চায়ের দোকান এমনকি ওষধের ফার্মেসির সাথেও রয়েছে গ্যাসের ডিলার। এসব ডিলারদের বিস্ফোরক লাইসেন্স নেই। যে লাইসেন্স ছাড়া গ্যাসের ডিলার করা যায়না। কারন ওই লাইসেন্সের মাধ্যমেই গ্যাসের ডিলার পরিচালিত হয়।
খবর নিয়ে জানা যায়, অর্ধশত লাইসেন্সহীন ডিলারের মধ্যে শহরে রয়েছে, নতুন বাহারছড়াস্থ তৈয়বিয়া এন্টারপ্রাইজ, এয়ার পোর্ট গেইটস্থ অসম ট্রেডার্স, ফিসারী ঘাটস্থ নাহার ট্রেডার্স, জানে আলম, ঝাউতলাস্থ গাং-চিল এন্টারপ্রাইজ, মধ্যম বাহারছড়াস্থ হাসনাত এন্ড ব্রাদার্স, ইমন এন্টারপ্রাইজ, বাহারছড়া বাজারস্থ কাজল সেলুন, সদর থানার পিছনে তাহেরীরা এন্টারপ্রাইজ, কস্তুরাঘাটস্থ কক্সবাজার ট্রেডার্স, বাজারঘাটা সংলগ্ন আইবিপি সড়কস্থ  সোনিয়া এন্টারপ্রাইজ, গোলদিঘীর পাড়স্থ বিভা ট্রেডাস, মা এন্টারপ্রাইজ, সিকদার পাড়াস্থ সাকিব ষ্টোর, বড়বাজারস্থ নেজাম এন্ড ব্রাদ্রার্স, ঝাউতলাস্থ শাহ্ আলম, সমিতি পাড়াস্থ মিম এন্টারপ্রাইজসহ আরো অনেক। এসব প্রতিষ্ঠানে বিস্ফোরক লাইসেন্স নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্যাস ডিলার জানান, অনেক সময় সাইনবোর্ড দেখে বুঝা যায়, কোন ডিলার বৈধ আর কোন ডিলার অবৈধ। বৈধ ডিলারের সাইনবোর্ডে পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ নানা ধরনের গ্যাস কোম্পানীর নাম লিখা থাকে। কিন্তু অনুমোদনহীন অবৈধ ডিলারে এসব নাম থাকে না। এ লাইসেন্স ছাড়া কিভাবে লোকজন গ্যাসের ডিলার করছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কক্সবাজারে প্রায় অর্ধ শতাধিক গ্যাসের ডিলারের অনুমোদন নাই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গ্যাসের ডিলামের অনুমতি নিয়েছে বলে অবৈধভাবে ব্যবসা চালাচ্ছেন। ট্রেস লাইসেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের অনুমতি নিয়ে কেউ গ্যাসের ডিলার দিতে পারেনা। অনুমতির জন্য এ লাইসেন্সগুলো যথাযথ নয়। গ্যাসের ডিলারের মূল ভিত্তি হল বিস্ফোরক লাইসেন্স। লাইসেন্সহীন অবৈধ ডিলাররাই বাড়তি দামে গ্যাস বিক্রিসহ নানা অপকর্ম করছেন। যার দায়ভার অনেকসময়  বৈধ ডিলারদেরও নিতে হচ্ছে। এই অসাধু ডিলারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও তেমন কোন কাজ হয়নি। এসব বন্ধ্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী।

পাঠকের মতামত: