ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

টিআইবির গণশুনানিতে ডাক্তার শোভন দত্ত

চকরিয়া উপজেলা হাসপাতালে জনবল সংকট তবু প্রতিদিন ১২০ জন রোগীকে চিকিৎসা হচ্ছে

 

 

এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন ও স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপনের লক্ষ্যে গণ-শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-টিআইবি চকরিয়ার সহযোগিতায় শনিবার সকাল ১১ টায় সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ এ গণ-শুনানির আয়োজন করেন।

সনাক-টিআইবি চকরিয়ার সভাপতি বুলবুল জান্নাত শাহিনের সভাপতিত্বে গণ-শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শোভন দত্ত, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নুরুল আজম, হাসপাতালের সকল বিভাগের প্রতিনিধিবৃদ, উপজেলার বিভিন্ন স্তরের সেবাগ্রহীতাগণ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংবাদিক প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সনাক-টিআইবি চকরিয়ার সনাক, ইয়েস ও এসিজির সদস্যববৃদ।

গণ-শুনানির শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক-টিআইবির সদস্য মংখেরী রাখাইন। সনাক-টিআইবি চকরিয়ার এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মো. আবু বকর এর সঞ্চালনায় সেবাগ্রহীতাগণ হাসপাতালের সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপন করেন।

গনশুনানিতে প্রতিয়মান হয় যে, অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চকরিয়ার সেবার মান উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে সকল সেবা সম্পর্কিত প্রশ্ন বা অভিযোগ উত্থাপিত হয় সেগুলো হলো হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক রোগী ও রোগীর অভিভাবকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে অবহেলা, হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ঘাটতি, সিটিজেন চার্টার ও অভিযোগ বাক্স না থাকা এবং হাসপাতাল চত্বরে দালালদের উপস্থিতি।

এসকল প্রশ্নের উত্তরে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শোভন দত্ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহেলার কথা স্বীকার করেন এবং এব্যাপারে উন্নয়নের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ যথাসম্ভব কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, অন্যান্য কর্মচারীর সংকট থাকা সত্তে¡ও ৫০ শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১০০-১২০ জন রোগীকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ যদি সহায়তা করেন তবে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করে উন্নতমানের সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে। এছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ বিদ্যমান সেবাসমূহ উপস্থাপন করেন এবং সেবা প্রদানের গত ১ বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। প্রচলিত সেবার পাশাপাশি নতুনভাবে সংযোজিত সেবাসমূহ হচ্ছে সিজারিয়ান ডেলিভারী, ভায়া (জরায়ু ক্যান্সার শনাক্তকরণ), বৈজ্ঞানিক ল্যাব চালু, বøাড সঞ্চালন ও ক্রসমেসিং, চোখ ও দাঁতের চিকিংসা, প্রতিবন্ধী কর্ণার, গর্ভবতী মহিলাদের বিএমসি, বিনামূল্যে ফিজিওথেরাপি, ছোট শিশুদের এনওসি ইত্যাদি।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উপস্থিত সবাইকে হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা সরাসরি কর্তৃপক্ষের কাছে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন এবং হাসপাতালের সেবাসমূহকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সকলের সহায়তা কামনা করেন। অন্যান্যদের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম, মো.মনজুর আলম, এনজিও প্রতিনিধি মো. শাহাব উদ্দিন, মো. মামুন, মো. মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া, সনাক সদস্য সন্তোষ কুমার সুশীল, জিয়া উদ্দিন, হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার শামীমা সুলতানা, ডাক্তার মহিম উদ্দিন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিধান কান্তি রুদ্র প্রমুখ।

সমাপনী বক্তব্যে সনাক সভাপতি বুলবুল জান্নাত শাহিন বলেন, যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা থাকা সত্তে¡ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চকরিয়া উন্নতমানের সেবা প্রদান করে আসছে। আশা করি আজকের গণ-শুনানির মাধ্যমে যেসকল সমস্যাগুলো চিহ্নিত হয়েছে সেগুলোর সমাধানকল্পে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। পরিশেষে তিনি উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গণ-শুনানি সমাপ্তি ঘোষণা করেন।##

 

পাঠকের মতামত: