ঢাকা,শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় দুলা ভাইয়ের কবল থেকে দেড়বছর পর শালিকা উদ্ধার

লাবণ্য রাণী পূজা, চকরিয়া ::   চকরিয়ায় আপন দুলা ভাই কর্তৃক অপহৃতা শালিকা বিবি মরিয়ম (১৫) প্রকাশ মুক্তাকে উদ্ধার করেছেন চকরিয়া থানা পুলিশ। ২৭ আগস্ট রাতে পুলিশ মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে দুলা ভাইয়ের কবল এবং তার বাড়ির সামনে থেকে তাকে উদ্ধার করে। মুক্তা চকরিয়া উপজেলা পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়নের সিকান্দরপাড়ার নুরুল আমিনের মেয়ে।

মামলার বাদী আনোয়ারা বেগম জানান, গত ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল বড় মেয়ের জামাই শাহেদুল ইসলাম আনসার (৩০) তার শালিকা মরিয়মকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এঘটনায় শ্বাশুড়ী আনোয়ারা বেগম বাদি হয়ে তার ছোট মেয়ে বিবি মরিয়মকে অপরহরণের অভিযোগ তুলে বড় মেয়ের জামাই আনসারের বিরুদ্ধে উপজেলা সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

যার মামলা নং ৩৪-২০১৮। দীর্ঘ দেড়বছর ধরে তার ছোট মেয়ে মরিয়মকে আত্মগোপনে রেখেছিলো আনসার। অবশেষে আমার বড় মেয়ের জামাইর বাড়ির সামনে থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ছোট মেয়ে মরিয়মকে। উদ্ধার করার পরপরই মরিয়মকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকমর্তা এসআই চম্পক বড়-য়া বলেন, গত ২০০৯ সালে উপজেলার পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়নের সিকান্দরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কবির আহমদের পুত্র শাহেদুল ইসলাম আনসারের সাথে একই এলাকার নুরুল আমিনের কন্যা রোকসানা আক্তারের মধ্যে ইসলামী শরিয়া মতে বিবাহ হয়। বিবাহের দশবছর দাম্পত্য জীবনে নিস:সন্তান ছিলেন তারা ।

তিনি আরও বলেন, বড় বোনের শ্বাশুর বাড়িতে থেকে বিবি মরিয়ম পড়াশোনা করতেন। ওইসময় শালিকা মরিয়মের উপর কু-নজর পড়ে লম্পট দুলা ভাই শাহেদুল ইসলাম আনসারের। তার স্ত্রী বাপের বাড়িতে বেড়াতে গেলে চিরিঙ্গা আসার নাম দিয়ে শালিকাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

অপহরণের ঘটনাটি জানাজানি হলে বাপের বাড়িতে থেকে যায় স্ত্রী রোকসানা আক্তার। ঘটনার দুই মাস পর শ্বাশুড়ি আনোয়ার বেগম বাদি হয়ে মেয়ের জামাই শাহেদুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। আদালতের হাকিম মামলাটি তদন্তপূর্বক মামলা নেওয়ার জন্য চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

তৎকালিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গাজী মাঈনুদ্দিন চট্টগ্রাম থেকে প্রধান আসামি শাহেদকে গ্রেফতার করলেও শালিকা বিবি মরিয়মকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে আসামী শাহেদ উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান।

এদিকে গত ২৭ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই চম্পক বড়ূয়া মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যম দুলা ভাইয়ের কবল থেকে অপহৃতা বিবি মরিয়মকে উদ্ধার করে। তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুলা ভাই আনসার তার শালিকা মরিয়মকে প্রায় দেড় বছর আত্মগোপনে রেখেছিলেন।

পুলিশের অব্যাহত অভিযানের কারণে ভিকটিমকে তার বাড়ির সামনে রেখে পালিয়ে যায় আনসার। আসামী খুবই চালাক ও চতুর আদালত হতে জামিনে আসার পর ভিকটিমকে উদ্ধার করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। বর্তমানে ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, দেড় বছর পর দুলা ভাইয়ের কবল থেকে শালিকাকে উদ্ধার করার পর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: