কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়িজোনে ৬০ একরের ৬টি ঘেরে ব্যাপক তাণ্ডব ও লুটপাট চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময় ৯ লক্ষ টাকা মূল্যের ৩ হাজার মণ উৎপাদিত লবণ ও ৬০ হাজার টাকার মালামাল লুট করে সন্ত্রাসীরা। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় ১০–১২ রাউণ্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তারা। এসময় বন্দুকের বাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ঘেরের দুই কর্মচারীকে। আহত দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এসব ঘেরের পরিচালক হারুণুর রশিদ বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ এবং আরো ৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে গতকাল মঙ্গলবার থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটা থেকে পরদিন ভোররাত তিনটা পর্যন্ত উপজেলার চিংড়িজোন রামপুর মৌজার চিলখালী এলাকার ১০ একর বিশিষ্ট ৩৩০, ৩৩১, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৩৪ ও ৩৩৫ নম্বর প্লটে এই তাণ্ডব ও লুটপাট চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
আহত দুই ঘের কর্মচারী হলেন কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশীখালীর আজগর আলীর পুত্র লুৎফুর রহমান (২৮) ও মহেশখালীর শাপলাপুর এলাকার নুর ছৈয়দের পুত্র আসহাব উদ্দিন (২৭)।
ঘেরের পরিচালক হারুণুর রশিদ বলেন, ‘সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে দুটি ইঞ্জিনচালিত বোটযোগে প্রায় ৪০ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী হানা দেয় এসব ঘেরে। এ সময় সন্ত্রাসীরা ঘের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে দুই ঘের কর্মচারীকে। এই অবস্থায় আশপাশের ঘের থেকে কর্মচারীরা এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা পর পর ১০–১২ রাউণ্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এর পর ঘের এলাকায় মজুদ থাকা প্রায় ৩ হাজার মণ উৎপাদিত লবণ, এসব ঘেরের খামার বাড়ি থেকে চাল, আসবাবপত্রসহ প্রায় ৬০ হাজার টাকার মালামাল ইঞ্জিন চালিত বোটে তুলে নিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ঘের এলাকা ত্যাগ করার সময় সন্ত্রাসীরা ঘেরের ুইস গেট খুলে দিয়ে প্রায় ৪৫ একরের লবণ মাঠে মজুদ করা উৎপাদিত লবণ জোয়ারের পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে যায়। এতে আরো ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়।
ঘের পরিচালক অভিযোগ করেন, চকরিয়া পৌরসভার করাইয়াঘোনার জসীম উদ্দিন, ছরওয়ার ও বদরখালীর মগনামা পাড়ার মোহাম্মদের নেতৃত্বে এই তাণ্ডব ও লুটপাট চালানো হয়েছে। এসব ঘের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করায় ইতিপূর্বে তাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী এবং ঊর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তার কাছেও লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল। এ কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে নতুন করে তাণ্ডব ও লুটপাট চালিয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘চিংড়িঘেরে যত ঘটনা ঘটে সবই দখল–বেদখলের বিরোধ নিয়ে। ঘের পরিচালক হারুণুর রশীদ বাদী হয়ে থানায় করা অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মামলা নেওয়া হবে।’
পাঠকের মতামত: