ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের

খাওয়া-দাওয়া বন্ধ অসুস্থ রাসেল ও টুম্পার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা তারা ভাই বোন। রাসেল (১৬) ও টুম্পা (১৫)। বয়সে এক বছরের বড়-ছোট। বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তারা। অসুস্থ হওয়ায় খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তাদের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। তারপরও সুস্থ হয়ে উঠেনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০০৭ সালের ১৫ অক্টোবর সিংহ রাসেল এবং ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর সিংহী টুম্পা সাফারি পার্কে জন্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে সিংহ রাসেল ১৬ বছর এবং সিংহী টুম্পা ১৫ বছর বয়স অতিক্রম করছে। সিংহরা মুলত ১৬ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
সাফারি পার্ক কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পার্কে ৫টি সিংহ রয়েছে। তাদের মধ্যে ২টি সিংহ ও ৩টি সিংহী। গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। বাত, ব্যাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থান অবশ হয়ে যাচ্ছে, দাঁতে ক্ষয়, ঘন ঘন প্রস্রাব শুরু করে। এরপর থেকে দুই ভাই-বোনকে বেষ্টনিতে রেখে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন সাফারি পার্কের ভেটেরেনারি সার্জন ডা.হাতেম সাজ্জাদ মো.জুলকার নাইন। মাঝখানে তারা কিছুটা সুস্থ হলেও পরে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়।

এরপ্রেক্ষিতে গত ১৪ জানুয়ারি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম গঠন করেন। এই মেডিকেল টিমের প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারী ও এ্যানিমেল সাইসেন্স বিশ্ববিদ্যালয়েল মেডিসিন ও সার্জারী বিশেষজ্ঞ ড.বিবেক চন্দ্র সুত্রধর।

চার সদস্য হলেন- একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ড.ভজন চন্দ্র দাস, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের অব: পরিচালক ডা.মো.ফরহাদ হোসেন, চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও সাফারি পার্কের ভেটেরিনারী চিকিৎসক ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো.জুলকাই নাইন।
গত রবিবার মেডিকেল টিমের প্রধানসহ পাঁচ সদস্যের টিম কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে এসে সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেন।
মেডিকেল টিমের বরাত দিয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রাসেল ও টুম্পার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল টিমের পরামর্শে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকদের মতে মানুষ আর প্রাণীর রোগ অনেকটা একই ধরণের। মানুষের স্বাভাবিক যে রোগগুলো হয়, প্রাণীদের ক্ষেত্রেও একই রকম হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকদের মতে সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা গ্যাস্ট্রলোজিকেল সমস্যায় ভুগছে। সেজন্য তারা খাবার খেতে চাচ্ছে না। আশা করি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবে।

পাঠকের মতামত: