মাহাবুবুর রহমান :: শহরের পিএমখালী এবং ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়া এলাকার বাঁকখালী নদীতে কক্সবাজার জেলায় স্থাপিত হওয়া প্রথম রাবার ড্যাম অকেজো হওয়াতে কৃষকদের মাঝে পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মাণাধীন বাঁধ কোন কাজে আসছেনা। যথা সময়ে বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়াতে চরম হতাশ জেলার ৫ ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক। তাদের দাবী সরকারি টাকা লুটপাট করার জন্য নামে মাত্র বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। গত বছরও অসময়ে বাঁধ নির্মাণ করে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেছিল সেই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও সুষ্ক মৌসুমে পানি না পেলে কার স্বার্থে বাঁধ নির্মাণ ?
পিএমখালী ইউনিয়নের ঘাটকুলিয়াপাড়ার কৃষক সিরাজুল্লাহ বলেন,আমি ৭ একর জমিতে পানির অভাবে কোন ধরনের চাষাবাধ করতে পারছি না। মনে করেছিলাম দ্রুত বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হলে পানি পাব,সে আশায় শীত কালিন সবজি হিসাবে বাধাকপি,ফুলকপি,শীম চাষ করেছিলাম কিন্তু এখন পানি অভাবে সব গাছ মরে যাওয়ার অবস্থা। তিনি বলেন,রাবার ড্যাম যখন অকেজো হয়ে পড়েছিল তখন আমরা বেশ কয়েকবার উপজেলা প্রকৌশল অফিসে দরখাস্ত করেছিলাম বিকল্প বাঁধ দিয়ে হলেও চাষাবাদের জন্য পানির ব্যবস্থা করতে। গত বছরও সরকারের পক্ষ থেকে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল কিন্তু যখন আমাদের পানি প্রয়োজন তখন পানি পায়নি। ফলে অনেক জমি চাষাবাদ ছাড়াই ছিল। চলতি বছরও একই অবস্থা মূলত ঠিকাদার ফারুকের চরম অবহেলার কারনে ৫ ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক না খেলে থাকতেহবে। এদিকে চান্দের পাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলী বলেন,এগুলো একটা সিন্ডিকেট মূলত সাধারণ মানুষের মাথা বিক্রি করে সরকারি টাকা লুটপাট করার জন্য সব প্রকল্প। না হলে কখন পানি দরকার সেটাকি সরকারি কর্মকর্তারা জানেনা। এখন শীতকালিন সবজি চাষাদের সময় শেষ পর্যায়ে এছাড়া ধান চাষাবাদ করার জন্য পানি প্রয়োজন। যদি মানুষের উপকারে না আসে তাহলে সেই প্রকল্প কেন। আসলে জনগনের বিষয়েতো তাদের কোন দ্বায়বদ্ধতা নেই,কোন মতে কাজ শেষ করে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা জায়েজ করতে পারলেই খেলা শেষ। আগামী বছর আবার হবে।
রামু কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের কৃষক আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন,বাঁকখালী রাবার ড্যামে পানি ধরে না রাখলে এখানে পানি থাকে না। আর পানি না থাকলে কিভাবে চাষাবাদ করবো। তাই চলতি বছরও আমার ২ একর জমি খালী পড়ে আছে। কয়েকদিন আগে তামাক কোম্পানী এসেছিল এখন মনে করেছি তাদের না দিয়ে বড় ভুল করেছি। অন্তুত কিছু টাকা পেতাম।
এ ব্যপারে ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়াম্যান টিপু সুলতান বলেন,এটা খুবই দুঃখ জনক আসলে কাকে বলবো দুঃখের কথা। সরকার জনগনের জন্য ঠিকই সব কিছু করে কিন্তু তার কিছুই জনগন পায় না। সব আগেভাগেই ভাগ হয়ে যায়। আমি দ্রুত বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবী জানাচ্ছি।
পিএমখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন,পানির অভাবে বর্তমানে অসংখ্য জমি খালিপড়ে আছে। অসময়ে বাঁধ করে সেটা কার জন্য ? তাই বাঁধ নির্মাণে কোন অনিয়ম হলে তার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান তিনি।
এ ব্যপারে ঠিকাদার ফারুক বলেন,আমি ৩ দিন আগে বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করেছিলাম কিন্তু জোয়ারের পানিতে আবার বালুর বস্তা সরে গেছে। তাই এখন আমার করা হচ্ছে। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। আর বাজেট বরাদ্ধ ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা সেটা সবাই জানে।
এ ব্যপারে সদর উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন বলেন, এগুলো পানির কাজ তাই কখন কি হয় কেউ জানেনা। তবে কয়েকদিন আগে শেষ হয়েছিল সেখানে কিছুটা সমস্যা হওয়াতে এখন আবার করতে হচ্ছে। একই দপ্তরের প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, কাজের গুণগত মান যাচাই করার জন্য কমিটি আছে। আর কাজ দ্রুত শেষ করে মানুষ যাতে পানি পায় সে জন্য সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত: