এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার, ৬ জুন ॥
কক্সবাজার অঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বহু বির্তকিত উপ-সহাকরি পরিচালক শওকত কামালকে অবশেষে বরিশাল জেলার কোয়াকাটা পাসপোর্ট অফিসে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। গত রোববার রাতের আধাঁরে তিনি কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। একই সাথে সোমবার সহকারি পরিচালক (এডি) হিসেবে যোগদান করেছেন আবু নাঈম। এর আগে তিনি আগারগাঁও পাসপোর্ট কার্যালয়ে এডি পদে ছিলেন।
গত বছরের ৫ জুন সহকারী পরিচালক শরীফুল ইসলামকে সরানোর পর এডির পদটি দখল করে নেন ডিএডি শওকত কামাল। শওকত কামাল যোগদান করেই শুরু করেন প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেন, সেবা প্রার্থীদের হয়রানী ও দুর্ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসুচী পালন করে জেলাবাসি। এর পরেও বসদের খুশি রাখায় এবং কিছু রাজনৈতিক নেতাদের আস্কারায় এত দিন দাপটের সাথে ছিল দুর্নীতিবাজ শওকত। মোটা অংকের টাকা নিয়ে রোহিঙ্গা, দাগী ও সন্ত্রাসীদের পাসপোর্ট দেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে বরাবরই উঠে আসছিল। পুরো সরকারী সেবামুলক প্রতিষ্টানটি দুর্নীতির আখড়ার পাশাপাশি নিজেই দালাল সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে গ্রাহকদের জিম্মি করে বিভিন্ন কায়দায় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা অবৈধ আয় করেছে। শুধু গত এক বছরে এই জেলা থেকে কয়েক কোটি টাকা অবৈধ আয় করেন শওকত কামাল। অবশেষে ৫ জুন তার স্ট্যান্ডরিলিজের আদেশ আসে।
পাসপোর্ট অফিসের এক কর্মচারী বলেন, ডিএডি শওকত কামাল রবিবার রাতের আধাঁরে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। সোমবার সকালে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন সহকারী পরিচালক আবু নাঈম মাসুদ (এডি) । এর আগে আবু নাঈম ঢাকা আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে এডি ( ড্যামু, আরআই শাখা) পদে দীর্ঘদিন নিয়োজিত ছিলেন।
সোমবার সকালে এই আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দেখা গেছে অন্য রকম। দৃশ্য। প্রায় প্রতিদিনই ঘিসঘিস করা দালাল চক্র আড়ালে আবডালে বিষণœতা নিয়ে বসে আছে। এডি আবু নাঈম কাউন্টারে দাঁড়িয়ে আবেদনকারীদের কথা বলছেন এবং পাসপোর্ট ফরম ফাইল নিজেই জমা নিতে দেখা গেছে। তবে পাসপোর্ট অফিসে ঘুষের লেনদেন কমলেও দালাল চক্রের ঘুরাঘুরি ঠিকই দেখা গেছে।
নবনিযুক্ত সহকারী পরিচালক আবু নাঈম মাসুদ (এডি ) সাংবাদিকদের জানান, এখানে কোন ধরণের অনৈতিক কার্যক্রম চলবে না। সরকারী নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত কোন টাকা কাউকে না দেয়ার এবং কোন দালাল চক্রের সাহায্য না নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি। আবেদনকারী যে কেউ নিজের পাসপোর্ট নিজেই এসে কাউন্টারে জমা দেয়ার জন্য আহবান জানান।
এখন সচেতন মহলের প্রশ্ন? ঘুষখোর বাহিনী প্রধান শওকত কামাল বদলি হওয়ায় অনেকটা পাসপোর্ট প্রার্থীরা জিম্মি দশা হতে মুক্তি হয়েছে। নব নিযুক্ত এ কর্তা কোন পথে যাবেন এটাই দেখার বিষয়, এমনটাই জানালেন সচেতন মহল।
পাঠকের মতামত: