ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য নৌকা এগিয়ে, বিএনপি চায় ঘুরে দাঁড়াতে

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত পর্যটননগরী কক্সবাজারেও সারাদেশের মতো লেগেছে নির্বাচনী হাওয়া। জাতীয় সংসদের একাদশ নির্বাচনকে ঘিরে কক্সবাজারে চারটি আসনে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে ভোটের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রামগঞ্জে যাওয়া-আসা, বৈঠক, মতবিনিময় ও ভোটারদের বুকে জড়িয়ে ধরে নিজ নিজ দলের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন, ভোটারদের দোয়া চাইছেন।

কক্সবাজারে আটটি উপজেলার প্রতিটি আসনে দুটি করে উপজেলা নিয়ে গঠিত মোট চারটি আসন। এই ৪টি আসনে তৃণমূলে সর্বস্তরের নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ জনগণের মাঝে কোন্ প্রার্থীর বেশি জনপ্রিয়তা রয়েছে, কাকে সংসদ নির্বাচনে ভোট দিলে জনগণ সেবা পাবে এবং এলাকার উন্নয়ন তরান্বিত হবে। তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ। সরকার বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত পর্যটননগরী হিসেবে কক্সবাজারের যথেষ্ট উন্নয়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ইতিহাসে বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন জেলার মহেশখালীতে। বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ঢেলে সাজানো হয়েছে সৈকত রানী কক্সবাজারকে। তাই জেলার অন্তত তিন আসনে পুনর্বার বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। সাধারণ ভোটাররাও বলছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, তাই অন্য দলকে ভোট দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাসে নিরীহ মানুষকে অকালে মরতে দেয়া যায় না।

স্থানীয় সাধারণ ভোটাররা মনে করেন, দলীয় হাইকমান্ড প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই করে এবার মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগ চারটি আসনের মধ্যে অন্তত তিনটি আসনে নিশ্চিত জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই তিনটি আসনে বর্তমানেও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা এলাকার যথেষ্ট পরিমাণ উন্নয়ন করে চলেছে। একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা যে যার মতো করে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে দলের হাইকমান্ডের কাছে নানাভাবে তদ্বির চালাচ্ছে সাম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে প্রার্থীরা জানালেও এখনও মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগে নামেনি তারা। তবে ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনে জনগণের মন জয় করার কৌশল অবলম্বন করতে নেতাকর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হলেও তারাও বসে নেই। গোপনে চালাচ্ছে সাংগঠনিক তৎপরতা। বর্তমানে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকলেও সাংগঠনিক শক্তি দৃঢ় করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করছেন জামায়াত নেতারা। এক কথায় কক্সবাজারে রাজনীতি জাতীয় নির্বাচনমুখী হয়ে উঠেছে। জেলার ৪টি আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সাম্ভাব্য প্রার্থীরা স্ব স্ব দল থেকে মনোনয়ন নিয়ে ভোটযুদ্ধে লড়বেন। অন্য দল থাকলেও জেলায় ওই তিনটি রাজনৈতিক দল দলীয় কার্যালয় ও মাঠে ময়দানে চাঙ্গা রয়েছে। উখিয়া-টেকনাফ, কক্সবাজার-রামু, চকরিয়া-পেকুয়া ও মহেশখালী-কুতুবদিয়া এ চারটি আসনে এবার স্বতন্ত্রসহ অন্তত ৩-৪জন করে প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন।

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) ॥ আসনটি বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই আসন থেকে গণতান্ত্রিক সরকারের ২৮ বছরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা একটিবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত করে আওয়ামী ঘরে আনতে পারেনি। ঘুরে দেখা গেছে, এবারও এ আসনে একই অবস্থা বিরাজ করছে। ১৯৯১ সালে জামায়াত প্রার্থী, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী পরপর তিনবার এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম নির্বাচনে এই আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির (এরশাদ) হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ।

চকরিয়া-পেকুয়া আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি হাসিনা আহমদকে একক প্রার্থী ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাই এ আসনে প্রার্থী নিয়ে বিএনপির কোন ধরনের চিন্তা নেই। বিএনপির স্থানীয় নেতাদের দাবি, এ আসনে সাবেক এমপি হাসিনা আহমদ ভাল অবস্থানে। অপরদিকে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে আবারও বর্তমান এমপি হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত বলা চলে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিতে আসা সম্ভব হলে এখানে নির্বাচন করতে পারে পানি সম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ।

তবে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকা দীর্ঘ। এখানে রয়েছে দলটির প্রার্থিতার ছড়াছড়ি। ইতোমধ্যে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক অন্তত ৮ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী নেতার পক্ষে লাঠিয়ালরা স্থানীয় কিছু নিরীহ ব্যক্তির জমি জবরদখল করায় এটি প্রভাব পড়েছে আওয়ামী লীগের রিজার্ভ ভোটে। মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, রেজাউল করিম, এ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, খালেদ মাহমুদ মিথুন, কমর উদ্দিন আহামদ, ড. আশরাফুল ইসলাম সজিব ও রাশেদুল ইসলাম।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) ॥ এ আসনে কয়লা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উন্নয়নের কারণে এ আসনটি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ইতিহাসে বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন এই মহেশখালীতে। প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত প্রকল্প নির্বিঘেœ বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে এবারে দলীয় হাইকমান্ড যাচাই করে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারে বলে দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে। তবে এই আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ভোটারদের কাছে ও গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন। ব্যাপক উন্নয়নের ফলে কৃতজ্ঞ ভোটাররা এ আসনটি ফের আওয়ামী লীগকে উপহার দিতে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা গেছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক দিনরাত জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকায় ভোট চাইছেন। ভোটাররা বলেন, ইতোপূর্বে মহেশখালী -কুতুবদিয়ার মানুষকে সন্ধ্যা হওয়ার আগেই নিজ নিজ এলাকায় পৌঁছতে হতো। নতুবা চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে হোটেল ভাড়া নিয়ে রাত কাটাত হতো পরের দিন লঞ্চের আশায়। আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের অবদানে বর্তমানে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নতি হওয়ায় স্থানীয়দের সেই ভোগান্তি আর নেই। সন্ধ্যার পরও মহেশখালী কুতুবদিয়ার মানুষ নিরাপদে ঘরে পৌঁছতে সক্ষম হচ্ছে।

এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উলাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, ড. আনসারুল করিম ও সাবেক ছাত্রনেতা মো: ওসমান গণি। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মোঃ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ ও এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী। এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় নেতা মুহিব উল্লাহর মনোনয়ন নিশ্চিত বলে দাবি করছেন দলটির স্থানীয় নেতারা।

কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর ও রামু) ॥ এ আসনেও ক্ষমতাসীন দলে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাইমুম সরওয়ার কমল। তিনি ছাড়াও কানিজ ফাতেমা মোস্তাক ও রাশেদুল ইসলামও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বহু আগে থেকেই নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। একেবারে বিনম্র ব্যক্তি হিসেবে ভোটারদের মন জয় করে চলেছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য কমল। এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজলকে ঘোষণা করা হয়েছে। নীরবে নির্বাচনী কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন আলোচনাও নেই। তবে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত হিসেবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আসনটি ফের আওয়ামী লীগকে উপহার দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন নীরিহ ভোটাররা।

পর্যটননগরী কক্সবাজারকে আরও সুন্দর এবং পর্যটন শিল্পের আরও উন্নয়ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহু প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। একাধিক প্রকল্পের কাজ এগিয়েও চলেছে। বিএনপি আমলে যেসব কাজে তারা হাত দেয়নি, যেসব জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া লগেনি- বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ওসব স্থান ও জায়গায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। বর্তমানে বিদেশী পর্যটকরা কক্সবাজারে ভ্রমণে এসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বর্তমান সরকারের সদিচ্ছায় নির্মিত কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক পর্যটকদের হাতছানি দিচ্ছে।

এক শ’ বিশ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা এ সড়ক বাতাসের তালে পর্যটকরা মনের আনন্দে যেন প্রতিদিন ভেসে বেড়াচ্ছেন। প্রকৃতির দান বিস্তীর্ণ সাগরসৈকত আর বঙ্গোপসাগরের সীমাহীন জলরাশির পাশাপাশি আকাশছোঁয়া পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখতে দেখতে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা কক্সবাজার থেকে সোজা টেকনাফে পৌঁছে যাচ্ছেন। সরকারের ব্যাপক উন্নয়নে মনোমুগ্ধকর এত সুন্দর পরিবেশ দেখতে দেখতে সমুদ্র পাশ দিয়ে ঝাউবাগানের শোঁ শোঁ শব্দে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত টেকনাফে ছুটে চলা পর্যটকদের এক অন্য রকম অনুভূতি। স্থানীয় ভোটার ও সাধারণ মানুষের মতে, বর্তমান সরকার গত দুই মেয়াদে কক্সবাজারের এই এলাকার চেহারাই পাল্টে দিয়েছে। তাই ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে তারা আওয়ামী লীগকেই সর্বাগ্রে রাখছেন।

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) ॥ গণতান্ত্রিক সরকারের ২৮ বছরে এ আসনে যে দলের প্রার্থী এমপি নির্বাচিত হন, ওই দলই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়। বর্তমানেও অবস্থা দৃষ্টে ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ দলীয় হাইকমান্ড প্রার্থীর জনপ্রিয়তা যাচাই করে মনোনয়ন দিলে উখিয়া- টেকনাফ আসনটি ফের আওয়ামী লীগের ঘরে যাবে, পুনর্বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, একাধারে দু’বার নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি গত ১০ বছর ধরে রয়েছেন মাঠে-ময়দানে। গরিব ও এতিম শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার দায়িত্ব, অসহায় পরিবারে রোগীর চিকিৎসার ব্যয়ভার এবং বরাদ্দের কথা না ভেবে গ্রামে নিজস্ব অর্থে সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করে চলেছেন। বিরোধী পক্ষ তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ আনলেও তিনি ওসবে কান না দিয়ে অব্যাহত রেখেছেন স্থানীয় জনগণের সেবা প্রদান ও এলাকার উন্নয়নে। এছাড়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে প্রশংসিত হয়েছেন সংসদ সদস্য বদি।

রোহিঙ্গা আগমণে এ আসনটি বিশ্বের কাছে এখন আলোচিত নাম। এ আসনে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির জনপ্রিয়তাও শীর্ষে। সাধারণ ভোটাররা বলেন, যে যাই বলুক; আসনটি আওয়ামী লীগের জন্য নিশ্চিত আসন, বলতে গেলে বদিকেই মনোনয়ন দিতে হবে। কারণ, প্রতিটি গ্রামে বদির বিকল্প নেই বললে চলে। তাছাড়া বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে আবদুর রহমান বদি।

স্থানীয়রা বলেন, ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিএনপি দুবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন থাকলেও উখিয়া-টেকনাফ মহাসড়কের একটি ব্রিজের সংস্কারে হাত দেয়নি। অথচ টেকনাফে রয়েছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্যের স্থলবন্দর। যেখান থেকে প্রতিদিন সারিবদ্ধভাবে আমদানি পণ্যবাহী গাড়ির বহর পড়ে। সরকার প্রতিমাসে আয় করে থাকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। বাণিজ্যের পণ্যবাহী গাড়ি অতিক্রম করার সময় মরিচ্যা ললব্রিজ ধসে পড়ে চালকসহ দুজনের প্রাণহানিসহ বিভিন্ন ব্রিজে বহু দুর্ঘটনাও ঘটেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির সহযোগিতায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে নড়বড়ে ২৪টি ব্রিজ স¤পূর্ণ নতুন করে নির্মাণ করে দিয়েছে। এতে স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ী মহল অত্যন্ত খুশি আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর। উখিয়া-টেনাফের জনগণ এবারও আওয়ামী লীগকে ভোট প্রদানের অঙ্গীকার করে নৌকা প্রতীকটি আবদুর রহমান বদিকে (মনোনয়ন) দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সমর্থক স্থানীয় একাধিক মুরব্বির মতে, ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালেও মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা এসেছিল এখানে। তখন বিএনপি সরকারের এমপি থেকে শুরু করে নেতাকর্মীরা লুটেপুটে খেয়েছে বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী। তারা লুটপাট করেছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে। বর্তমানে তার চেয়ে চারগুণ বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে এসেছে একই জায়গায়। কিন্তু সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ওসব লুটপাটের কোন অভিযোগ উঠেনি। বরং তারা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশ মতে সাধ্যমত রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবা দিয়ে চলেছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থীর তালিকায় আছেন সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ ও সাধনা দাশগুপ্ত। অপরদিকে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহাজাহান চৌধুরী।

 

পাঠকের মতামত: