ফারুক আহমদ, উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা ॥
কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড়ী এলাকায় উন্নত বিশ্বের আদলে অত্যাধুনিক মানের সু-বিশাল ওপেন কারাগার ও পুনঃবাসন কেন্দ্র নির্মাণ করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণলায়। কারাগার নির্মাণের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর প্রক্রিয়া ইতি মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে গত সোমবার সকাল ১১টায় উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর বড়বিল এলাকায় প্রস্তাবিত জায়গায় আনুষ্ঠানিক ভাবে সাইনবোর্ড উত্তোলন অনুষ্ঠান উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেল সুপার বজলুর রশিদ। এসময় উখিয়া ভূমি অফিসের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সরকারী প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জেল সুপার বজলুর রশিদ জানান উত্তর বড়বিল গ্রামে পরিত্যক্ত ৩শত ২৫.৫০ একর সরকারী খাস জমিতে ওপেন কারাগার ও পুনঃবাসন কেন্দ্র নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এটি হবে বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ কারাগার। উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিক কাজ শুরু করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে স্থান নির্বাচন, সম্ভাব্যতা যাচাই, প্রাক্কলন তৈরী ও ভূমি অধিগ্রহণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। জেল সুপার আরও জানান ওপেন কারাগার ও পুনঃবাসন কেন্দ্র নির্মানে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪শ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইতি মধ্যে সরকার ৩শত ২৫.৫০ একর ভূমি বুঝে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কারা অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছেন। খুব শীঘ্রই এ প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর উদ্ভোধন করা হবে। ভূমি অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হলদিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম, বেসরকারী কারা পরিদর্শক আবুল মনসুর চৌধুরী, উখিয়া ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, উপজেলা কাননগো ও স্থানীয় মেম্বার ও সৌদিআরব বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা কারা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পাবলিক বা ওপেন কারাগার ও পুনঃবাসন কেন্দ্রে প্রচলিত জেলখানার মত আসামিদের নির্দিষ্ট স্থানে ও লকআপে বন্দি রাখা হবে না। আসামিরা মুক্ত বিহঙ্গের মত ঘুরে বেড়াতে পারবেন। বিভিন্ন ধরণের কুটির ও হস্তশিল্পের কাজ করতে পারবে কয়েদিরা। শুধু তাই নয় কৃষি জমিতে চাষাবাদ করে পারিশ্রমিক ও আয় করতে পারবে। এমন কি পরিবার পরিজনের সাথে মোবাইলে কথাবলা, দেখা সাক্ষাৎ করার সুযোগ থাকবে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন উত্তর বড়বিল এলাকায় ওপেন কারাগার ও পুনঃবাসন কেন্দ্র নির্মানে বর্তমান সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা ইতিবাচক। এর ফলে অবহেলিত এলাকার অভুত পূর্ব উন্নয়ন ও স্থানীয় অধিবাসীদের জীবণযাত্রার মান পরিবর্তন হবে। উত্তর বড় বিল গ্রামের বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিক্ষা অনুরাগী আজিজুল হক চৌধুরী জানান এই এলাকাটি স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। নেই কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা, নেই বিদ্যুৎ, এমনকি জীবণ-জীবিকার কর্মসংস্থান। এ ধরনের সু-বিশাল কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় এলাকাবাসীদের মাঝে আনন্দ ও উচ্ছাস দেখা দিয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে অবহেলিত এলাকাটি আলোকিত হয়ে উঠবে।
পাঠকের মতামত: