উখিয়ায় সরকারী সংরক্ষিত পাহাড় কাটা কোন ভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না। সংঘবদ্ধ মাটি কেখোরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ফ্রি স্টাইলে পাহাড় কেঁটে মাটিভর্তি করে ট্রাক যোগে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। ভূমিদস্যুচক্রের সদস্যরা একের পর এক পাহাড় কর্তন ও পরিবেশ ধ্বংস করলেও উপজেলা প্রশাসন এবং বনবিভাগ সম্পূর্ণ নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ সচেতন মহলের। ফলে এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশা-পাশি পাহাড় সংরক্ষণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, অতি সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটার ধুম পড়েছে। শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠন করে অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির ব্যবসায় নেমেছে তারা। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক যোগে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। কতিপয় বনবিভাগকে মোটা অংকের টাকার বিনিময় ম্যানেজ করে, ইনানী রেঞ্জের জালিয়াপালং বনবিটের আওতায় জুম্মাপাড়া, দক্ষিণ পাইন্যাশিয়া, বাংলা জার্মান সম্প্রতি অফিস সংলগ্ন, তুতুরবিল এলাকায় একের পর এক পাহাড় কর্তন চলছেই। স্কেবেটার এনে পাহাড় কেটে বিরাণ ভূমিতে পরিণত করলেও বনবিভাগের কোন মাথা বেথা নাই। এছাড়াও ক্লাশ পাড়া, হলদিয়াপালং, নলবনিয়া, উখিয়া সদর, ওয়ালাপালং, নিদানিয়া, ইনানী, থাইংখালী, পালংখালীসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কর্তনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, প্রতি মাটিভর্তি ট্রাকের নিকট হইতে ২শ থেকে ৩শ টাকা পর্যন্ত বনবিভাগ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদেরকে দিতে হয়। এছাড়াও স্থানীয় মস্তান এবং পাতি নেতারা পায় ১শ টাকা। ফলে বিনা বাঁধায় যত্রতত্র ভাবে পাহাড় কর্তন ও মাটি সরবরাহ করছে সিন্ডিকেট সদস্যরা। বর্তমানে বলতে গেলে সর্বত্র পাহাড় কাঁটার মহোৎসব চলছে। জালিয়াপালং বিট কার্যালয়ে নতুন বিট কর্মকর্তা যোগদান করার পর থেকে পাহাড় কাঁটা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বলে এমন অভিযোগ স্থানীয় নাগরিক সমাজের।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সর্দার শরিফুল ইসলাম জানান, পাহাড় কর্তন ও মাটি সরবরাহের অভিযোগ সহ প্রমাণ পাওয়া গেলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, পাহাড় কাটা ও পরিবেশ ধ্বংসকারীর বিরুদ্ধে বন বিভাগ সবসময় কড়া নজরদারী সহ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ ধরনের কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে পরিবেশ আইনে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সচেতন এলাকাবাসীর মতে পরিবেশ রক্ষা ও দুষনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অবিলম্বে পাহাড় কাটা বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিকট দাবী জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: