নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ৪ জুন ঈদগাঁওর ছয় ইউনিয়নে বহু কাঙ্খিত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ ভোট উৎসবকে ঘিরে বৃহত্তর এলাকার পাড়া-মহল্লার ভোটার সমাজের মাঝে অন্যরকম উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা দিলেও কিছু কিছু কেন্দ্রে চাপা আতঙ্ক ও বিরাজ করছে। জানা যায়, পক্ষকাল ধরে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট ভিক্ষায় ব্যস্ত ছিল। পাশাপাশি নির্বাচনের শেষ সময়ে প্রতিটি ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লায় নির্বাচনী আমেজে ভরপুর ছিল। যে যার যার অবস্থান থেকে ভোটারদের সাথে মত বিনিময়, গণ সংযোগসহ কৌশলাদি চালিয়েছিল। পর্যটন শহর কক্সবাজার সদরের প্রবেশদ্বার খ্যাত বৃহত্তর ঈদগাঁওতে এবার আওয়ামীলীগ-বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র কিংবা বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই তুঙ্গে। এদিকে বৃহত্তর ঈদগাঁওর ছয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থীরা তাদের কাঙ্খিত ভোট আদায়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে কোমর বেঁধে। অন্যদিকে বৃহত্তর ঈদগাঁওতে চেয়ারম্যান পদে ৫১ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৮০ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তন্মধ্যে দুয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেও বাকী প্রার্থীরা মাঠ-ঘাট চষে বেড়িয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে। তন্মধ্যে- ঈদগাঁওতে ৭ জন, জালালাবাদে ৫ জন, ইসলামাবাদে ৪ জন, পোকখালীতে ৭ জন, ইসলামপুরে ৪ জন ও চৌফলদন্ডীতে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমানে মাঠে রয়েছেন। আবার ঈদগাঁও ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছৈয়দ আলম (মোটর সাইকেল), আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী সোহেল জাহান চৌধুরী, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন তাহের হিমু (চশমা), নুরুল হক নুর (ঘোড়া), নুরুল ইসলাম বাঙ্গালী (টেলিফোন), জাসদ মনোনীত নুরুচ্ছফা (মশাল)। জালালাবাদ আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক যুবদল নেতা আলমগীর তাজ জনি, স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যবসায়ী জসিম উল্লাহ মিয়াজী (আনারস), সেলিম উল্লাহ জিহাদী (মোটর সাইকেল), জাসদ মনোনীত রাশেদুল করিম (মশাল)। ইসলামাবাদ ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী নুরুল হক, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোজাম্মেল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী নুর ছিদ্দিক (মোটর সাইকেল), তৈয়ব (ঘোড়া)। পোকখালী ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিদুল্লাহ, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সেলিম উল্লাহ, স্বতন্ত্র প্রার্থী কারাবন্দী রফিকুল ইসলাম (ঢোল), এম. আবদুল্লাহ খান(আনারস), শামসুল আলম মেম্বার (টেবিল ফ্যান), মৌলভী ফরিদুল আলম (অটোরিক্সা)। ইসলামপুর ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মনজুর আলম, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী দেলোয়ার হোছাইন (মোটর সাইকেল), মাষ্টার আবদুল কাদের (আনারস)। চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী ওয়াজ করিম বাবুল কোম্পানী, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান নুরুচ্ছবিহ (ঘোড়া) ও নুরুল ইসলাম (আনারস)। তবে পোকখালীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে কারাগার থেকে এবার নির্বাচন করছেন ঢোল প্রতীক নিয়ে রফিকুল ইসলাম। পাশাপাশি তার পক্ষে স্ত্রী, ছেলেমেয়েসহ এলাকাবাসী নির্বাচনী মাঠে ছিল। তবে বৃহত্তর এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের কৌতুহলী ভোটারদের মতে, দলীয় প্রার্থীদের ডিঙ্গিয়ে হয়ত শেষ মুহুর্তে চমক দিকে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আবার একাধিক ভোটার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের জোর দাবী জানান। অপরদিকে বিভিন্ন ইউনিয়নের সচেতন লোকজনের সাথে কথা হলে তারা স্ব স্ব ইউনিয়নের কিছু কিছু কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানান। তন্মধ্যে ইসলামপুরে নাপিতখালী হাইস্কুল, ডুলাফকির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম খাঁন ঘোনা কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী। ইসলামাবাদে গজালিয়া, বোয়ালখালী, পাঁহাশিয়াখালী, ইয়াকুব আলী প্রাইমারী, ওয়াহেদর পাড়া প্রাইমারী স্কুল কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান চেয়ারম্যান প্রার্থী নুর ছিদ্দিক। আবার পোকখালী ইউনিয়নে আবুতাহের হেলালী জানান, পূর্ব, পশ্চিম গোমাতলী, গাইট্যা খালী, পোকখালী হাইস্কুল কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে ঈদগাঁও ইউনিয়নে আলমাছিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র, ভাদিতলা কেন্দ্র, কালিরছড়া কেন্দ্র ও ভোমরিয়াঘোনা কেন্দ্র সমূহ চরম ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন অনেকে। তারা এসব কেন্দ্রে পুলিশী টহল জোরদার করার দাবী জানান।
######################
বৃহত্তর ঈদগাঁওর ইউপি নির্বাচন ৫২ প্রার্থীর চেয়ার দখলের লড়াই
॥এম আবু হেনা সাগর ,ঈদগাঁও॥
৪ জুন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কক্সবাজার সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৬টি ইউনিয়নের ৫২ প্রার্থী চেয়ার দখলের লড়াইয়ে অবতীর্ণ। সন্ধ্যার পর একে একে জানা যাবে চেয়ার দখলে নিয়ে কোন ৬ জন আগামী পাঁচ বছরের জনগনের সেবক হতে যাচ্ছেন। এ নিয়ে সচেতন ভোটারদের মাঝে ব্যাপক কৌতুহল দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এবার সদর উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁওর ছয় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫২ জন প্রার্থী ছাড়াও সাধারন সদস্য পদে ২৮০ জন ও নারী সংরক্ষিত আসনে ৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতায় নেমেছেন। ভোটারদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তারা দল এবং দলের বাইরে ব্যক্তি ইমেজকেই প্রাধান্য দেবেন। আজ ৪ জুন সন্ধ্যার দিকে ছয় ইউনিয়নের নির্বাচনে কার গলায় উঠে জয়ের মালা সেটি এখন দেখার পালা।
পাঠকের মতামত: