ঢাকা,শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঈদগাঁওতে বেপরোয়া জুয়াড়ীচক্র; বলীখেলার নামে ননষ্টপ জুয়া !

Juya-570x330-152x102আতিকুর রহমান মানিক, কক্সবাজার ::

কক্সবাজার সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওতে বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার নামে রকমারী জুয়ার জমজমাট আসর বসিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ জুয়াড়ীচক্র। প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকায় ধারাবাহিক জুয়ার আসর বসিয়ে এরা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব জুয়ার মেলায় মাদকদ্রব্যের অবাধ বিকিকিনির পাশাপাশি পতিতা ও  অপরাধীদের মিলনমেলা ঘটছে। স্হানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রকে ম্যানেজ করে বিগত একমাস যাবৎ এভাবে জুয়া-মাদক ও পতিতার অাসর বসানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্হানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় একমাস আগে থেকেই বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার নামে জুয়াখেলা বসানো হচ্ছে বিভিন্ন স্হানে। পোকখালী, চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী, ইসলামপুর, জালালাবাদ, ভারুয়াখালী ও ইসলামাবাদসহ বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিভিন্ন ইউনিয়নে বলীখেলার নামে গত একমাসে শতাধিক জুয়ার আসর সফলভাবে সম্পন্ন করেছে এ জুয়াড়ীচক্র। ক্ষেত্রবিশেষে একই দিনে একাধিকস্হানে আয়োজিত এসব জুয়ার আসর পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকায় অপর জুয়াড়ীদের কাছে ইজারা দিয়েছে তারা। সে হিসাবে শতাধিক জুয়ার আসর থেকে বিগত একমাসে কম করে হলেও ৪/৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চিহ্নিত জুয়াড়ী সিন্ডিকেট। অনুসন্ধানে প্রকাশ, একমাস আগে থেকে বিভিন্ন এলাকায় বলীখেলার নামে চলে আসছে রকমারী জুয়ার আসর। এর ধারাবাহিকতায় ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম টেকপাড়ায় গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বলীখেলার নামে জুয়ার মেলায় জুয়ার আসর ইজারা হয় সাত লাখ টাকায়। ২৩ এপ্রিল (শনিবার) থেকে আবার পোকখালী ইউনিয়নের নতুন বাজার ও চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের নতুন মহালে শুরু হয়েছে তিনদিনের জুয়ার আসর। এখানে ছয়গুটি, তিনগুটি, বাঘ-গরু, হারুখেলা, তিনতাস, কেরকেরি ও কার্ডচয়েসসহ রকমারি নামের জুয়াখেলা বসিয়ে প্রতিদিন হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। জুয়ার টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে এলাকার বিপথগামী যুবকরা চুরি-ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে। ফলে এলাকার আইনশৃংখলা পরিস্হিতির অবনতিসহ সামাজিক মূল্যবোধ নষ্ট হচ্ছে। এসব বলীখেলার আসর একটানা তিন চারদিন ধরে চলমান থাকায় জুয়াড়ীরা সদলবলে আবাসিকভাবে অবস্হান করে। এসময় তাদের মনোরঞ্জনের জন্য পতিতাও সররবরাহ করছে আয়েজকরা।  নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়,  তথাকথিত বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার নামে এসব জুয়ার আসর বসানোর আগে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দালাল হিসাবে পরিচিত পোকখালীর ফিরোজের সাথে মোটা অংকের চুক্তি করতে হয়। প্রশাসন, সাংবাদিক, প্রেসক্লাব ও নেতা ম্যানেজ করার জন্য প্রতিটি জুয়ার আসরেরর জন্য অন্ততঃ দুইলাখ টাকা করে অগ্রীম নেয় দালাল ফিরোজ। তার গ্রীণ সিগন্যাল পেলেই শুরু হয় জুয়াখেলার মহা কারবার। পুলিশ তদন্তকেন্দ্র এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, জুয়াখেলার নিউজ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ না হওয়ার ব্যপারে সাংবাদিক ম্যানেজের দায়িত্ব পালন করেন দালাল ফিরোজের দুঃসম্পর্কীয় ভাগ্নিজামাই এক “সাংবাদিক”। ঈদগাঁওতে কর্মরত এক সাংবাদকর্মী জানান, এ ব্যাপারে পত্রিকায় কোন নিউজ করতে চাইলে ফিরোজের দুঃসম্পর্কীয় ভাগ্নিজামাই উক্ত “সাংবাদিক” নসীহত করেন। তাই বিগত একমাস ধরে বলীখেলার নামে ধারাবাহিক জুয়ার আসর চলে আসলেও স্হানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্হা নেয়নি অথবা কোন পত্রিকায় নিউজ আসেনি। দালাল ফিরোজ ফোন (০১৮১৪-৪১৭৮৫০) রিসিভ না করায় উপরোক্ত ব্যাপারে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার বক্তব্য পাওয়া গেলে পরবর্তীতে গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করা হবে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহীনুল ইসলাম বলেন, এসব জুয়ার আসর বন্ধে ব্যাবস্হা নেয়ার জন্য ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, বন্ধ না হলে পরবর্তীতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন বলেন, এ ব্যপারে ব্যবস্হা নিতে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: