এম.মনছুর আলম, চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জাইকার সহায়তায় ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকসেবনসহ সব ধরণের খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখা এবং ভালোভাবে লেখাপড়ায় উৎসাহ প্রদানে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধিমুলক ছয়দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসুচি অনুষ্টিত হয়েছে। সচেতনতা বৃদ্ধির এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর চতুর্থদিন (২আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ হলরুম মোহনা মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমানের সভাপতিত্বে ও জাইকার উপজেলা ডেভেলপমেন্ট ফ্যাসিলিটেষ্ট পাপিয়া চাকমার সঞ্চলনায় অনুষ্টিত হয়। উক্ত প্রশিক্ষন কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম এম এ।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ারুল কাদের, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নুরুল আখের, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ পরিচালনা কমিটির সদস্য শওকত হোসেন প্রমুখ।প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ পরিচালনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও সাহারবিল বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও অভিভাবক- অভিভাবিকা এবং বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম বলেন, সামাজিক, পরিবেশ ও বাস্তবসম্মত নৈতিক আদর্শগত শিক্ষা মাধ্যমে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের মতো অপরাধ কর্মকান্ড থেকে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদেরকে বাঁচাতে ধর্মীয় ও পারিবারিক শিক্ষায় তাদেরকে তৈরী করতে হবে।প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।এ ক্ষেত্রে শিক্ষক ও অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে।অভিভাবকের সচেতনতা অভাবে যেন কোন শিক্ষার্থী অপরাধ কর্মকান্ড না জড়ায় সে ব্যাপারে কঠোর থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে মাদকের আগ্রাসন ভয়াবহ আকারে রূপ ধারণ করেছে। এ মাদকের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে প্রত্যেক সমাজে ও শিক্ষা প্রতিষ্টানে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।মাদকের হাত থেকে প্রতিটি ছাত্র থেকে উঠতি যুবকদের রক্ষা করতে হলে শিক্ষক অভিভাবকদের আরো সচেতনতা বৃদ্ধি করা আবশ্যক। বর্তমান সরকার দেশের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও তরুনদের মাদকমুক্ত করার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রশিক্ষণ কর্মশলার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান উপস্থিত শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদ্যেশ্য বলেন, প্রত্যেক ছাত্রকে পাঠ্য বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় উন্নতি ও ভালো ভাবে পড়া লেখার উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে। দেশ পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে পরিবর্তন হয়েছে সমাজ ব্যবস্থা।তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর দেশ আজ গ্রাম ছাড়িয়ে বিশ্বের বুকে। সমাজ ও সঠিক রাষ্ট্র পরিচালনার আলোকে সভ্যতার নিরীখে দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ অবকাঠামোসহ প্রতিটি স্তর। আধুনিক হওয়ার চেয়ে দক্ষ হওয়া অনেক শ্রেয়। ছাত্রদের মেধাকে লালন করার জন্য কোন ধরণের নোট কিংবা গাইড নজর না দিয়ে মূল বইয়ের প্রতি দৃষ্টি রাখাতে হবে।প্রতিটি ছাত্রদের ভেতর যে প্রতিভা ও মেধা লুকিয়ে আছে তা প্রশাসনের পক্ষথেকে অলিম্পিয়র্ড প্রতিযোগিতা মাধ্যমে মেধাবীকে খোঁজে বের করা হবে। এ ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত যে সব ছাত্রদের হাতে স্মার্ট ফোন ব্যবহার রয়েছে তা থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা নিতে তিনি নির্দেশনা দেন।সেই জন্যও সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে ভুমিকা পালন করতে হবে। এই ক্ষেত্রে মা-বাবা বেশি সজাগ হলে তাঁর সন্তান কোনদিন বিপদগামী হবেনা বলে পরামর্শ দেন তিনি।তিনি আরো বলেন, প্রশিক্ষণ কর্মশলার মতামত গুলো উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্টানে লিফলেট আকারে প্রকাশ করা হবে। এবং প্রতিটি ছাত্রদের হাতে ফ্রি হিসেবে টিফিন বক্স ও ব্যাগ দেয়া হবে বলে তিনি জানান।##
পাঠকের মতামত: