নাজিম উদ্দিন, পেকুয়া :::
পেকুয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় যুবলীগ মগনামা ইউনিয়ন শাখার ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি নুরুচ্ছফা সওদাগর (৩৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। বিএনপি নেতা মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফুতুল্লাহ ওয়াসিমের লেলিয়ে দেওয়া স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মগনামা ইউনিয়নের ফুলতলা এলাকায় ওই যুবলীগ সভাপতিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরন করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে, গতকাল ২৯ আগষ্ট সোমবার দুপুর ১টায় উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের আফজালিয়া পাড়া এলাকায়। তিনি ওই ইউনিয়নের মুহুরীপাড়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে ও মুহুরীপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী বলে জানাগেছে। ঘটনার জের ধরে মগনামায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে মগনামা ইউনিয়নের ফুলতলা ষ্টেশন ও আফজালিয়াপাড়া এলাকায় অন্তত ৫/৬জন ক্ষমতাসীনদল আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে পিঠিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়েছে। সৃষ্ট ঘটনার জের ধরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গত ২ দিন ধরে ফুলতলা স্টেশন হয়ে পেকুয়ায় যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে মুহুরীপাড়া ও মগঘোনা এলাকার লোকজনকে। মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শরাফুতুল্লাহ ওয়াসিমের নির্দেশে তার অনুগত ক্যাডার আফজালিয়া পাড়া এলাকার নুরুন্নবীর ছেলে জয়নাল আবেদিন, তার ভাই শাহাব উদ্দিন, বদিউর রহমানের ছেলে আবু ছৈয়দ, রোস্তম আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন, তার ছেলে সোনামিয়া, ইউসুফ, আশরাফ মিয়ার ছেলে ফারুকসহ ১৪/১৫জনের একটি স্বশস্ত্র সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনী ফুলতলা স্টেশন ও আফজালিয়াপাড়া এলাকায় ধরপাকড় অব্যহত রেখেছে। এরা ক্ষমতাসীনদলের লোকজনকে গাড়ি তল্লাশি করে ও নামিয়ে মারধর, কুপিয়ে জখম, হাতুড়িপেঠা ও লুটপাট অব্যহত রেখেছে। পেকুয়া থানা পুলিশ গত রবিবার ও সোমবার দু’দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে গত রবিবার সন্ধ্যায় ফুলতলা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ওই সন্ত্রাসীরা মুহুরীপাড়া এলাকার মৃত.নজির আহমদের ছেলে নুরুন্নবীকে হত্যা চেষ্টা চালায়। তাকে হত্যার জন্য টানাহেছড়া করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিঠিয়ে জখম করে ও নগদ লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে মিয়াজিপাড়া এলাকায় দূবৃর্ত্তের হামলায় ছাত্রদল ক্যাডার জয়নাল ও আলী আকবর আহত হন। ওই ঘটনার রেশ ধরে পরদিন রবিবার সকাল থেকে ফুলতলা স্টেশনে ধরপাকড় শুরু করে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী। তারা গত ২দিনে নুরুন্নবী, নুরুচ্ছফা, নুরুল আমিন, মহিবুল্লাহসহ আ.লীগ ও যুবলীগের ৭/৮জন কর্র্মীকে পিঠিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এদিকে মগনামার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
ইউনিয়ন স্বেচ্চাসেবকলীগসভাপতি সুলতানমুহাম্মদ রিপন জানান শরাফুতুলালাহ ওয়াসিম ধানের শীষ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামীলীগ নিধনের যুদ্ধে নেমেছেন। আফজালিয়াপাড়ার ১৪/১৫জন সন্ত্রাসীকে নিয়ে একটি পেশি শক্তির বলয় তৈরি করে। তারা আমাকে হত্যা চেষ্টা চালায়। আমি এখন পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
ইউনিয়ন আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকতার মেম্বার জানায় তারা ওয়াসিমের মাধ্যমে ফের বেপরোয়া হয়েছে। এখন মগনামায় আওয়ামীলীগ করা কঠিন হয়ে উঠেছে।
কাজীবাজারের ব্যবসায়ী মো:হোছন জানান, ফুলতলা স্টেশনে গাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। পরিচিতি আ.লীগ পেলে দেওয়া হচ্ছে মাইর। টাকাপয়সাও ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। চেয়ারম্যানের ওই বাহিনী মগনামার অতিতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে জুলুম নির্যাতনের রাজত্ব কায়েম করেছে।
মগনামা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সহ-সভাপতি মো.আলমগীর জানিয়েছেন, গত ২দিনে আমার ওয়ার্ডের ৬/৭জনকে সন্ত্রাসীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছে। ৭১ এর চেয়ে বর্তমানে ভয়ানক পরিস্থিতি হয়েছে মগনামায় আওয়ামীলীগের জন্য।
পেকুয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চেয়ারম্যান ওয়াসিমের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতাকর্মীদের একের পর এক হামলা করছে। যুবলীগ এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে ওই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে প্রশাসনকে আহব্বান করছি। অন্যথায় কর্মসুচী দিতে বাধ্য হবে যুবলীগ।
পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাশেম জানিয়েছেন, আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের উপর এভাবে সন্ত্রাসী হামলা মেনে নেওয়া যায়না। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারপুর্বক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুইয়া বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: