গত ১০জুন থেকে পুলিশ সারা দেশে বিশেষ অভিযান জোরদার করেছে। এই অভিযান আগামি ১৭জুন পর্যন্ত চলমান থাকবে বলে জানা গেছে। গত পাঁচদিন ধরে পেকুয়ায় পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে। এই পাঁচদিনে পুলিশ উল্ল্যেখযোগ্য সন্দেহভাজন লোক ও বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদেও মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে পেকুয়া থানার ওসি নিশ্চিত করেছেন।
ৎউল্ল্যেখ, দেশব্যাপি কিছু বিচ্ছিন্ন হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। অজ্ঞাত খুনিরা কিছু আলোচিত ব্যক্তিকে টার্গেট করে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারের শরীক দল থেকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। জঙ্গিগোষ্টি দ্বারা তাকে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হুমকির কথা গনমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রামে আলোচিত হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। দেশের চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুন করে সন্ত্রাসীরা। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনায় সরকারের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে টনক নড়ে। দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জঙ্গি ও আল কায়দা দমনে সারা দেশ ব্যাপি বিশেষ অভিযান জোরদার করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। বিশেষ অভিযান সারা দেশে ব্যাপকভাবে জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিন গ্রেফতার হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধিরা। চলমান পুলিশি বিশেষ অভিযান পেকুয়ায়ও জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয় সচেতন মহল জানান, পেকুয়া বিএনপি-জামাতের অধ্যুষিত এলাকা। চট্টগ্রাম মহানগর ও কক্সবাজার জেলায় শিবিরের নেতৃত্ব এ পেকুয়ার কয়েকজন ব্যক্তি দিয়ে আসছিল। উল্ল্যেখযোগ্য কিছু ব্যক্তির বাড়ি পেকুয়া রয়েছে, যারা ইতিমধ্যে জঙ্গি সম্পৃক্ততা ও অর্থ জোগান দাতায় তাদের নাম উঠে এসেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম কর্ণফুলির খোয়াজন নগরের একটি বাড়ি থেকে বিপুল অস্ত্র, গোলাবারুদ, বোমা তৈরির সরাঞ্জমাদিসহ তিনজনকে পুলিশ আটক করে। এরা জঙ্গি গোষ্টির অন্যতম সক্রিয় সদস্য। আটককৃতদের মধ্যে একজন মাদ্রাসা ছাত্রীও ছিল। যার বাড়ি পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে।
চট্টগ্রামের আলোচিত এইট মার্ডারের অন্যতম আসামি শিবিরের সাবেক দুধূর্ষ ক্যাডার মিজবাহ’র বাড়ি পেকুয়ার বারবাকিয়ায়। কক্সবাজার জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক দু’সভাপতি শহিদুল মোস্তফা চৌধুরী ও দিদারুল ইসলামের বাড়িও পেকুয়ায়। পেকুয়া জামাতের শক্ত ঘাটি রয়েছে। বিগত তিন বছর আগে যুদ্ধপরাধীর দায়ে জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদির মৃত্যুদন্ডাদেশ রায় দেন আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন পেকুয়ায় ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতা হয়। হাজার হাজার শিবিরের নেতাকর্মীরা স্বসস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় নেমে পড়ে। পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধও হয়। এ সময় এক মাদ্রাসা ছাত্র পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। কিন্তু বর্তমানে পেকুয়া থানা পুলিশের কড়া নজরদারির কারণে কোন ধরনের নাশকতা মূলক কর্মকান্ড ঘটছে না বলেও তাদের অভিমত।
পেকুয়ায় ভৌগলিক অবস্থান দিক দিয়ে একদিকে সাগর, মধ্যভাগে সমতল। পুর্ব ও উত্তরভাগ পাহাড়ি অঞ্চল। সাত ইউনিয়নের মধ্যে তিন ইউনিয়ন পাহাড় বেষ্টিত। পাহাড়ে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ততা বহু আগে থেকে পাওয়া যায়। তবে পুলিশের বিশেষ অভিযানকে তা একপ্রকার বন্ধ রয়েছে।
পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভূইয়া বলেন, বিশেষ অভিযানে এই পর্যন্ত(১৪জুন) নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার দায়ে দু’জনসহ বিভিন্ন মামলার মোট ১৭জন পলাতক আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে। যেসব ব্যক্তি পূর্বে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিল বা জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িত ছিল তাদের খোজে বের করতে গোয়েন্দা তদারকি বাড়ানো হয়েছে। সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত এবং যেসব ব্যক্তি জান-মালের জন্য হুমকি তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। আমি পেকুয়া থানায় যোগদানের পর থেকে এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। চলমান এ বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: