ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় নেই পুলিশের বিশেষ অভিযান

policeপেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় নেই পুলিশের বিশেষ অভিযান। গত ১০জুন থেকে পুলিশ সারা দেশে বিশেষ অভিযান জোরদার করেছে। এ অভিযান আগামি ১৭জুন পর্যন্ত চলমান থাকবে বলে পুলিশসুত্র জানায়। গত চারদিন ধরে পেকুয়ায় পুলিশের বিশেষ অভিযান চোখে পড়েনি কারো। এ চার দিনে পুলিশ উল্লেখযোগ্য কোন সন্দেহভাজন লোককে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করতে সক্ষম হননি। তবে পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া জানিয়েছেন গত তিন দিনে পুলিশ ৫জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা নিয়মিত মামলার আসামি বলে ওসি নিশ্চিত করেছেন।

দেশব্যাপি কিছু বিচ্ছিন্ন হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। অজ্ঞাত খুনিরা কিছু আলোচিত ব্যক্তিবর্গকে টার্গেট করে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারের শরীক দল থেকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে প্রাননাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। জঙ্গিগোষ্টির অন্তরালে তাকে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হুমকির কথা গনমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। চট্টগ্রামে আলোচিত হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।

দেশের চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুন করে সন্ত্রাসীরা। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনায় সরকারের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে টনক নড়ে। তারা দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জঙ্গি ও আল কায়দা দমনে সারা দেশ ব্যাপি বিশেষ অভিযান জোরদার করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। বিশেষ অভিযান সারা দেশে ব্যাপকভাবে জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিন গ্রেফতার হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধিরা। চলমান পুলিশ বিশেষ অভিযান পেকুয়ায় চলছেনা। চারদিনে বিশেষ অভিযানে পুলিশ এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

পেকুয়া বিএনপি-জামাতের ঘাটি। চট্টগ্রাম মহানগর ও কক্সবাজার জেলায় শিবিরের নেতৃত্ব এ পেকুয়া থেকে দিয়ে আসছিল। উল্লেখযোগ্য কিছু ব্যক্তির বাড়ি পেকুয়ায়। যারা ইতিমধ্যে জঙ্গি সম্পৃক্ততা ও অর্থ জোগান দাতায় তাদের নাম উঠে এসেছে। গত আট মাস আগে চট্টগ্রাম মহানগরের একটি বাড়ি থেকে বিপুল অস্ত্র, গোলাবারুদ, বোমা তৈরির সরাঞ্জমাদিসহ তিনজনকে পুলিশ আটক করে। এরা জঙ্গি গোষ্টির অন্যতম সক্রিয় সদস্য। আটককৃতদের মধ্যে একজন মাদ্রাসা ছাত্রীও ছিল। এদের বাড়ি পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে।

চট্টগ্রাম আলোচিত এইট মার্ডারের অন্যতম আসামি শিবিরের সাবেক দুর্ধর্ষ ক্যাডার মিজবাহ’র বাড়ি পেকুয়ার বারবাকিয়ায়। কক্সবাজার জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক দু’সভাপতি শহিদুল মোস্তফা চৌধুরী ও দিদারুল ইসলামের বাড়িও পেকুয়ায়। পেকুয়া জামাতের ঘাটি। বিগত তিন বছর আগে যুদ্ধপরাধীর দায়ে জামাত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদির মৃত্যুদন্ডাদেশ রায় দেন আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন পেকুয়ায় ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতা হয়। হাজার হাজার শিবিরের নেতাকর্মীরা স্বসস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় নেমে পড়ে। পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধ হয়। এ সময় এক মাদ্রাসা ছাত্র পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।

১৯৯১সালের সংসদ নির্বাচনে পেকুয়া-চকরিয়া আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এনামুল হক মঞ্জু। এরপর থেকে পৃথক জাতীয় নির্বাচনে এ আসনটি বিএনপির দখলে রয়েছে। তবে গত সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি জাতীয়পার্টির দখলে যায়। উপজেলা নির্বাচনে দু’বারই বিএনপি জয়লাভ করে। ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) নুরুজ্জামান মঞ্জু জামাতের টিকেটে নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানও বিএনপির। বিএনপির সাবেক যুগ্ন মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদের পৈত্রিক নিবাস পেকুয়া। বিএনপি-জামাতের মুখ্যপাত্র ও কেন্দ্রিয় নির্দেশনা এ পেকুয়া থেকে হয়েছে। সালাহ উদ্দিন আহমদ ভারতে নির্বাসনে রয়েছেন। কিন্তু পেকুয়া সব কলখাটি নাড়ছেন তিনি।

পেকুয়ায় নানা অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত হয়ে থাকে। গত ১০মাস আগে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধা আ.ক.ম শাহাব উদ্দিন ফরায়েজী নৃশংসভাবে খুন হন। পেকুয়ায় ভৌগলিক অবস্থান দিক দিয়ে একদিকে সাগর, মধ্যভাগে সমতল। পুর্ব ও উত্তরভাগ বিস্তিৃত পাহাড়ি অঞ্চল। সাত ইউনিয়নের মধ্যে তিন ইউনিয়ন পাহাড় বেষ্টিত। পাহাড়ে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ততা বহু আগে থেকে পাওয়া যায়। তবে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা বিশেষ অভিযানকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছে।

গত ইউপি নির্বাচনে প্রশাসনের ভুমিকা ছিল ক্ষমতাসীন দলের অন্তরায়। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা অভিযোগ তুলে ছিল জামাত-বিএনপির প্রার্থীকে জেতাতে ওসি মোটা অংকের টাকা নেয়। ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে প্রশাসন। উপজেলা আ’লীগ সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেমসহ আ’লীগের কয়েকজন নেতাকে গুলি করে ও পিটিয়ে আহত করে পুলিশ ভোট কেন্দ্রে । nupp

পাঠকের মতামত: