নাজিম উদ্দিন, পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় অস্থিত্ব নেই কমিউনিটি পুলিশের। সামাজিক অপরাধ নির্মুলের জন্য আর্মসধারী পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশ কাজ করবে। স্ব-স্ব ইউনিয়নের চৌকস ব্যক্তিবর্গ প্রতিষ্টানের শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত হয় কমিউনিটি পুলিশ। কমিউনিটি পুলিশের দেশ ব্যাপি অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কিন্তু পেকুয়া উপজেলায় সোসাল পুলিশের অস্থিত্ব নেই বললেই চলে। কমিউনিটি পুলিশ পেকুয়ায় কাগজে কলমে আছে। বাস্তবে এর কোন অস্থিত্ব এখানে পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। এর কার্যক্রম পেকুয়ায় একদম নেই।
আ’লীগ সরকার বিগত ২০১০সালে দিকে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম দেশ ব্যাপি চালু করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সে সময় পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে এর কার্যক্রম সুদুর প্রসারী করতে কাজ শুরু করে। পুলিশিং কমিটি গঠিত হওয়ার সময় ব্যাপক সাড়া মেলে স্থানীয়দের মাঝে। সমাজ থেকে অপরাধ নির্মুলে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি সুসংহত রাখতে কমিউনিটি পুলিশের অগ্রযাত্রা। পেকুয়ায় এর ম্লান হয়েছে। গত কয়েক বছরের ব্যবধানে চরম অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা। প্রত্যেক ইউনিয়নে কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি গঠিত হয়েছিল। গত এক বছর আগে এর কিছু রিসাবলও হয়েছে। তবে এগুলো সব কাগজে কলমে।
সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ কমিউনিটি পুলিশের অগ্রবর্তী নিরপন করেন। এ খাতে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছেন। পুলিশিং কমিউনিটি ব্যবস্থায় কোন বেতন ভাতা কিংবা পারিশ্রমিক দেয়ার ব্যবস্থা নেই। নিজ নিজ এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমাজ থেকে ব্যাভিচার,খুন, ডাকাতি, চুরি, রাহাজানি, মাদক পাচার, ইভটিজিং, নারি নির্যাতনসহ নানা অপরাধ নির্মুলের সংকল্প নিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ কমিউনিটি পুলিশে যোগ দিয়েছেন। বেতন ভাতা না থাকলেও কমিউনিটি পুলিশিং গুরুত্ব জনগনকে অবহিত করতে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছেন।
জনগনকে সচেতন করতে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা নিয়ে উদ্ধুদ্বকরন সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষন খাতে এ অর্থ ব্যয় করা হয়। পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের প্রশিক্ষন ব্যবস্থাও এ খাতে চালু রয়েছে। উপজেলা পেকুয়ায় এসব কিছু নেই। কমিউনিটি পুলিশ কি এর ব্যাখা জানেনা অনেক জনপ্রতিনিধি। এমনকি কমিউনিটি পুলিশের সাথে যারা সম্পৃক্ত এরাও জানেননা কমিউনিটি পুলিশের কমিউনিটি পুলিশের সদস্য তারা। উপজেলার সাত ইউনিয়নের মধ্যে কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি, আহবায়ক, উপদেষ্টা ও সদস্য সচিব কয়েক জনের পরিচয় মিললেও অধিকাংশ পদ-পদবি অন্তরালে রয়েছে। এগুলোতে কে কোন পদে আসীন রয়েছেন জানেননা স্ব-স্ব ইউনিয়ন কউিনিটি পুলিশের প্রধানরা। কখন কমিটি গঠিত হয়েছে সেটিও জানা নেই তাদের।
কমিউনিটি পুলিশের কোন কোন ইউনিয়ন প্রধানরা জানিয়েছেন পুলিশিং তালিকায় আদৌ তাদের নাম আছে কিনা। পদাধিকার বলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন উপদেষ্টা হিসেবে অর্ন্তভুক্ত হন। কিন্তু পেকুয়ায় কমিউনিটি পুলিশের কোন তথ্যও তাদের কাছে নেই। এদের মধ্যে তিন জন চেয়ারম্যান কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা তাদের ইউনিয়নে নেই বলে জানান। বারবাকিয়া ইউনিয়নে কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি করা হয়েছে কাদিমাকাটা এলাকার মো.হোসেনকে। তিনি জামাতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। সদস্য সচিব কে সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি চেয়ারম্যান এএইচএম বদিউল আলম জিহাহী। তিনি জানান তার ইউনিয়নে কমিউনিটি পুলিশ কমিটি নিয়ে বিরোধ চলছে।
সদর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি এম.আযম খানকে প্রধান করা হয়েছে। সদস্য সচিব করা হয়েছে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক বেলাল উদ্দিনকে। আযম খান জানায় কখন কমিটি হয়েছে তার জানা নেই। একবার মাত্র মিটিং হয়েছে। এখানে কমিউনিটি পুলিশের কোন অস্থিত্ব নেই। মগনামা ইউনিয়নে একই অবস্থা। এখানে যারা অর্ন্তভুক্ত রয়েছেন কমিউনিটি পুলিশে তাদের কারো সাথে কারো দেখা মেলেনা। মিটিং হয়ছে কিনা জানেনা কেউ।
উজানটিয়া ইউনিয়নে আহবায়ক হিসেবে চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী থাকলেও অপরাপর পদে কারো নাম পাওয়া যায়নি। রাজাখালী ইউনিয়নে একদিনের জন্যও কমিউনিটি পুলিশের সভা সেমিনার হয়নি। টইটং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করা হয়েছে। বাকি সদস্যরা অত্যন্ত নিস্ক্রিয়। শিলখালী ইউনিয়নে আ’লীগ নেতা কাজিউল ইনসানকে প্রধান করা হয়েছে। ইউনিয়ন আ’লীগ সাধারন সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সদস্য সচিব। তবে এ ইউনিয়নে কোন দিন কমিউনিটি পুলিশের ভুমিকা দেখেনি জনগন।
এদিকে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা মন্থর হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছেনা জনগন। ওই খাতে রাষ্ট্র যে অর্থ ব্যয় করছে তাও জনগনের কল্যানে নিষ্ফলে পরিনত হয়েছে পেকুয়ায়। নেই কোন কার্যক্রম। সামাজিক অপরাধ নির্মুল হচ্ছেনা। কমিউনিটি পুলিশের অগ্রবর্তী সাধিত না হওয়ায় পেকুয়ায় অপরাধ লেগেই আছে।
পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া জানায় কমিউনিটি পুলিশের বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের কাজ কি। আপনারা যত পারেন লিখেন। লিখতে থাকেন। এতে আমার কিছুই যায় আসেনা। ওসি কমিউনিটি পুলিশের তথ্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে উপরোক্ত কথার তীর ছোঁড়েন সংবাদকর্মীদের। পরে মোবাইলটি একজন পাবলিককে ধরিয়ে দেন এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে।
পাঠকের মতামত: