ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন : প্রচারণার সময় বিএনপি প্রার্থীর স্ত্রীসহ মহিলাদলের দুই নেত্রীকে শারিরিক লাঞ্ছনার অভিযোগ আ.লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে

Chotan-Chakaria-Pic.-BNP-13.03.16-300x135স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে প্র্রচারণায় গিয়ে শারিরিকভাবে লাঞ্ছনা ও হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দারের স্ত্রী মহিলা দলের নেত্রী রিফাত সাবরিনা ও কর্মী বিউটি আক্তার। এ সময় তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলা হয় প্রচারণার সুবিধার্থে হাতে থাকা ধানের শীষের প্রতীকী প্রতীকও। এছাড়াও বিএনপি সমর্থিত নেতাকর্মীদের এলাকা ছেড়ে যেতেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি-ধামকি দেওয়া ছাড়াও তিনটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামীলীগের প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীর নেতৃত্বে এসব ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছে বলে গতকাল রবিবার বিকেলে বিএনপি প্রার্থীর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সগ-সভাপতি এনামুল হক, বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আলহাজ নুরুল ইসলাম হায়দার, পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম আবুল হাসেম, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম মোবারক আলী, পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আবচার, পৌরসভা বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক এ এম আলী আকবর, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আক্তার ফারুক খোকন, জেলা যুবদল নেতা জসীম উদ্দিন, পৌর যুবদলের আহবায়ক মাহমুদুল করিম, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুল আবচার রিয়াদ, পৌরসভা ছাত্রদলের আহবায়ক মোহাম্মদ আলী প্রমূখ।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া অভিযোগ করেন, বিএনপি প্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দারের স্ত্রী পৌরসভা মহিলাদলের সহ-সভানেত্রী রিফাত সাবরিনা ও তার কর্মী বিউটি আক্তারসহ মহিলা দলের কয়েকজন নেত্রীকে নিয়ে গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে করাইয়াঘোনায় ধানেরশীষ প্রতীকে ভোট চাইতে যান। এ সময় আওয়ামীলীগের প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী ও তার সঙ্গে থাকা কর্মীরা বিএনপি প্রার্থীর স্ত্রী ও কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এ সময় শারিরিকভাবেও লাঞ্ছিত করে হাতে থাকা ধানের শীষের প্রতীকী প্রতীক কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এমনকি আওয়ামীলীগ প্রার্থী খোদ নিজেই এই হামলায় নেতৃত্ব দেন এবং তার এলাকায় যাতে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কেউ ভোট চাইতে না যান সেজন্য হুমকি-ধামকিও দেওয়া হয়। এছাড়া শনিবার রাতে ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজেম উদ্দিন, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাবুল চৌধুরীর বাড়িতে গিয়ে আওয়ামীলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়ে বসতবাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় বাড়ির সদস্যদের শাসিয়ে দেওয়া হয় ‘এখন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত কেউ এলাকায় থাকবে না, যদি দেখা যায় তাহলে পরিণতি শুভ হবে না।’ পুলিশও বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থী বর্তমান মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরেই আমি নির্বাচনী প্রচারণায় নামি। এ সময় যাতে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া আচরণ বিধি লঙ্ঘন না হয় সেজন্য খুব সতর্ক রয়েছি। কিন্তু প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আওয়ামীলীগের আলমগীর চৌধুরী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে শত শত মানুষ ও গাড়ির বহর নিয়ে নির্বাচন প্রচারণা চালাচ্ছেন। এই অবস্থায় আমার শ্বশুড় বাড়ির এলাকায় গিয়ে আমার পক্ষে প্রচারণা চালাতে গেলে স্ত্রী রিফাত সাবরিনা ও মহিলা দলের আরেক কর্মীকে শারিরিকভাবে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছে। ভাঙচুর করা হচ্ছে দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে। এলাকা ছেড়ে যেতেও হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। তাই আমি এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তবে এসব অভিযোগ একেবারে সত্য নয় বলে দাবি করেছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি চাই সুষ্ঠু, সুন্দর এবং সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। কিন্তু বিএনপি প্রার্থী নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য আগেভাগেই অবান্তর এসব অভিযোগ করছেন। যা সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশের অন্তরায়। এর পরও বলবো কাদা ছোড়াছুড়ি না করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যাতে নির্বাচন সম্পন্ন করা যায় সেজন্য বিএনপি প্রার্থীরও আন্তরিক হওয়া উচিত।

পাঠকের মতামত: